ইরানের ছোঁড়া ক্ষেপণাস্ত্রের আঘতে বিধ্বস্ত ইউক্রেইনের উড়োজাহাজের ব্ল্যাক বক্স পরীক্ষার জন্য ফ্রান্সে পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার ব্ল্যাক বক্সটি প্যারিসে পাঠানো হয়। সোমবার সেটি পরীক্ষা করার কথা বলে জানান ইরানের উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী। গত ৮ জানুয়ারি ইরানের ছোঁড়া দুইটি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ইউক্রেইনের একটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয় এবং ১৭৬ আরোহীর সবাই মারা যান। ইউক্রেইনের কিয়েভ থেকে কানাডাগামী উড়োজাহাজটি তেহরানের আকাশে বিধ্বস্ত হয়। ইরান প্রথমে দায় অস্বীকার করলেও কয়েকদিন পর ভুলবশত তাদের ছোঁড়া ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে উড়োজাহাজটি বিধ্বস্ত হয়েছে বলে স্বীকার করে। গত ৩ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন হামলায় ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডের প্রধান কাসেম সোলেমানি নিহতের ঘটনার প্রতিশোধ নিতে ৮ জানুয়ারি ইরাকে অবস্থিত মার্কিন সেনা ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল ইরান। হামলার পরপরই নিজেদের আকাশে উড়োজাহাজটিকে পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র ভেবে সেটিকে ধ্বংস করতে হামলা চালায় ইরানি সেনাবাহিনী। নিজেদের ভুল স্বীকার করলেও তেহরান অনেকদিন ধরে বিধ্বস্ত উড়োজাহাজটির ব্ল্যাক বক্স দিতে রাজি হচ্ছিলো না। নিহত যাত্রীদের স্বজনরা শুরু থেকেই আন্তর্জাতিক তদন্তদল গঠন করে ব্ল্যাক বক্সে থাকা তথ্য পরীক্ষার দাবি জানিয়ে আসছিল। যদিও আন্তর্জাতিক এভিয়েশন আইন অনুযায়ী ব্ল্যাক বক্স নিয়ে তদন্তে নেতৃত্ব দেওয়ার পূর্ণ অধিকার ইরানের আছে। কিন্তু ব্ল্যাক বক্স থেকে তথ্য উদ্ধার অত্যন্ত জটিল প্রক্রিয়া এবং সব দেশের হাতে এই প্রযুক্তি নেই বলে মত বিশেষজ্ঞদের। বিধ্বস্ত উড়োজাহাজটি বোয়িং হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র সেটি পরীক্ষা করতে চেয়েছিল। কিন্তু ইরান তাতে রাজি হয়নি। এখন ফরাসী বিশেষজ্ঞরা সেটি পরীক্ষা করবেন। কানাডা এবং ইউক্রেইন তদন্তে অংশ নিতে ফ্রান্সে তাদের বিশেষজ্ঞ দল পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে। নিহত যাত্রীদের মধ্যে এই দুই দেশের সবচেয়ে বেশি নাগরিক ছিল। এদিকে গত সপ্তাহে ইরান তাদের তদন্তের ফল প্রকাশ করেছে। সেখানে ‘মানব ত্রুটি’ এবং দুর্বল সামরিক যোগাযোগের কারণে উড়োজাহজটি বিধ্বস্ত হয়েছে বলে জানায় তারা।এ ঘটনা কোনো ভাবে জড়িত থাকতে পারেন সন্দেহে গত মাসে ইরান ছয় জনকে আটকের কথাও জানায়। তবে ইউক্রেইন বলছে, এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসার সময় হয়নি। আগে আন্তর্জাতিক তদন্ত হওয়া উচিত।