২০১০ সালে হাওর বেষ্টিত অরূয়াইল-পাকশিমুল ও চুন্টা ইউনিয়নের দীর্ঘদিনের স্বপ্নের সরাইল-অরূয়াইল সড়কটি নির্মিত হয়েছে। সরাইল হাসপতালের মোড় থেকে সড়কটির দৈর্ঘ্য ১৪ কিলোমিটারেরও বেশী। নির্মাণের পর কয়েক দফা সংস্কার কাজও হয়েছে। কাজে অনিয়মের অভিযোগও ওঠেছে। জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় অনিয়মের প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়েছে। সর্বশেষ সড়কটির ১২ কিলোমিটার জায়গায় ৩ জন ঠিকাদার ১১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা খরচ করে সংস্কার কাজ করেছেন। একাজেও ছিল অনিয়মের অভিযোগ। বাকি রয়ে গেছে আরো ২.৪ কিলোমিটার। বর্ষার পানির তোড়ে সড়কের সেই অংশ এখন ভেঙ্গে হাওরে বিলীন হচ্ছে। যে কোন সময় সড়কটি হাওরে মিশে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বন্ধ হয়ে যাবে ভাটি এলাকার লক্ষাধিক লোকের সড়কে যাতায়ত। স্থানীয় এলজিইডি অফিস ও সরজমিনে জানা যায়, সরাইল সদরের হাসপাতাল মোড় থেকে অরূয়াইল পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার সড়কের অধিকাংশ অংশই হাওরে। ফলে বর্ষা মৌসমে সড়কের একপাশে পানির তোড়ের আঘাত লাগে। ২০১০ সালে সড়কটি নির্মাণের পর কয়েক দফা সংস্কার কাজ হয়েছে। কাজের বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্নীতির কারণে টেকসইয়ের বিষয়টি বারবারই ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। সর্বশেষ সড়কটি রক্ষার জন্য সাবেক এমপি জিয়াউল হক মৃধার মাধ্যমে ভূঁইশ্বর বাজার থেকে পাকশিমুল নতুন কালভার্ট পর্যন্ত ৮ কোটি টাকা বরাদ্ধ আসে। ঠিকাদার দীর্ঘ সূত্রিতার মাধ্যমে ২-৩ বছর লাগিয়ে সম্প্রতি কাজটি শেষ করেছেন। এরপর আবার হাসপাতালের মোড় থেকে চুন্টার লোপাড়া ব্রীজ পর্যন্ত সড়কের সংস্কার কাজে বরাদ্ধ আসে ৩ কোটিরও বেশী টাকা। নানা অনিয়মের মাধ্যমে এ কাজটিও কোন রকমে শেষ হয়। আবার অরূয়াইল ব্রীজ থেকে নতুন কালভার্ট পর্যন্ত ৫১৩ মিটার সড়কের কাজের জন্য ৩৫ লাখেরও বেশী টাকা বরাদ্ধ আসে। এ কাজেও ছিল অনিয়মের অভিযোগ। সড়কের ১২ কিলোমিটার জায়গা এখন ভাল। কিন্তু মাঝখানে ভূঁইশ্বর বাজার থেকে লোপাড়া ব্রীজ পর্যন্ত ২.৪ কিলোমিটার সড়কে সংস্কার কাজ হয়নি। এ অংশের কয়েক জায়গা এখন পানির আঘাতে দ্রƒত ভেঙ্গে হাওরে চলে যাচ্ছে। গত এক সপ্তাহ ধরে সিএনজি চালক ও স্থানীয় লোকজন মাটি ফেলে জোড়াতালি দেওয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হচ্ছে না। সড়কের ভাঙ্গন এখন ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। যেকোন সময় এ সড়কের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে। ১১ কোটি টাকার কাজ হওয়ার পরও দু:খ ঘুচেনি ভাটি এলাকার লক্ষাধিক মানুষের। সরাইল এলজিইডি’র উপজেলা প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) নিলুফা ইয়াছমিন বলেন, আমরা এই জায়গাটুকুর কাজের জন্য ফ্লাড প্রকল্পে অনেক আগেই আবেদন করে রেখেছি। অনুমোদন হচ্ছে না। এখন আবার জিওবি মেইনটিনেন্স-এ দিচ্ছি। অনুমোদন হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।