বাগেরহাটের মোল্লাহাটে খামার থেকে মুরগী চুরি করে পালানোর সময় পথিমধ্যে হাতেনাতে ধরা পড়া অতঃপর শালিস সিদ্ধান্ত না মানার অভিযোগ পাওয়া গেছে ওই খামারের এক কর্মচারী/যুবকের বিরুদ্ধে। উপজেলার কামার গ্রামে ইমদাদুল মিলনের গরু ও মুরগীর খামারে গত ৩০ জুলাই রাত ২টার দিকে চুরির ঘটনায় ইয়াসিন নামের ওই যুবককে সিমাহীন নির্যাতন/মারপিট করা হয়েছে বলেও পাল্টা অভিযোগ পাওয়া গেছে তার পরিবারের পক্ষ থেকে। চোর শায়েস্তা করার নামে যে সকল ব্যক্তি প্রকাশ্যে সিমাহীন অত্যাচার/নির্যাতন করেছে, তাদেরই একাংশ ভবিষ্যত ঝুকি/বিপদ এড়াতে ভিকটিম পরিবারের সাথে মিলেছে। ভিকটিম পরিবারও ওই সকল লোকদের পেয়ে এবং তাদের সহযোগিতায় খামার মালিকের ক্ষতি করার জন্য বিভিন্ন প্রকার ষড়যন্ত্র করছে বলেও জানা গেছে। ফলে কামারগ্রাম এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে মুরগী চুরির ওই ঘটনায়।
খামারের মালিক আওয়ামী লীগ নেতা-ইমদাদুল মিলন জানান-৩০ জুলাই রাত প্রায় ২টার দিকে মোবাইল ফোনে তিনি জানতে পারেন, তার খামার থেকে মুরগী চুরি করে পালানোর সময় পথিমধ্যে লোকজনের কাছে ধরা পড়েছে ওই খামারের দিনের বেলার কর্মচারী ইয়াসিন। ওই খবরে সে দ্রুত খামারে পৌছান এবং দু’টি বস্তায় ১২টি মুরগীসহ ইয়াসিনকে দেখেন। ওই ঘটনায় তাৎক্ষণিক (ওই রাতেই) স্থানীয় মুরব্বিদের মোবাইলে ডাকেন তিনি। এরপর অবঃ দফাদার তোফাজ্জেল হোসেন ও নুর সোবহানসহ কয়েক ব্যক্তি আসেন এবং সম্পূর্ণ বিষয়টি মুরব্বিদের উপর ন্যাস্ত করেন ইমদাদুল মিলন। পরে সকাল ৭টার দিকে ওই ঘটনায় শালিস হয়। ওই শালিসের মাধ্যমে খামার মালিকের ক্ষতিপূরণ বাবদ মুরগীসহ দরাপড়া ইয়াসিন চল্লিশ হাজার টাকা ও চোরাই মুরগী ক্রয়ের কারণে রিক্তা নামে এক মহিলা বিশ হাজার টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
তিনি আরো বলেন-মুরব্বীদের কাছে বিষয়টি ন্যাস্ত করেছেন এবং যে, সিদ্ধান্ত দিয়েছেন তিনি তা মেনে নিয়েছেন। তিনি কেবল চুরি ও ক্ষয়-ক্ষতি হতে মুক্তি চান বলেও জানান।
গণ্যমাণ্যদের মাঝে অবঃ দফাদার মোঃ তোফাজ্জেল হোসেনসহ কয়েকজনে জানান-কামার গ্রামের জাহাঙ্গির শেখের ছেলে ইয়াসিন শেখ (২৫) তার কর্মস্থল একই গ্রামের ইমদাদুল মিলনের গরু ও মুরগীর খামার হতে বস্তায় ভরে ১২টি লেয়ার মুরগী চুরি করে পালাচ্ছিলো। ঘটনার রাতে ২টার দিকে হাতেনাতে ধরা পড়ে ওই যুবক। এর পূর্বেও ওই খামার থেকে ২৫০টি ডিমপাড়া মূরগী ও ২০০টি বয়লার মুরগী চুরি হয়, যার মূল্য প্রায় এল লাখ পয়ত্রিশ হাজার টাকা। সার্বিক বিবেচনায় জড়িত ইয়াসিন ও রিক্তা নামে এক মহিলার পক্ষ থেকে মালিক পক্ষকে ৬০হাজার টাকা ক্ষতিপুরণ দেয়ার সিদ্ধান্ত দেন শালিস গণ। তাৎক্ষণিক কোন টাকা পরিশোধ করতে না পারায় সময় দেয়া হয়। এ সুযোগে ক্ষতিপুরণ না দেয়ার কৌশল হিসেবে ওই যুবকের পিতা জাহাঙ্গীর শেখ গণ্যমাণ্যদের বলেন, তার ছেলে অসুস্থ্য। তাই তার ছেলেকে পার্শ্ববর্তী চিতলমারী উপজেলার একটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।
ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন ইয়াসিন বলেন-তিনি ওই খামারের কর্মচারী। তিনি চুরি করে নাই, ওই খামারের আরএক কর্মচারী তাকে রাত ২টার দিকে মোবাইলে ডেকে নেয়। এরপর তাকে চোর বলে অত্যাচার নির্যাতন করে। ইয়াসিনের স্ত্রী বলেন তার স্বামীকে অন্তত ৩০বার মোবাইল করায় ওই রাতে তিনি খামারে জান এবং তাকে সিমাহীন নির্যাতন করা হয়। ইয়াসিনের পিতা জাহাঙ্গির বলেন-তার ছেলে যদি মারা যায়, তাহলে তিনি আইনের আশ্রয় নিবেন, না হলে কিছু করবেন না।
রিক্তা নামের মহিলা সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে রাজি না হওয়ায় তার বক্তব্য পাওয়া যায় নাই।
সচেতন মহলের মতে, এলাকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে/স্বাভাবিক করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্থ্যক্ষেপ প্রয়োজন।