জামালপুরে দ্বিতীয় দফা বন্যার পদধ্বনি দেখা দিয়েছে। দুই সপ্তাহ পানি বন্দি থাকা পর কিছুটা উন্নতির পর গত রোববার (১২জুলাই) আবারও বন্যার পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ঘন্টা যমুনার পানি বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে বৃদ্ধি পেয়ে বিকাল ৩টা নাগাদ বিপদ সীমার ৩২ সেন্টি মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হইতে ছিল। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পউবো)’র জামালপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু সাঈদ এবং পানি মাপক গেজ পাঠক আবদুল মান্নান। এতে করে জেলার দেওয়ানগঞ্জ, ইসলামপুর, মাদারগঞ্জ, সরিষাবাড়ি, উপজেলার যমুনা ও ব্রহ্মপুত্রের বিস্তৃর্ণ এলাকা নতুন করে প্লাবিত হয়ে আবারও হাজারও মানুষ পানি বন্দি পড়েছে।
বন্যা কবলিত এলাকার মানুষ উঁচু বাঁধে,আবার অনেকেই বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আশ্রয় কেন্দ্র আশ্রয় নিতে শুরু করেছে। বন্যা উপদ্রুত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে।
জামালপুর জেলা ত্রান ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো: নায়েব আলী জানন,বন্যা মোকাবেলায় জেলায় এপর্যন্ত ৭৮৪ মেট্রিক টন জিআর চাল, ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা জিআর ক্যাশ, ২ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, শিশু খাদ্যের জন্য ২ লাখ টাকা এবং গো-খাদ্যের জন্য ২ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়ার পর তা পর্যায়ক্রমে বিতরন করা হয়েছে। ত্রান বরাদ্ধ পেলে চাহিদা অনুযায়ী বন্যা কবলিত এলাকায় ত্রান বিতরন করা হবে বলে জানান।
জেলা প্রশাসনের সর্বশেষ হিসাবে চলতি বন্যায় জেলার ৭টির উপজেলা এবং ৮টি পৌরসভা বন্যায় ৪৯টি ইউনিয়নের ৩৫১টি গ্রাম প্লাবিত হয়। এতে ৯৩ হাজার ২২৫ টি পরিবারের ৩ লাখ ৯৮ হাজার ৬২৩ জন সরাসরি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ১৩ হাজার ৩৪৩ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্থ হয় কৃষক। এ ছাড়া ১২৬ কিলোমিটার আংশিক কাঁচা রাস্তা ও ২৪ কিলোমিটার আংশিক পাকা রাস্তা ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। বন্যার পানির তোড়ে ৪৫৭টি ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ ও ৬ হাজার ৩০৬টি ঘরবাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এ ছাড়া ৩৫৫টি নলকূপ ও ৩৮১টি ল্যাট্রিন, ৪১টি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, ১০০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ৪টি ব্রীজ কালভার্ট ও ৩ কিলোমিটার আংশিক বাঁধ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা ত্রান ও পুর্ণবাসন কর্মকর্তা মো. নায়েব আলী।
এদিকে চলতি বন্যায় জেলায় শিশুসহ ১০ জন বন্যার পানিতে ডুবে মারা যান।