পটুয়াখালীর দুমকিতে লুথারান হেলথ কেয়ার ক্লিনিকে চাকুরিচ্যুত এক সেবিকাকে পুর্নবহালের দাবিতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নেতৃত্বে হামলার অভিযোগ করেছেন ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে চাকুরী ফিরে পাবার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেন চাকুরিচ্যুত সেবিকা যুথিকা মন্ডল।
হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা রেভ ডেভিড ঘোষ অভিযোগ করেন, সেবিকা যুথিকা মন্ডলকে অসদাচারনসহ অফিসের নিয়ম ভঙ্গের কারণে মঙ্গলবার বরখাস্ত করা হয়। এর আগে ঐ সেবিকাকে তিন দফায় সতর্ক করা হয়েছে। পরে ওই সেবিকা বিষয়টি স্থানীয় ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের দ্বারস্থ হয়ে বিভিন্ন সময় চাপ দিয়ে আসছিলেন। গত দুই দিন আগে বিষয়টি দুমকি থানা কর্তৃপক্ষকে জানালে মঙ্গলবার থানার ওসি (তদন্ত) উভয় পক্ষকে নিয়ে বসেন। বুধবার দুপূর ১২টার দিকে হঠাৎ করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আনিসুজ্জামান সোহাগ, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম জীবন ও সাধারন সম্পাদক সবুজ সিকদারসহ ২০/২৫ জন ব্যক্তি এসে ঐ চাকুরিচ্যুত নার্সকে পূর্নবহালের দাবীতে নিয়োগপত্র তাদের মত জোড় করে লিখে দিতে বললে তিনি তাতে অসম্মতি জানালে তারা অফিসের আসবাবপত্র ভাঙচুর, সিসিটিভির ফুটেজ রেকর্ডার নিয়ে যায়। এ সময় তারা টিম লিডার সাগর রোজারীওসহ তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, সম্পূর্ন অনৈতিকভাবে অসমাজিক কাজে সম্মতি না হওয়ায় ঐ নার্সকে ১৯ সেপ্টম্বর সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। এনিয়ে একাধিক বার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে আমি হাসপাতাল কমিটির উপদেষ্টা হিসেবে একাধিক বার আলোচনায় বসি। এমনকি উপজেলা চেয়ারম্যানসহ উপজেলা প্রশাসন থেকে তাদেরকে অনুরোধ করা হয়। সর্বশেষ গতকাল ঐ নার্সকে তারা বরখাস্ত করে। বুধবার ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ বিষয়টি জানতে গেলে তাদের সাথে কিছুটা ভুল বোঝাবুঝি হয়। খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে যাই, তবে কোন ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেনি।
দুমকি থানার ওসি (তদন্ত) মো: জাহাঙ্গীর আলম বলেন, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে যাই। এখন পর্যন্ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের লিখিত কোন অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।
এদিকে বুধবার বিকাল সাড়ে ৫টায় দুমকি প্রেসক্লাবে চাকুরীচ্যুত সেবিকা যুথিকা মন্ডল সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে বলেন, লুথার্যান হেলথ কেয়ারের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ডেভিড ঘোষ প্রায়ই আমাকে অনৈতি কাজের প্রস্তাব দেয়। ওই কাজে আমি রাজি না হওয়ায় আমাকে ও আমার স্বামীকে চাকুরীচ্যুত হতে হয়। আমি এই করোনাকালীন সময় পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি। আমি ও আমার স্বামীর চাকুরী পূর্নবহাল চাই। হামলার বিষয়ে তিনি জানান, আমি শুনেছি তবে কারা হামলা করছে তা আমার জানা নেই।