ফরিদপুরে গত ২৪ ঘন্টায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল। গোয়ালন্দ পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি ১সে. মিটার কমে তা এখন বিপদ সীমার ১০ সেন্টি মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে ফরিদপুরের সার্বিব বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে।
এদিকে ফরিদপুর সদর উপজেলার আলীয়াবাদ ইউনিয়নের সাদীপুর বিল গোবিন্দপুর এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাধের ৫০ মিটার ভেঙ্গে গেছে। এর ফলে ১০ মিনিটের মধ্যে ৫৭টি বাড়ি নিমজ্জিত হয়েছে।
রোববার সকাল পৌনে সাতটা থেকে সাতটার মধ্যে ফরিদপুর সদরের আলীয়াবাদ ইউনিয়নের সাদিপুর সংলগ্ন বিল গজারিয়া এলাকার ফরিদপুর-বরিশাল প্রকল্পের অধিনে নির্মিত বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাধের ৫০ মিটার ভেঙ্গে যায়। পানির তীব্র ¯্রােতের কারণে বাধের পাশে সালাম শেখ এর রান্না ঘর ও গোয়াল ঘর ভসে যায়। দুমড়ে মুচড়ে যায় সালাম শেখের টিনির বসত ঘরটি। ওই সময় সালাম শেখের এটি গরুও ভেসে যায়।
বাধটি ভেঙ্গে যাওয়ার মুহূর্তের মধ্যে ওই এলাকার ৫৭টি বাড়ি নিমজ্জিত হয়। ওই এলাকার বাসিন্দা দুলাল শেখ বলেন, বাধটি ভেঙ্গে পড়ায় একটি বিকট শব্দ হয়। বাধের উত্তর দিক ও দক্ষিণ দিকে পানির ব্যবধান ছিল আনুমানিক তিন ফুট। দক্ষিণ দিক শুকনো ছিল। কিন্তু মুহূর্তের মধ্যে বিকট শব্দ ও ¯্রােতের সাথে পানি ডুকে ৫৭টি ঘর বাড়ি ডুবিয়ে দেয়।
ফরিদপুর সদর, চরভদ্রাসন, সদরপুর ও ভাঙ্গা উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নের ৩৪৮টি গ্রামে ২৮ হাজার ৫৬৬টি পরিবার নিমজ্জিত কিংবা পানি বন্দি হয়ে পড়েছেন। এর মধ্যে সদরের ১২৭টি, সদরপুরের ১৪০টি, চরভদ্রাসনের ৭৯টি ও ভাঙ্গার ৩টি গ্রাম রয়েছে।
ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক আশুতোষ বিশ্বাস বলেন, বন্যার ফলে ফরিদপুরের চারটি উপজেলায় এক হাজার হেক্টর আউশ ধান, ২ হাজার ৭৪০ কোনা আমন, ২৮ হেক্টর বীজতলা, ২২৪ হেক্টর রোপা আমন ও ১৫৫ হেক্টর জমির সবজি বিনষ্ট হয়েছে। তিনি বলেন, পদ্মা নদীর পানি বিদৎসীমার এক মিটার উপরে রয়েছে। ফলে ফসলের ক্ষতির পরিমান বাড়ছে।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, বিভিন্ন উপজেলায় বন্যা ও ভাঙ্গন কবলিত ব্যাক্তিদের মধ্যে এ পর্যন্ত ২০০ মে.টন চাল ও ৩ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, এ ছাড়া আরও ৫০০ মে.টন চাল, ১০ লাখ নগদ টাকা, ১০ লাখ টাকার শিশু খাবার, ১০ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার ও গোখাদ্যের জন্য ৯৮ লাখ টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।
ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ বলেন, পদ্মা নদীতে পানি কমলে খুব বেশি পানি কমবে না। বরং এ পরিস্থিতিকে স্থিতিশীল বলা যেতে পারে। তিনি বলেন, উজানে বৃষ্টিপাতের কারণে আগামী দুই এক দিনের মধ্যে পানি আবারও বাড়বে।