ভৈরবে গজারিয়া ইউনিয়নের মানিকদী চান্দেরচরে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে গত পাচঁ মাসে দফায় দফায় অন্তত দশবার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। গত মে মাসে তাজুল মিয়া ( ৫০) নামে ১ জন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়ার ঘটনায় তাজুল সমর্থকরা প্রতিপক্ষ বড় বাড়িতে এখনো প্রতিদিন হামলা চলছে। আজ রোববার পযর্ন্ত ২৫/৩০ টি বসতবাড়ি ভাঙচুর, লুটপাট ও নারীদের নির্যাতন ও শ্লীলতাহানীর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব ঘটনায় উভয় পক্ষ ভৈরব থানায় ৫টি মামলা দায়ের করেছে। এলাকায় বর্তমানে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
মামলার এজাহার, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসিরা জানায়, গত ২৫ ফেব্রুয়ারী মানিকদী চান্দেরচর বড়বাড়ির কেবলু মিয়ার মিয়া হাবিবা (১৪) দুপুরে নিজ বাড়িতে গোসলখানায় গোসলরত অবস্থায় কামাল মিয়ার পুত্র তৌফিক গোসলখানায় ঢুকে হাবিবাকে ঝাপটাইয়া ধরে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ সময় তার ডাক চিৎকারে তৌফিক ও তার সহযোগিরা দৌড়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরদিন গর্জি বাড়ীর ইউপি সদস্য নাসির ঊদ্দিন রাজা মিয়া ছিদ্দিক মিয়া, মানিকদী গ্রামের লাল মিয়া ইসমাইল মিয়ার নেতৃত্বে বড়বাড়িতে হামলা চালিয়ে বসতবাড়ি ভাঙচুর,লুটপাট মারধোর করে বেশ কয়েকজনকে আহত করে। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এসব ঘটনায় ভৈরব থানায় ধর্ষণ চেষ্টা ও বাড়ি-ঘর ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনায় আলী মিয়া ও রেখা বেগম বাদী হয়ে পৃথক ২টি মামলা দায়ের করেছে। এ ঘটনার জের ধরে গত ৩ মে উভয় পক্ষের মধ্যে ফের সংঘর্ষে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়। এদের মধ্যে গর্জি বাড়ির তাজু মিয়া ( ৫০) নামে এক ব্যাক্তি গুরুতর আহত হলে প্রথমে তাকে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। তার মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে গর্জিবাড়ি ও তার সমর্থকরা ফের বড়-বাড়িতে হামলা চালিয়ে ২৫/৩০টি বাড়ি ভাঙচুর ও রুটপাট করে নিয়ে যায়। এদের মধ্যে ২টি পাকাভবন সম্পূর্ণ ভেঙে ফেলে টাকাণ্ডপয়সা ও আসবাবপত্র লুটপাট করে নিয়ে যায়। বর্তমানে পুলিশি গ্রেফতার এড়াতে বড়বাড়িতে কোন পুরুষ না থাকায় গর্জি বাড়ির লোকজন প্রতিরাতে বড়বাড়িতে ঢুকে নারীদের অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে নানাভাবে নির্যাতন ভয়ভীতি হুমকি প্রদান সহ চাদাঁ দাবি করছে বলে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছে।
এদিকে নিহত তাজু মিয়ার স্ত্রী ও স›তানরা অভিযোগ অস্বীকার করে তার স্বজন হত্যার বিচার দাবি করেছেন।
এ বিষয়ে গজারিয়া ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম সারোয়ার জানান, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গর্জিবাড়ি ও বড়বাড়ি ২ পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে তাজু মিয়া নামে ১ জন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। এ ছাড়া বেশ কিছু বাড়ি-ঘর ভাঙচুরের ঘটনা ঘেেটছে।
এ বিষয়ে ভৈরব থানার ওসি মোঃ শাহিন জানান, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে চান্দেরচর গ্রামে ২ পক্ষের সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে এদের মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১ জন মারা গেছে। এ ছাড়া বাড়ি-ঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় উভয় পক্ষ একাধিক মামলা দায়ের করেছে। নতুন করে যাতে এলাকায় সংঘর্ষ না ঘটে আমরা সেদিকে নজরদারি করছি। বর্তমানে আইন শৃঙ্খলা আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে।