মামলার এজাহারে নাম নেই। তারপরও মহিষ চুরি মামলাতে অন্তভ’ক্ত করা হয়েছে কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন মনির হোসেন সুমনের। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্রে ওই মামলাটি প্রত্যাহারের দাবীতে সংবাদ সন্মেলন করেছে উপজেলা ছাত্রলীগ। বৃহস্পতিবার দুপুরে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্ষালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সন্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ছাত্রলীগ উপজেলা শাখার সভাপতি নাজমুল হাসান নাজিম।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়েছে- উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক মনির হোসেন সুমন একজন রাজপথের লড়াকু সৈনিক। তার যোগ্য নেতৃত্বে ইর্ষান্বিত হয়ে প্রতিপক্ষরা তাকে ঘায়েল করার চেষ্টা করছে। ইতঃপূর্বে সে প্রতিপক্ষের গুলি খেয়ে মৃত্যুর মুখ থেকে বেঁচে এসেছে। কিন্তু গত ২৯ জুলাই তারা কয়েকটি দৈনিক ও অনলাইনের দেখতে পান একটি মহিষ চুরি মামলাতে উপজেলা ছাত্রলীগ সাধারন সম্পাদক সুমনকে জড়িয়ে খবর প্রকাশিত হয়েছে। তারা দৃড়তার সাথে জানান, ওই ঘঁটনার সাথে সুমন কোন ভাবেই সম্পৃক্ত নহে। ওই চুরি মামলার আটক ১ নং আসামি প্রতিপক্ষের প্ররোচনায় আদালতে মিথ্যা মনগড়া কথা বলেছে।্ এতে সুমনের নাম এসেছে বলে মামলার আইও সাংবাদিকদের তথ্য দেওয়াতেই খবর প্রকাশের পর মিথ্যা ঘটনাটি উন্মোচন হয়। এতে ছাত্রলীগের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করা হয়েছে। এ সময়ে উপস্থিত নেতৃবৃন্দরা, ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজে বের করে মুল রহস্য উন্মোচন ও সঠিক খবরটি তুলে ধরার জন্য সাংবাদিকদের প্রতি অনুরোধ জানান। এছাড়াও অবিলম্বে মিথ্যা মামলা নাম প্রত্যাহারে প্রশাসনের প্রতি আহব্বান জানান। অন্যথায় রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম সহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের ঘোষনা দেন তারা।
কোটচাঁদপুর উপজেলার গুড়পাড়া থেকে চলতি বছরের ১৬ জুন কৃষক নাসির উদ্দীনের দুইটি মহিষ চুরি হয়। এ ঘটনায় কোটচাঁদপুর থানায় ২৬ জুন একটি মামলা হয়। মামলার পর জেলার পুলিশ কালীগঞ্জ উপজেলার চাঁচড়া গ্রামের সদ্য প্রয়াত আজগার আলীর ছেলে সেলিমের বাড়ি থেকে একটি মহিষ উদ্ধার করে। পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয় সেলিম। এ সময় মহিশ উদ্ধার নিয়ে পুলিশের সাথে হামলা পাল্টা হামলার ঘটনাও ঘটে। পরে আটক সেলিম আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দেন। সেখানেই নাম আসে কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন সুমনের। আদালতে সেলিম জানান, তিনি চোর নন। মহিষটি কালীগঞ্জ শিবনগর গ্রামের মনির হোসেন সুমন, একই গ্রামের মিলন, কোটচাঁদপুরের বলুহর গ্রামের ঢালীপাড়ার তরিকুল ও চুয়াডাঙ্গার রশিদ তার কাছে বিক্রি করেন।এমন সংবাদ গণমাধ্যমে আসার পর ঘটনা তদন্তে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রানা হামিদ ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল আওয়ালসহ ৪ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, ছাত্রলীগ নেতা মুশফিকুর রহিম নাছিম, তৌহিদুল ইসলাম, এনামুল হক আবু ও মোঃ রায়হান খান।কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সুমন মুঠোফোনে জানান, তিনি কিছুই জানেন না। তবে এ রকম কিছু হয়ে থাকলে তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন।ঝিনাইদহ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রানা হামিদ ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল আওয়াল জানান, ঘটনা যদি অসত্য হলে আমরা সাংগঠনিক ভাবে ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। আর যদি সঠিক হয় তবে সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তারা জানান, এ বিষয়ে তারা মঙ্গলবার ৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।সংবাদ সন্মেলনে উপস্থিত থেকে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আনিচুর রহমান মিঠু মালিতা, ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদিকা এমপি কন্যা মুমতারিন ফেরদোস ডরিন, সাংগাঠনিক সম্পাদক রিয়াজ মোল্ল্য ও জাবের হোসেন জুয়েল। এ সময়ে ছাত্রলীগের পৌর, কলেজ ও বিভিন্ন ইউনিয়ন কমিটির নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।