বগুড়ার কাহালু উপজেলায় করোনা ভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রন্ত রোগীর সংখ্যা ইতিমধ্যেই সেঞ্চুরী তথা ১শ’ পার করে ১১১ তে।
সর্বশেষ ০৭ জুলাই বগুড়া সিভিল সার্জন অফিসের দেওয়া তথ্য মতে এ উপজেলায় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাড়িয়েছে ১১১ জন। যা গত ১লা জুনেও ছিল মাত্র ১৫জন। ২ মাসের ব্যবধানে কাহালুতে রোগীর সংখ্যা ৭ গুণ বেড়েছে। তবে ইতিমধ্যেই ৯৮ জন সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরেছেন বলে জানিয়েছে বগুড়া সিভিল সার্জন অফিস।
গত ১৩ মে কাহালু উপজেলার মুরইল বিষ্ণপুরে সর্বপ্রথম একজন করোনা রোগী শনাক্ত হয়। তিনি নারায়নগঞ্জের একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকুরি করতেন এবং কাহালুতে নিজ বাড়িতে আসার পর তার করোনা উপসর্গ দেখা দেয়। এরপর ধীরে ধীরে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলছে।
কাহালুতে করোনা আক্রন্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন ৩জন। কাহালুর নারহট্ট ইউনিয়নে আক্রন্ত রোগীর সংখ্যা সর্বাধিক। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কাহালু উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিবার পরিকল্পনা অফিসার।
কাহালুর সচেতন মহলের মতে, অত্র উপজেলায় করোনা রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধির প্রধান কারণ মানুষের মাঝে সচেতনতার অভাব। সরকারের দেওয়া স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন, সামাজিক দূরত্ব না মানার ফলেই আক্রান্তের সংখ্যা ব্যপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়াও স্টেশন, হাট-বাজার, চা স্টল সহ বিভিন্ন জায়গায় মাস্ক ছাড়ায় অবাধে ঘুরতে দেখা গিয়েছে অধিকাংশ মানুষকেই। বিশেষ করে যুবকদের চেয়ে বয়োজোষ্ঠদের মাঝেই মাস্ক পরিধানের সবচেয়ে বেশী অনিহা দেখা গিয়েছে।
কাহালুতে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে উপজেলা প্রশাসনের তৎপরতা বেশ লক্ষণীয়। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে কাহালুতে হাট-বাজার সরিয়ে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে স্কুল মাঠে অস্থায়ী বাজার বসানোর পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন করে কেউ বাহিরে অযথা ঘোরা ফেরা করলে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা করতেও দেখা গিয়েছে।
এ সম্পর্কে কাহালু উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোঃ যাকারিয়া রানা বলেন, আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে সমন্বয় করে কাহালুর বিভিন্ন স্থানে গিয়ে মানুষের মাঝে সচেতনা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করেছি। এবং যাদের মাঝে উপসর্গ দেখা দিয়েছে তাদের বাসাতে গিয়ে সেম্পল সংগ্রহ করেছি।
এছাড়াও কাহালু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা রোগীদের জন্য করোনা ওয়ার্ড ও আইসোলেশনের ব্যবস্থা হয়েছে। এখানে যদি কোনো রোগীর অবস্থা অবনতি হতে দেখা দেয় তখন বগুড়া মোহাম্মাদ হালি হাসপাতালের বিশেষায়িত করোনা হাসপাতালে পাঠানো হয় বলে জানিয়েছে এই কর্মকর্তা।
এবারের কুরবানিকে ঘিরে বিভন্ন স্থানের পশুর হাটগুলো থেকে করোনা ভাইরাস ছড়ানোর প্রভাব ইতিমধ্যেই লক্ষ করা যাচ্ছে। এ অবস্থায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চললে পরবর্তী সময়ে আক্রান্তের সংখ্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা করছে অভিজ্ঞজনরা।