প্রধানমন্ত্রীর নাম ভাঙ্গিয়ে ব্যাক্তিগত স্টাফ পরিচয় দিয়ে চাকুরীর প্রলোভন দিয়ে মোটা অংকের ডোনেশন নিয়ে ভূয়া নিয়োগপত্র প্রদান করে অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে দিনাজপুর জেলার চিরিরবন্দর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জ্যোতিষ চন্দ্র রায়সহ একটি সংঘবদ্ধ চক্রের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় দিনাজপুর জেলা বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালত-৪ চিরিরবন্দর আদালতে গত ১৫ জুলাই/২০২০ তারিখে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। যার মামলা নং সি আর ১২৮/২০২০ (চিরির)
মামলার এজাহারে জানা গেছে, চিরিরবন্দর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জ্যোতিষ চন্দ্র রায় নিজেকে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর সাবেক ব্যাক্তিগত স্টাফ পরিচয় দিয়ে প্রাণিসম্পদ ও ডেইরী উন্নয়ন প্রকল্পে (LDDP) এর অধীনে বিভিন্ন পদে চাকুরীর আশ্বাস দিলে দিনাজপুর কোতোয়ালি থানার দাড়াইল নিবাসী মোহাম্মদ আলীর ছেলে দেলোয়ার হোসেন, একই উপজেলার ইসলামবাগ এলাকার মোঃ রুবেল, পার্বতীপুর উপজেলার দেউল গ্রামের হিরণ্য রায়ের পুত্র রামপদ রায় ও একই গ্রামের মতিয়ার রহমানের ছেলে মোঃ মিজানুর রহমান সরল মনে বিশ্বাস করে গত ২২ সেপ্টেম্বর/২০১৯ ইং, ১৫ অক্টোবর/২০১৯ ইং তারিখে জ্যোতিষ চন্দ্র রায়ের বাড়িতে গিয়ে সংঘবদ্ধচক্রের উপস্থিতিতে জ্যোতিষকে প্রাণিসম্পদ ও ডেইরী উন্নয়ন প্রকল্পে লাইভস্টক ফিল্ড এ্যাসিস্টেন্ট পদের জন্য ৪ জন মিলে ১৪ লক্ষ টাকা দিলে গত ২৭ অক্টোবর/২০১৯ ওই ৪ জনকে নিয়োগপত্র দেয়। পরবর্তিতে নিয়োগপত্র জাল প্রমাণিত হলে ওই ৪ জন গত ২৫ জুন/২০২০ ইং তারিখ বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টায় জ্যোতিষ চন্দ্র রায়ের কাছে ভূয়া নিয়োগ পত্রের বিষয়ে জানতে চাইলে ও প্রদেয় টাকা ফেরত চাইলে জ্যোতিষ চন্দ্র রায় তাদের ধমক দিয়ে বলেন, তার হাত অনেক লম্বা। নিয়োগপত্র দিয়েছি. প্রতারণা করেছি, বিশ্বাস ভঙ্গ করেছি, কিন্তু তোমরা আমার ও আমার লোকের কিছুই করতে পারবেনা।
ঘটনার বিষয়ে বাদি মোঃ দেলোয়ার হোসেন জানান, চিরিরবন্দর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জ্যোতিষ চন্দ্র রায় তার কন্যা কৃষ্ণার নামে কৃষ্ণা সিকিউরিটি সার্ভিস লিমিটেড নামে নাম সর্বস্ব কোম্পানি চালান। ওই কোম্পানীতে চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে ঘুষ ও ডোনেশনের নামে টাকা নিয়ে ভূয়া নিয়োগপত্র প্রদান করে থাকেন। তার প্রলোভনে বিশ্বাস করে আমরা ৪ জন মোট ১৪ লক্ষ টাকা তার বাড়িতে প্রদান করি। দীর্ঘদিন হলেও টাকা ফেরত না দেয়ায় আমরা আদালতে মামলা দায়ের করেছি।
প্রধানমন্ত্রীর পরিচয় ও ব্যাক্তিগত সাবেক স্টাফ পরিচয়ে চাকুরী দেয়ার আশ্বাসে টাকা গ্রহন, প্রতারণা, ভূয়া নিয়োগপত্র প্রদান, হুমকী ও আদালতে মামলার বিষয়ে জ্যোতিষ চন্দ্র রায়ের কাছে জানতে চাইলে ,সে জানায় তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সত্য নয়। এজাহারটি সম্পুনূ ভূয়া,ভিত্তিহীন, বানোয়াট। ইতোমধ্যে মামলার বাদি মিথ্যা মামলার কথা স্বীকার করেছে। চিরিরবন্দর থানা পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে। তদন্ত শেষে সাংবাদিকদের জানানো হবে।
চিরিরবন্দর উপজেলা পরিষদের সদস্য সচিব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আয়েশা সিদ্দীকা বলেন, তার পরিষদের কেউ অভিযুক্ত হয়ে দোষী প্রমাণিত হলে প্রশাসনিক ও আইনি সংক্রান্ত নির্দেশনা পেলে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।