বাগেরহাটের মোল্লাহাটে গভীর রাতে ঘরের সিঁধ কেটে চুরি ও শিশু অপহরণ ঘটনা ঘটলেও চোর/অপহরণকারীদের ভয়ে অসহায় পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ করা হয় নাই বলে জানা গেছে। বুধবার দিনগত রাত ৩টার দিকে উপজেলার গিরিশনগর গ্রামে চুরি ও শিশু অপহরণের ওই ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনার পর চোর/অপহরণকারীদের হুমকীতে ভীতসন্ত্রস্থ হয়ে থানায় অভিযোগ করে নাই বলে ভুক্তভোগী পরিবার জানিয়েছে।
ওই খবরে সরোজমিনে গেলে মৃত আমির আলীর স্ত্রী অসহায় পরিবারের প্রধান শিরিয়া (৫৫) জানান, গত মঙ্গলবার এনজিও ব্র্যাক থেকে তাদেরকে বিশ হাজার টাকা দিয়েছে একটি গরু কিনার/ক্রয়’র জন্য। এ ছাড়া গোয়ালঘর করতে আরো তিন হাজার টাকা ও চার পিচ টিনও দেয় ব্র্যাক। ঘটনার রাতে তিনি তার নাতনী (মেয়ের মেয়ে) সুমনা (৯)’কে নিয়ে ঘরের মেঝেতে ঘুমিয়ে ছিলেন, এ ছাড়া বাড়িতে তার ছেলে, ছেলের বউ ও মেয়ে / মেহমানও ছিলো। ওই রাতে অনুমান ৩টার দিকে একই গ্রামের রহমান শেখের ছেলে আল আমিন (২৭) সিঁধ কেটে ঘরে ঢুকে বাইশ হাজার টাকা চুরি এবং তার নাতনীকে ঘুমন্ত অবস্থায় অপহরণ করে। ওই সময় ঘরের দরজা খোলার শব্দে তার ঘুম ভেঙ্গে যায়। প্রথমে কিছু বুঝে ওঠার আগে তিনি জানতে চান কে বের হয়। তখন কোন জবাব না পাওয়ায় তিনি বিছানা ছেড়ে ওঠেন এবং বাড়ির সবাইকে ডাকেন। দ্রুত বাহির হয়ে দেখেন তার নাতনীকে কাধে নিয়ে দৌড়াচ্ছে। তখন তারা পিছু নিলে বেশ খানিকটা দুরে পান বরজের কাছে শিশুটিকে ফেলে যায়। শিশুকে উদ্ধার করে ওই চোর/অপহরণকারীর বাড়িতে কয়েক প্রতিবেশীসহ যান। তখন দেখেন আল আমিন নিজেকে সামলে পারে নাই, তার পরনের লুঙ্গি কাছানো এবং তার পা ও লুঙ্গিতে পানি/কাদা। তখন আল আমিনের মা ও বাবা উল্টো তাদের ওপর চড়াও হয়ে বেধে রাখতে চান। অবস্থা বেগতিক দেখে ওই রাতেই তারা স্থানীয় ইউপি সদস্য হাসানকে ডেকে তোলেন এবং ঘটনা জানান। এরপর ওই ইউপি সদস্য না-কি তাদেরকে বলেছেন যেহেতু চোর ধরে রাখা বা আটক নাই সেহেতু তার কিছু করার নাই। এখন আপনারা যা ভালো বুঝেন তাই করেন। এ ছাড়া আমরা বাড়ি থেকে বের হলে আল আমিন রামদা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করবে বলে হুমকী দিচ্ছে। সে কারণে বাড়ি থেকে বের হই নাই।
ভিকটিম শিশু সুমনা জানায়-ঘুম অবস্থায় সে প্রথমে বুঝতে পারেনাই, ঘরের বাহিরে নেয়ারপর সে বুঝতে পারে এবং চিৎকার করে। তখন তাকে চিৎকার করতে নিষেধ করে ও গলায় ছুরি ধরে জবাই করা হবে বলে ভয় দেখায়। এরপর তাকে (দুস্কৃতিকারী) পিছন থেকে ধাওয়া করায় সুমনা’কে ফেলে যায়।
ভিকটিম ও তার নানীর মতো একই তথ্যদেন ভিকটিমের মা রহিমা বেগম, মামা হাসান শেখ, জলিল শেখ, প্রতিবেশী লুৎফুন্নেছা (৫৫) ও আসমা (৩০)সহ অনেকে। ওই সময় ব্র্যাকের প্রোগ্রাম সমন্বয়কারী পাপিয়া সুলতানা ও ফাতেমা খাতুন ওই খবরে ওই বাড়িতে আসেন এবং তারা গত মঙ্গলবার ওই টাকা দিয়েছেন বলে সাংবাদিকদের জাজান।
ওই বিষয়ে আল আমিনের মা মাফুজা বেগম বলেন, তাদের বাড়িতে রাত ৩টার পর লোকজন আসছিলো, তারা কোন ভয়ভীতি দেখায় নাই এবং তার ছেলে চুরি ও অপহরণ করেনাই। আল আমিনের পিতা রহমান শেখ বলেন, কোন ঘটনা ঘটেনাই।