রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানা আ’লীগ সহ-সভাপতি হাট ইজারাদার এবং আগামী তানোর পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে আ’লীগ দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী আবুল বাশার সুজন এক পার্শ্বে এলাকার চিহিৃত চরমপন্থী দলের সদস্য ও আরেক পার্শ্বে বিএনপি নেতাকে নিয়ে মাংস বিতরনের ছবি ফেস বখে ভাইরাল হয়েছে।
সেই সাথে দুপুরে প্রিতী ভোজসহ পুরো আয়োজন জুড়েই সক্রিয় ভাবে উপস্থিত ছিলেন তানোর পৌর যুবদল সিনিয়র সহ-সভাপতি আয়েন উদ্দিনসহ বিএনপি ও যুবদলের বেশ কিছু নেতাকর্মি। দরদ্রদের মাঝে মাংস বিতরণের ছবি ফেসবুকে পোষ্ট করা হয়। ওইসব ছবি নিয়েই শুরু হয়েছে আলোচনা ও সমালোচনা। বিরাজ করছে চাপা ক্ষোভ ও অসস্তোষ।
আজ (২ই আগষ্ট) রোববার সকালে (ঈদুল আযহার পরদিন) চাপড়া শিশু সদনের পূর্ব পার্শ্বের সদ্য জমি কিনে করা বাড়িতে সুজন ২টি গরু জবাই করে এলাকা বাসীর মধ্যে মাংস বিতরণ করার পাশাপাশি রেখে দেয়া কিছু মাংস দিয়ে দুপুরে প্রিতী ভোজের আয়োজন করেন।
মাংস বিতরণের সময় মাংস গ্রহনকারীদের ছবি তুলে ফেসবুকে পোষ্ট করা হয়েছে। সেই সাথে রান্না-বান্নার ছবিও ফেস বুকে পোষ্ট করা হয়। ওই ছবিতে এলাকার চিহিৃত চরমপন্থী সদস্য আবু হেনা ও বিএনপি নেতা জাবেদ আলীকে দেখে আ’লীগ ও যুবলীগসহ অংগ সংগঠনের একাংশের নেতা-কর্মিদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ ও অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে।
আ’লীগ ও যুবলীগসহ অংগসংগঠণের নেতা-কর্মিরা বলছেন, স্থানীয় সংসদ আলহাজ ওমর ফারুক চৌধুরী রাজশাহীর সুজনকে তানোর পৌর নির্বাচনে আ’লীগ দলীয় মেয়র প্রার্থী ঘোষনা দিয়ে মাঠে নামিয়েছেন। কিন্তু সুজন আ’লীগের নেতা-কর্মিদের চেয়ে বিএনপি নেতা-কর্মিদের নিয়েই বেশী ব্যাস্থ্য রয়েছেন।
আ’লীগ ও যুবলীগ নেতা-কর্মিরা বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকেই তানোর পৌরসভা বিএনপির দখলে রয়েছে। আগামী নির্বাচনে সুজনকে দিয়ে তা দখলে নেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। এর জন্য স্থানীয় সাংসদ আলহাজ ওমর ফারুক চৌধুরী আ’লীগ ও যুবলীগসহ অংগসংগঠণের নেতা-কর্মিদের সাথে নিয়ে সুজনকে ভোটারদের সাথে সুসম্পর্ক তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন।
কিন্তু সুজন স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ ওমর ফারুক চৌধুরীর নির্দেশ অমান্য করে বিএনপি নেতা-কর্মিদের সাথে নিয়ে ঈদুল আযহার মাংস বিতরণ ও প্রিতী ভোজের আয়োজন করেছেন। আ’লীগ দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী আবুল বাশার সুজন আ’লীগের নবীর-প্রবীন ত্যাগী নেতা-কর্মিদের সাথে কোন যোগাযোগ করছেন না।
ফলে আগামী নির্বাচনে তানোর পৌরসভা আ’লীগের দখলে আসবে কিনা তা নিয়ে ভোটারসহ জনসাধারণের মধ্যে শুরু হয়েছে আলোচনা ও সমালোচনা। ভোটাররা বলছেন, যদি আ’লীগের নেতা-কর্মিদের মাইনাস করে সুজনকে মনোনয়ন দেয়া হয় তবে, বর্তমান মেয়র মিজানুর রহমান মিজানের জন্য সুবিধা হবে।
এনিয়ে যোগাযোগ করা হলে তানোর পৌর মেয়র প্রার্থী আবুল বাশার সুজন বলেন, আইয়ান উদ্দিন আমার দীর্ঘদিনের ব্যবসায়ী পার্টনার। আমি মেয়র প্রার্থী ঘোষনা নিয়ে মাঠে নামার পর থেকে সে আর বিএনপির বা যুবদলের কোন সভা সেমিনারে জাননা। আমার সাথেই আছেন জানিয়ে তিনি বলেন, জোর করেই এখনো তাকে (আইয়ানকে) তানোর পৌর যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, বিএনপি যদি আইয়ানকে দলের পদে রাখতে চাই এখানে আমার কি করার থাকতে পারে বলেন ?। তিনি উল্টো এই প্রতিবেদককে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলেন আমি কোন দুর্নীতি করিনা আমাকে নিয়ে লিখার কিছুই নাই।
যোগাযোগ করা হলে তানোর পৌর আ’লীগ সভাপতি ইমরুল হক বলেন, গত নির্বাচনে আমি মাত্র ১৩ ভোটে পরাজিত হয়েছে, আমাকে আরেকবার সুযোগ না দিয়ে রাজশাহী থেকে বহিরাগতকে এনে চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, সাংসদ ফারুক চৌধুরী ঘোষিত প্রার্থী সুজন আ’লীগ পদধারী নেতাদের সাথে কোন যোগাযোগ করেন না। তাই সুজনের আয়োজনে পদধারী নেতারা উপস্থিত থাকেন না।
যোগাযোগ করা হলে তানোর পৌর যুবলীগ সভাপতি রাজিব সরকার হিরোর বাড়ির পার্শ্বে করা সুজনের আজ মাংস বিতরণ ও প্রিতী ভোজের প্রোগ্রামের বিষয়ে তিনি শুনেছেন জানিয়ে বলেন, আমি রাজশাহীতে আছি জানিয়ে মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন।
এবিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তানোর পৌর মেয়র ও তানোর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান বলেন, আইয়ান উদ্দিন তানোর পৌরসভা যুবদলের সিনিয়ন সহ-সভাপতি। তিনি বলেন, আইয়ানের পিতাও ৩নং ওয়ার্ড বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি। তারা বিএনপিতে এখনো সক্রিয় রয়েছেন।