গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে অতিবৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে সৃষ্ট বন্যায় ১শ' ৩১দশমিক ৫০ হেক্টর ফসলী জমির পাট, রোপা আমন বীজতলা, সব্জী ও তিল ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, অতিবৃষ্টি ও বন্যার পানি উঠেছিল এমন এলাকায় ক্ষয়-ক্ষতির চিহ্ন নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে শাক-সব্জী ক্ষেতগুলো। অথচ উপজেলার তারাপুরসহ বেশ কিছু এলাকা সব্জী চাষের জন্য খ্যাত। এই জনপদের মানুষের সিংহভাগ সব্জীর চাহিদা পূরণ হয়ে থাকে তারাপুরে উৎপাদনকৃত শাক-সব্জির যোগান থেকে। কিন্তু এবারের বন্যায় পটল,ঝিঙা, শশা, করলা,বরবটি,চিচিংগা, ঢেঁড়স, মরিচের ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এতে করে কমে যেতে পারে শাক-সব্জির সরবরাহ, বেড়ে যেতে পারে দাম। যার প্রভাব ইতোমধ্যেই বাজারে পড়তে শুরু করেছে। কিছু আমন বীজতলা নষ্ট হওয়ায় শঙ্কা রয়েছে আমন চাষ ব্যাহত হওয়ার।
উপজেলা কৃষি অফিসের প্রস্তুতকৃত প্রতিবেদন অনুযায়ী জানা যায়, খরিপ-২ (২০২০-২১) মৌসুমে অতিবৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে সৃষ্ট বন্যায় মোট ১শ' ৩১ দশমিক ৫০ হেক্টর জমির ফসল পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এবারে উপজেলায় ৪ হাজার ২শ' ৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। তার মধ্যে ৬৫ হেক্টর জমির পাট সম্পুর্ণ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। রোপা আমন বীজতলার পরিমাণ ১ হাজার ৫শ' ৪০ হেক্টর, ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ২৫ হেক্টর। সব্জী চাষ হয়েছে ৬শ' হেক্টর জমিতে, ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ৬ দশমিক ৫০ হেক্টর। আর তিল চাষ হয়েছে ৫৫ হেক্টর জমিতে, ক্ষতিগ্রস্থ তিল চাষকৃত জমির পরিমাণ হলো ৪ হেক্টর। এতে করে উপজেলার মোট ২ হাজার ৩শ' ৫ জন কৃষক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা একেএম ফরিদুল হক বলেন," বন্যায় সৃষ্ট ক্ষয়-ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ইতোমধ্যেই আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। যার মধ্যে ৩০ একর জমিতে কমিউনিটি বীজতলা তৈরী করেছি, যা দিয়ে প্রায় ৬শ' একর জমিতে আমন চারা রোপন করা যাবে। পাশাপাশি আরো বন্যার আশঙ্কা করে উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় ১৬টি ভাসমান বীজতলা তৈরী করা হয়েছে এবং কৃষকদেরকে ভাসমান বীজতলা তৈরীর প্রশিক্ষণও দেয়া হচ্ছে। পরবর্তীতে এসব ভাসমান বীজতলা খালি হলে সব্জী বীজ ছিটিয়ে দেয়া হবে। মিটবে সব্জীর চাহিদা।"