ক’দিনের অবিরাম বর্ষণ ও পাশর্^বর্তি দেশ ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে জামালপুর জেলায় দ্বিতীয় দফা বন্যা দেখা দিয়েছে। যমুনা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার ৭টি উপজেলায় বন্যার পরিস্থিতি চরম অবনতি হয়েছে। গত মঙ্গলবার (১৪জুলাই) বিকাল ৩টা নাগাদ ২৪ ঘন্টায় ৬১সেন্টি মিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে যমুনার বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে বিপদ সীমার ১১২ সেন্টি মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পউবো)’র জামালপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু সাঈদ এবং পানি মাপক গেজ পাঠক আবদুল মান্নান। এদিকে জেলার দেওয়ানগঞ্জ, ইসলামপুর, মাদারগঞ্জ, মেলান্দহ,বকসিগঞ্জ,জামালপুর সদর ও সরিষাবাড়ি, ৭টি উপজেলার ৬৮টি ইউনিয়নের মধ্যে প্রায় ৪০টি ইউনিয়নের বিস্তৃর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ মানুষ পানি বন্দি পড়েছে। বন্যা কবলিত এলাকার মানুষ উঁচু বাঁধে,অনেকেই বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আশ্রয় কেন্দ্র আশ্রয় নিয়েছে। বন্যা উপদ্রুত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্য চরম সংকট দেখা দিয়েছে।
এদিকে প্রথম দফা বন্যায় জামালপুর জেলায় ১০ জন শিশুসহ পানিতে ডুবে মারা গেলে। গত ১৩জুলাই দিবাগত রাত ৯টায় ইসলামপুর উপজেলার চিনাডুলী ইউনিয়নে যমুনার শাখা নদী ডেবরাইপ্যাচ ব্রীজে প্রবল স্রােতের ধ্বাক্কা খেয়ে একটি বরযাত্রীবাহি নৌকা ডুবে একজন নিহত এবং একজন নিখোঁজ রয়েছে।
এদিকে দিকে প্রবল বন্যা দিনব্যাপী পরিদর্শন করেছেন জামালপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোখলেছুর রহমান ও জেলা ত্রান ও পূর্নবাসন কর্মকর্তা নায়েব আলী। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে চলতি বন্যায় জামালপুরে ৩১০ মেঃ টন জিআর চাল, নগদ ১০লাখ টাকা ত্রান বরাদ্ধ পেয়েছে,তার মধ্যে ৭ উপজেলায় এ পর্যন্ত ২১০ মেঃটন চালসহ নগদ ১০লাখ টাকাসহ ২হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। বর্তমানে অবশিষ্ট ১০০ মেঃটন জিআর চালসহ ঈদ উপলক্ষে ৩৪০৮.৫৭০ মেঃটন ভিজিএফ চাল বরাদ্ধ রয়েছে,তা’আগামী কাল থেকে বিতরণ কাজ শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা ত্রান ও পূর্নবাসন কর্মকর্তা নায়েব আলী।