লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার চরবংশী ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দু’পক্ষের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার, দলীয় কোন্দল ও পূর্ব শক্রতার জেরে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া এবং সংঘর্ষের ঘটেছে। এ সময় কমপক্ষে ২০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন এবং একটি প্রাইভেটকার ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার রাত ১১টার দিকে উত্তর চরবংশী ইউপির খাসের হাট বাজারে এ সংষর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে তিন থানার পুলিশ (রায়পুর, সদর ও হাজিমারা পুলিশ ফাঁড়ি) ঘটনাস্থল গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক রহুল আমিন ফলীফা ও আ’লীগর নেতা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন হাওলাদারের ভাতিজাসহ তাদের অনুসারী মো. আওলাদ হোসেন ও রুহুল আমিন খলিফার ছেলে রাশেদ খলিফার গ্রুপের মধ্যে ফেসবুকে পাল্টাপাল্টি পোস্ট দেওয়াকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে গুরুতর আহত হয়ে পান্নু মাঝি, সবুজ হাওলাদার, মাইনুদ্দিন আসামি, সোহাগ দেওয়ান, আবদুল কাদের, রুহুল খলিফা, মুযাহিদ, জসিম, বাবু,সাহাবুদ্দিন আসামি, রাসেদ, ইমন,সিদ্দিক,জুলহাস, ইব্রাহিম,সোহেলসহ ২০ নেতাকর্মী রায়পুর, লক্ষ্মীপুর ও ঢাকায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, উপজেলা নির্বাচনের পর থেকে সাবেক চেয়ারম্যান আলতাফ মাস্টারকে কেন্দ্র করে উত্তর চরবংশী ইউনিয়ন আ.লীগ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে দলীয় কর্মকাণ্ড চালাচ্ছিল। এ ছাড়া মেঘনা নদীর পাড়ে অবৈধ মাছের আড়ত ও ইউনিয়ন নির্বাচন কে সামনে রেখে দলীয় কোন্দাল আরো সক্রিয় হয়ে উঠে। এ ঘটনায় কয়েক বার সংঘর্ষ, ভাঙচুর, আহত ও পাল্টাপাল্টি একাধিক মামলা হয়েছে। এমতাবস্থায় আ.লীগ নেতা ওসমান খাঁ ও আলাউদ্দিন খাঁ আলতাফ মাস্টারর সঙ্গে বিরোধ মিটিয়ে ফেলেন।কিন্তু শুক্রবার সকালে ওসমান খাঁ গ্রুরুহুল আমিন খলিফার অনুসারী এক কর্মী 'খাসেরহাট স্বাধীন হয়েছে ও প্রয়োজনে আবার স্বাধীন হবে' এমন লেখাকে কেন্দ্র করে উভয় গ্রুপের মধ্যে ফেসবুকে হুমকি-ধমকি শুরু হয়। এর জের ধরে শুক্রবার রাতে রুহুল আমিন ও রাশেদ খলিফার নের্তৃত্বে ৭/৮ জন কর্মী আলতাফ মাস্টারের কার্যালয়ের সামনে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে ৫ জনকে কুপিয়ে জখম করে। এ সময় বাধা দেওয়ায় আরো ১৫ জন কর্মীকে পিটিয়ে আহত ও কার্যালয়সহ মাস্টারের একটি পাইভেটকার ভাঙচুর করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় রুহুল আমিন ও রাশেদ খলিফা জানান, শুক্রবার রাতে আ.লীগের অস্থায়ী কার্যালয়ে দলীয় সভা করছিলাম। এ সময় সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আলতাফ মাস্টারের ভাতিজা আলাউদ্দিন মিথ্যা অজুহাতে ঝগড়া লাগিয়ে সংঘর্ষের সৃষ্টি করেছে। আমাদের ৬ নেতা-কর্মী লক্ষ্মীপুর ও ঢাকায় পন্ড হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। রায়পুর থানার ওসি আবদুল জলিল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, উভয়পক্ষের লোকদের শান্ত রাখতে রাত থেকেই ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখনও কেউ কোন লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে উপজেলা নির্বাচনের পর থেকে এই দু’গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় একাধিক মামলা থানা ও আদালতে রয়েছে।