আশুগঞ্জে গত ৭ মাসে বিপুল পরিমাণ মাদক দ্রব্য উদ্ধার করেছে পুলিশ। বিভিন্ন সময়ের অভিযানে গ্রেফতার করা হয়েছে মাদকের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রায় আড়াই শতাধিক আসামী। থানায় রজুু করা হয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দেড় শতাধিক মামলা।
এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকলে মাদকের পাশাপাশি অপরাধ প্রবনতা কমবে উল্লেখ করে মাদকের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান আরো জোরদার করার দাবি করছেন সচেনতন মহল। আশুগঞ্জ থানা পুলিশের দেয়া তথ্যমতে গত বছরের নভেম্বর থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত সময়ে আশুগঞ্জে মোট ১৬শ ২৩ কেজি ৯শ গ্রাম গাঁজা, ৪হাজার ৭শ ৩৮ পিস ইয়াবা, ২হাজার ৯শ ৬৪ বোতল ফেনসিডিল ও ১শ ৩৭ লিটার দেশীয় চোলাই মদ উদ্ধার করা হয়েছে।
এ সময়ের মধ্যে বিভিন্ন অভিযানে মাদকের সাথে সংশ্লিষ্ট মোট ২৭৮ জনকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। এ ছাড়া উল্লিখিত সময়ের মধ্যে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে আশুগঞ্জ থানায় মোট ১৬০টি মামলা রজ্জু করা হয়েছে। জানা যায়, পুলিশের একক অভিযান ছাড়াও র্যাব ও অন্যান্য বাহিনী এবং পুলিশ, র্যাব ও অন্যান্য বাহিনীর যৌথ অভিযানে এসব মাদক দ্রব্য উদ্ধার করা হয়।সূত্র জানায়, সীমান্ত এলাকার কাছাকাছি ও মহাসড়কের পাশে অবস্থিত হওয়ায় আশুগঞ্জকে ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহার করে থাকে মাদক ব্যবসায়ীরা। এ সুবাধে স্থানীয়ভাবেও গড়ে উঠেছে অনেক মাদক ব্যবসায়ী। ফলে উপজেলার উঠতি বয়সের তরুণ ও যুবকেরা মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। মোবাইল ফোনে যোগাযোগের মাধ্যমে মাদক ব্যবসায়ীরা মাদকাসক্তদের নিকট পৌঁছে দিচ্ছে ইয়াবা, ফেনসিডিল, মদ ও গাঁজাসহ নানান মাদকদ্রব্য।
সমীক্ষায় দেখা যায়, মাদকাসক্ত তরুণ ও যুবকরা ইয়াবা সেবনের দিকে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকছে। আর এসব মাদকাসক্তিকে কেন্দ্র করে বাড়ছে চুরি, ছিনতাই, জুয়া ও ইভটিজিংসহ বিভিন্ন অপরাধ প্রবনতা। পুলিশ এসব মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করলেও তারা জামিন নিয়ে বেড়িয়ে এসে আবার মাদক ব্যবসা শুরু করে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। তাই সচেতন মহল মনে করছে চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান অব্যাহত থাকলে ক্রমেই এ অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটবে। ভুক্তভোগীরা মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান আরো জোরদার করতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহবান জানান।
এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ মোঃ জাবেদ মাহমুদ বলেন, মাদকের ব্যপারে আশুগঞ্জ থানা পুলিশ জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছে। কারণ, মাদক হচ্ছে সকল অপরাধের মূল। তাই মাদক কারবারী, মাদক সেবনকারী ও মাদক সংশ্লিষ্ট কারো সাথে আপস নেই। এজন্য পুলিশ ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতার প্রয়োজন। তিনি মাদক মুক্ত আশুগঞ্জ গড়তে সমাজের সর্বস্তরের মানুষের সহযোগিতা কামনা করেন।