ঝিনাইদহ কালীগঞ্জে সম্প্রতি বৃদ্ধি পেয়েছে ফসলী ক্ষেত বিনষ্টের ঘটনা। চলতি মাসে দুই গ্রামের দুই কৃষকের ধরন্ত পেপে গাছ ও করলা ক্ষেত কেটে সাবাড় করেছে দুর্বৃত্তরা। সর্বশেষ মঙ্গলবার রাতে কীটনাশক স্প্রে করে পুড়িয়ে দিলো আরেক কৃষকের দেড় বিঘা জমির সিম গাছ। এবার ফসল বিনষ্টের শিকার উপজেলার কাষ্টভাঙ্গা ইউনিয়নের ঘোপ গ্রামের মাহতাব মুন্সির ছেলে আবদুর রশিদ। এভাবে দুর্বৃত্তদের দ্বারা ভরা ক্ষেত নষ্ট হওয়ায় ফসলী ক্ষেতের মালিকেরা তাদের ক্ষেত নিয়ে ভাবনায় পড়েছেন।
সরেজমিনে বুধবার বিকালে আবদুর রশিদের ক্ষেতে গেলে দেখা যায়, সিমের সব লতাগুলো শুকিয়ে গেছে। ক্ষেতের মাঝে মধ্যে দুই একটি গাছ ভালো আছে। বাকি সবই নষ্ট হয়ে গেছে।
ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক আবদুর রশিদ জানান, আমি একজন সবজি চাষী। মাঠে অন্য ফসলের সাথে দেড় বিঘা জমিতে সিমের চাষ করেছিলাম। সতেজ গাছগুলো বানে উঠে লতিয়ে যাচ্ছিল। কিছুদিন পরেই সিম ধরা শুরু হতো। কিন্তু শত্রুতা করে কে বা কারা রাতের আঁধারে গাছ বিনাশকরা কীটনাশক স্প্রে করে আমার ক্ষেতের সব সিমগাছ পুড়িয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, আমি তো কারও ক্ষতি করিনি। সে কারণে মনে করি আমার কোন শত্রু নেই। তাহলে যারা এভাবে ভরা ক্ষেত নষ্ট করছে তাদের লাভটা কি হয়েছে ?
প্রশাসনে অভিযোগ না দেয়ার প্রশ্নে তিনি জানান, আমি গ্রামের খেটে খাওয়া সাধারন মানুষ। আমি যেহেতু ক্ষেতে কাউকে দেখিনি। ফলে কারও দোষারোপও করতে পারছিনা। ক্ষেত নষ্ট হওয়ার ফলে আমি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি কিন্তু যে ক্ষেতটা পুড়িয়ে দিয়েছে তার কি কোন লাভ হয়েছে ? তিনি বলেন, যারা কৃষকের ভরাক্ষেত নষ্ঠ করতে পারে সমাজের দুষ্টু প্রকৃতির এ মানুষগুলো সব ধরনের মন্দ কাজ করতে সক্ষম।
ওই গ্রামের ইউপি সদস্য আবদুস সেলিম মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ওই কৃষকের ক্ষেত নষ্ট করার ঘটনার কথা আমাকে কেউ জানায়নি। তবে একজন কৃষকের ভরা ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেলে ওই কৃষক পথে বসে যায়। এমন জঘন্য কাজ করা শুধুমাত্র জঘন্য মানষিকতার লোকদের পক্ষেই সম্ভব।
এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ থানার ওসি মুহাঃ মাহাফুজুর রহমান মিয়া জানান, এমন ঘটনা নিয়ে থানায় এখনও কেউ অভিযোগ নিয়ে আসেননি। আসলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন করবো। তিনি আরও বলেন,কৃষকের ভরা ক্ষেত কেটে দেয়ার মত ক্ষতি পুশিয়ে উঠার নয়। সম্প্রতি এমন ঘটনার কথা শুনছি। কিন্তু দুষ্টু প্রকৃতির এ মানুষগুলোর বিরুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্থরা সন্দেহ করলেও তা অনুমান নির্ভর হওয়ায় কেউ অভিযোগ দিতে চান না। কেননা তারা তো সরাসরি দেখেননি কে এমন জঘন্য কাজ করেছে। ফলে জটিলতার সৃষ্টি হয়। তারপরও কৃষকের পরিশ্রমের ফসল হানীর সাথে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে তিনি আশ্বাস প্রদান করেন।
উল্লেখ্য,চলতি মাসের ৩ জুলাই রাতে উপজেলার মল্লিকপুর গ্রামের কৃষক মাজেদুল ইসলামের প্রায় ৩’শতাধিক ধরন্ত পেপে গাছ এর ৪ দিন পর গত ফয়লা গ্রামের কৃষক আবু সাঈদের ১৫ শতক জমির ধরন্ত করলা গাছ কেটে সাবাড় করে দেয় দুর্বৃত্তরা। এভাবে দুষ্টু প্রকৃতির মানুষ দ্বারা কৃষকের ক্ষেত নষ্ট হওয়ায় ক্ষেত মালিকেরা আছেন অচেনা এক আতঙ্কে।