বগুড়ার সান্তাহার পৌর শহরের নেশা জাতীয় ট্যাবলেট টাপেন্টাডল, পেন্টাডল, ট্যাপেন্টা বিক্রয়ের অভিযোগ উঠেছে শহরের বেশ কিছু ঔষধের দোকানের বিরুদ্ধে। ফেন্সিডিল, হেরোইন, ইয়াবার দাম বেশি হওয়ার কারণে বিকল্প হিসেবে কম খরচে সেবন করতে পারে এবং হাতের নাগালে পাওয়ায় মাদক সেবীরা এখন ভিড় করছে ঔষধের দোকানে। আর এই সুযোগে কিছু অসাধু ঔষধের ব্যবসায়ী নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে অবাধে বিক্রি করছে এই ট্যাবলেট।
সম্প্রতি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের তফসিলভুক্ত করা হয়েছে। ব্যাথা নাশক টাপেন্টাডল জাতীয় ওষুধ মাদকের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করায় একে ‘খ’ শ্রেণির মাদকদ্রব্য হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার। এসিআই এর লোপেন্টা, স্কায়ারের পেন্টাডল, অপসোনিনের টাপেন্টাডল, এসকেএফ এর ট্যাপেন্টা যেগুলোতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ২০১৮ 'খ' ৬৫ ধারা মোতাবেক আইনে মামলা দায়ের করা যাবে বলে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে। এরপরেও কিছু অসাধু ব্যবসায়ী টাকার বিনিময়ে প্রেসক্রিপশন ছাড়ায় ২০ টাকার নেশা জাতীয় ট্যাবলেট কারও কাছে ৫০ থেকে ৮০ টাকা বিক্রি করে আসছে। শুধু এটাতেই সীমাবদ্ধ নয় ঘুমের ট্যাবলেট, সিভিট, টমিফিন, দিয়ে ঝাটকা, ফুটুস, ঝাঁকি নামের একটা তরল ওষুধ তৈরি করে যা ২০০ টাকায় বিক্রি করে। যে কারণে মাদক সেবীরা এখন ভিড় করে ঔষধের দোকানে। মাঝে মাঝে মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের অত্যাচারে আশেপাশের অন্যান্য লোকজন অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে। তারা ওই সব দোকানের বিরুদ্ধে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন কে অভিযোগ করলেও কোনো কাজ হয় না। প্রত্যেক দিন সন্ধ্যার পর দেখা যায় সান্তাহার পৌর শহর এলাকায় কিছু নামধারী ঔষধের দোকানসহ ছোট বড় ঔষধের ৫ থেকে ৬টা দোকানে অবাদে এইসব নেশা জাতীয় ট্যাবলেট বিক্রি করছে। মাদক সেবীরা সিরিয়াল ধরে ঐ ট্যাবলেট গুলো ক্রয় করে দেখা যায়। মাঝে মাঝে ঐসব মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ঝগড়াও করতে দেখা যায় এমন অভিযোগ করছেন স্থানীয় লোকজন।
সান্তাহার নাগরিক কমিটির যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম রবিন বলেন, যারা মাদক সেবন করে তাদের বেশির ভাগ বয়স ১৮ থেকে ৩৫ এর মধ্যে। ফলে দিন দিন ধ্বংসের মুখে চলে যাচ্ছে যুব সমাজ। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে পরিবার পরিজন। সৃষ্টি হচ্ছে বিবাহ বিচ্ছেদসহ নানান ধরনের জটিলতার। বেড়ে চলেছে চুরি, ছিনতাই, ধর্ষণ, খুনসহ বড় ধরনের অপকর্ম তাই মাদক বন্ধ হওয়া একান্ত প্রয়োজন। তাহলে এই সমস্যাগুলো হবে না বলে মনে করি। সান্তাহার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বগুড়া খ সার্কেলের পরিদর্শক সামছুল আলম বলেন, সরকার গত ৮ই জুলাই থেকে এ সকল ওষুধ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের তফসিলভুক্ত হিসেবে ঘোষণা করেছেন। যে সকল ওষুধ বিক্রেতারা এই জাতীয় ট্যাবলেট অবৈধভাবে বিক্রি করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। বগুড়া ওষুধ প্রশাসনের সহকারী পরিচালক আহসান হাবীব বলেন, প্রেসক্রিপশন ছাড়া কোনো ট্যাবলেট বিক্রি করার নিয়ম নাই। যদি কেউ লোপেন্টা বিক্রি করে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবো।