পিতা মাতাহীন অসহায় মনোয়ারা খাতুন জীবন জীবিকাই এখন দুর্বিষয়। সমাজের বোঝা হয়ে যেখানে সংসার পরিচালনা করা তার পক্ষে কোন ক্রমেই সম্ভবপর হয়ে উঠছিল না। সেক্ষেত্রে মাথা গোঁজার ঠাঁইয়ে ছোট্ট একটি ঘরে বিদ্যুতের আলো তার কাছে এক অলীক কল্পনা ছাড়া আর কিছুই নয়!
অনেকটা কষ্টের মধ্যেই জীবন জীবিকা তার কাছে ছিল মুখ্য। রাত্রী যাপনসহ সংসারের যাবতীয় কাজ করতো কেরোসিনের আলোয় প্রদীপের জ¦ালানোর মাধ্যমে। আর মনে মনে গভীর স্বপ্ন নিয়ে বন্দনা করতো প্রতিবেশীদের বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত জীবনের উন্নয়নের কথা। কবে আসবে তার মতো প্রতিবন্ধির ঘরে বিদ্যুতের আলো, আর বদলাতে পারবে প্রাচীনতম সভ্যতার কেরোসিন প্রদীপের নিভু নিভু আলোর ঝলকানি? এমন স্বপ্নগুলো তার মাথায় যেন হর ঘামষাই ঘুরপাক খেতো। এমনকি এক বিদ্যুতের আলো প্রত্যাশী প্রতিবন্ধির সন্ধান মিলেছে বগুড়ার শেরপুরে গাড়িদহ ইউনিয়নের দড়িবাংড়া গ্রামে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া প্রতিশ্রুতিবদ্ধ অঙ্গীকার ‘‘ দেশের একটি ঘরও বিদ্যুতের আলোর বিহীন থাকবে না” সেক্ষেত্রে প্রতিবন্ধির মনোয়ারা খাতুনের স্বপ্ন দেখাটা নিছুক অকল্পনীয় নয়। তবে তার চাওয়ার কথা বিশেষ মাধ্যমে জানতে পেরে মানবতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপনে এগিয়ে আসলেন বগুড়া পল্লীবিদ্যু সমিতি-২ এর শেরপুর জোনাল অফিসের লাইনম্যান মো. মোখলেছুর রহমান। তিনি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে বিদ্যুতের লাইনের কাজ করার সুবাদেই প্রতিবন্ধির স্বপ্নের বিষয়টি জানতে পারে। সে মোতাবেক বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে তার কর্মস্থল পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি কার্য্যালয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করেন। বাস্তবায়নের জন্য উদ্যোগ গ্রহন করে নিজস্ব তহবিলের মাধ্যমে প্রতিবন্ধী মনোয়ারা খাতুনের বসতবাড়ীর ঘরে বৈদ্যুতিক সংযোগে মালামাল সরবরাহ করেন। কিনে দেয় প্রয়োজনীয় সামগ্রী।
এ বিষয়ে প্রতিবন্ধী মনোয়ারা খাতুনের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমি খুবি খুশি অনেক কষ্টে দিনপাত যায় তাই কারেন্টের লাইন নেওয়ার মত ক্ষমতা ছিলনা। গরমে অনেক কস্টে থাকতে হতো। তাদের এই সহযোগীতার কারণে আর আমাকে কস্টে থাকতে হবে না।