নওগাঁর মান্দা উপজেলার শিবনদীর টেংরা নামক স্থানের বাঁধ কেটে দেয়ায় রাজশাহীর বাগমারায় ৭ টি ইউনিয়ন বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। বন্যা কবলিত ইউনিয়ন গুলো হলো, গোবিন্দপাড়া, নরদাশ, আউশপাড়া, শুভডাঙ্গা, সোনাডাঙ্গা, গনিপুর ও কাছারি কোয়ালীপাড়া। সোনাডাঙ্গা ও কাছারি কোয়ালীপাড়া ইউনিয়নের বিভিণœ গ্রামে বন্যার পানি ঢোকে হাজার হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে বলে জানা গেছে। বন্যা কবলিত এলাকায় সরকারী কোন কর্মকর্তা এখনো যায়নি বলে বন্যায় পানি বন্দি লোকজন জানিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত (১৪ জুলাই) মঙ্গলবার রাতের কোন এক সময়ে মান্দা এলাকার কিছু স্বার্থপর মানুষ নিজেদের স্বার্থসিদ্ধীর জন্য শিবনদীর টেংরা নামক স্থানের বাঁধটি কেটে দেয়। শিবনদীর টেংরা নামকস্থানের বাঁধটি কাঁটার সাথে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন বন্যায় প্লাবিত হয়। পানি বন্দি হয় হাজার হাজার মানুষ। নষ্ট হয় কয়েক লক্ষ একর আবাদি জমির ফসল। বন্যায় ভেসে যাওয়া ফসল গুলোর মধ্যে পান বরজ, মরিজ, সবজি ক্ষেত, আউশ ও আমন ধান উল্ল্যেখ যোগ্য। এছাড়াও বন্যায় ভেসে গেছে শত শত পুকুরের মাছ। সোনাডাঙ্গা ও কাছারি কোয়ালীপাড়া ইউনিয়নের বিভিণœ গ্রামে মানুষের শোয়ারঘরেও পানি ঢোকে পড়েছে। কিছু কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পানির নীচে তলিয়ে গেছে। এলাকার লোকজন বাড়িঘর ছেড়ে, গরু, ছাগল নিয়ে বিভিণœ বাঁধে ্আশ্রয় নেয়ার চেষ্টা করছে। বন্যা কবলিত এলাকার পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধ গুলো দুর্বলের কারণে সেখানে মানুষ আশ্রয় নিতে ভয় পাচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন কোন বাঁধ বন্যার পানির কারণে হুমকির মুখে পড়েছে বলে জানা গেছে। কাছারি কোয়ালীপাড়া ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামের আ.লীগ নেতা দুলাল উদ্দীন অভিযোগ করেন, তার এলাকার প্রতিটি গ্রামেই বন্যার পানি ঢোকে পড়েছে। লোকজন দিক বিদিক ছুটাছুটি করছে। সরকারী কোন কর্মকর্তা তাদের এলাকার লোকজনের খোঁজখবর নিতে যায়নি বলে তিনি জানিয়েছেন। বন্যার বিষয়টি সংবাদসহ বিভিণœ মিডিয়ায় প্রচারের জন্য তিনি সংবাদ কর্মীদের সহযোগীতা করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।
ধারনা করা হচ্ছে দুই একদিনের মধ্যে উপজেলার সকল ইউনিয়ন ও পৌরসভায় বন্যার পানি ঢোকতে পারে বলে এলাকার লোকজন জানিয়েছেন।
এদিকে বন্যার পূর্বভাস পাওয়ার পর পর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। বন্যা বাগমারায় প্রবেশ করায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সরকারী কর্মকর্তাদের জরুরী বৈঠক ডেকেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরিফ আহম্মেদ। বুধবার বিকেলেই উপজেলা পরিষদ চত্বরে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে। এছাড়াও বন্যার পূর্বভাসের কারণে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ রক্ষা করছে উপজেলা প্রশাসন। বন্যা কবলিত এলাকায় যে কোন দুর্যোগ দ্রুত মোকাবিলা করার সকল প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে বলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরিফ আহম্মেদের মুঠোফোনে যোগাযোগের করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি সবেমাত্রই জানতে পারলাম। আমি ঘটনা গুলো দেখার জন্য বন্যা কবলিত এলাকায় যাচ্ছি। এছাড়াও বন্যাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলার সকল প্রস্তুতি সম্পূর্ণ রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।