কক্সবাজারের টেকনাফের জালিয়াপাড়ায় গত ১৬ জুলাই রাতে চন্দনাইশ কাঞ্চনাবাদ থেকে ইয়াবা কিনতে আসা দু’সহোদর পুলিশের সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার ঘটনা পরিবারের পক্ষে সংবাদ সম্মেলন সংবাদ কওে ঘটনাকে নৃশংস হত্যাকান্ড তদন্ত পূর্বক বিচারের দাবি জানালেন নিহতদের স্বজনরা। গত ২৫ জুলাই শনিবার বিকেলে রওশনহাটস্থ একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলনে নিহতদের বৃদ্ধ মা আনোয়ারা বেগম, বাবা আমিনুল হক, নিহত ফারুকের স্ত্রী মুক্তা আকতার, ১০ বছরের মেয়ে নুসরাত জাহান, বড়বোন আইরিন আক্তার, ছোটবোন রিনাত সুলতানাসহ পরিবারের অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নিহতদের ছোট বোন রিনাত সুলতানা বলেন, তার ভাই আজাদ দীর্ঘদিন বিদেশে ছিল। গত ৬ রমজান সে দেশে আসে। বড়ভাই ফারুক দেশে মোবাইল সার্ভিসিংয়ের কাজ করতো। পাশাপাশি তারা স্থানীয়ভাবে পেয়ারা বাগান করতো। পরিবারের দাবি নিহত ফারুক ও আজাদ ইয়াবা ব্যবসার সাথে কখনো জড়িত ছিলনা। তাদের নামে চন্দনাইশ কিংবা টেকনাফ থানায় কোন মামলাও ছিলনা। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত ১৩ জুলাই সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আজাদ তার এক বন্ধুর ফোন পেয়ে ঘর থেকে বের হয়। এরপর সে নিখোজ হয়। সর্বশেষ ১৪ জুলাই রাত সাড়ে ৮টার দিকে আজাদের মোবাইল ফোন থেকে মায়ের মোবাইলে একটি ম্যাসেজ আসে। তাতে লেখা ছিল “মা আমি শেষ”। এর পরপরই তার পরিবারের পক্ষ থেকে মোবাইল ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও কোন খবর পাওয়া যায়নি। পরদিন ১৫ জুলাই চন্দনাইশ থানায় এ বিষয়ে সাধারণ ডায়েরী করতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় দুপুর ২টার দিকে ফারুকের বাসায় পুলিশ আসে। তারা বাসায় তল্লাশী চালিয়ে কিছু না পেয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার কথা বলে ফারুকে নিয়ে যায় এবং জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে ছেড়ে দেয়া হবে বলেও জানায় পুলিশ। কিন্তু রাত ৮টার দিকে জানতে পারি গত ১৪ জুলাই ফারুকের বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় মামলা হয়েছে। সে মামলায় তাকে টেকনাফ থানা পুলিশ নিয়ে গেছে। পরে টেকনাফ ও উখিয়া থানায় খবর নিয়ে জানা যায় ফারুক ও আজাদের বিরুদ্ধে কোন মামলা হয়নি। ওইদিন রাত ১০টা নাগাদ শেষ নাম্বার ৮৩৪ অজ্ঞাত একটি ফোন নাম্বার থেকে কল দিয়ে ৮ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। অন্যথায় ফারুক ও আজাদকে রাতেই ক্রস ফায়ারে মেরে ফেলা হবে। এরপর শতবার চেষ্ঠা কওে ও যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হই। গত ১৬ জুলাই সকাল ৭টার দিকে টেকনাফ থানা থেকে ফোন আসে কক্সবাজার সদর হাসপাতাল থেকে ফারুক ও আজাদের লাশ চিহ্নিত করে নিয়ে যাওয়ার জন্য। গত ১৮ জুলাই তাদের লাশ নিয়ে এসে চন্দনাইশের কাঞ্চননগরস্থ ৬নং ওয়ার্ডে নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বিচার বিভাগ, মানবাধিকার কমিশনের নিকট এ হত্যাকান্ডের সুষ্ট তদন্ত পূর্বক বিচার দাবি জানান ।