জামালপুরের ইসলামপুর রেলস্টেনে আন্তঃ নগর ট্রেনের টিকিট বিক্রি হচ্ছে কলোবাজারে। প্রকাশ্যে আন্তঃ নগর তিস্তা এক্সপ্রেস ও ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট কালোবাজারীদের হাতে পাওয়া যাচ্ছে। একটি টিকেটের মূল্য ২২৫ টাকা হলেও সেই টিকেট এখন কালো বাজারীদের কাছ থেকে ১২শ থেকে ১৫শত টাকায় ক্রয় করতে হচ্ছে রেল যাত্রীদের। ঈদ পরবর্তি উপায়ন্তর না থাকায় যাত্রীরা চড়া দামে এসব টিকিট কিনতে বাধ্য হচ্ছে।
ইসলামপুর বাজার স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সিমিত পরিসরে ট্রেন চলাচলের সিদ্ধান্ত গ্রহন করে সরকার। তারই প্রেক্ষিতে ঢাকাণ্ডদেওয়ানগঞ্জ ও দেওয়ানগঞ্জ-ঢাকা রেল পথে দু’টি আন্তঃ নগর ট্রেন চালু রাখা হয়েছে। ইসলামপুর বাজার স্টেশনে আন্তঃ নগর তিস্তা এক্সপ্রেস ট্রেনের ৪৯ টি আসনের মধ্যে শোভন চেয়ার ৩০টি প্রতিটি টিকিটের মূল্যে ২২৫ টাকা, এসি চেয়ার ১৫ টি প্রতিটি টিকিটের মূল্যে ৪২৬ টাকা এবং ৪ টি কেবিন রয়েছে যার প্রতিটির মূল্যে ৫১২ টাকা ও ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস ট্রেনের আসন রয়েছে শোভন ৬০ টি প্রতিটির মূল্যে ১৮৫ টাকা ও শোভন চেয়ার রয়েছে ৭ টি যার প্রতিটি মূল্যে ২২৫ টাকা। এসব রেলের টিকিট অনলাইনে অপেন হওয়ার সাথে সাথেই টিকিট কালোবাজারিরা প্রতিদিন মোবাইল এপস এর মাধ্যমে অনলাইনে টিকিট কেটে নিচ্ছে। পরবর্তীতে রেলের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজসে টিকিট পৌছে যাচ্ছে কালোবাজারীদের হাতে। এত করে টিকিটের মুল্যের চেয়ে ৩ থেকে ৫গুন বেশী অতিরিক্ত দামে টিকিট বিক্রি করছে। গত শুক্রবার দুপুরে ইসলামপুর বাজার রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে জানা যায়, গন্তব্যের উদ্দেশে প্লাটফর্মে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছেন হাজারও যাত্রী। অধিকাংশ যাত্রী বাধ্য হয়ে কালো বাজারীদের কাছ থেকে চড়া দামে ট্রেনের টিকিট কিনেছেন।
ইসলামপুর পৌর শহরের মোশারফগঞ্জ এলাকার বাবুল মিয়া নামে এক গার্মেন্টস কর্মী বলেন, আমি ২২৫ টাকার একটা টিকেট কিনেছি ১২শত টাকায়। চাকরী বাঁচানোর তাগিদে আমাকে যেতেই হবে। তাই বাধ্য হয়ে ১২শ টাকায় টিকিট কিনছি আমি। একই দিনে গুঠাইল গ্রামের শাহজাহান মিয়া এবং দুইজন মহিলা গার্মেন্টস কর্মী আনেছা ও শিল্পি বেগম বলেন,“ সব টিকিট কালোবাজারীরা অনলাইনে কিনে রাখে। আমরা কিনার সুযোগ পাইনা। আমাদের ঈদের ছুটি শেষ তাই চাকরী বাঁচাতে ঢাকায় যেতেই হবে। বাধ্য হয়ে ২২৫ টাকার টিকিট ১২শ টাকায় কিনলাম। পচাবাহলা এলাকার মোয়াজ্জেম হোসেন নামে এক রিকসা চালক বলেন,“অনলাইন কি আমি বুঝিনা, এখানে আসার পরে এক টিকিটের দাম কেউ ১২শ টাকা চায় আবার কেউ ১৫শ টাকা চায়। আমার এত টাকা দিয়ে টিকিট কেনার মতো সাধ্য নেই, তাই আমি ঢাকা যাওয়া বাতিল করে বাড়িতে ফিরে গেলাম।
এ ব্যাপারে ইসলামপুর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. মিজানুর রহমান বলেন, “ট্রেনের টিকিট তো অনলাইনে বিক্রি হয় তাই আমাদের এখন কিছুই করার নেই। যদি কোন টিকিট কালোবাজারী প্লাটফর্মে এসে টিকিট বিক্রি করে তা’হলে আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দিবো বলে জানান।
এ ব্যাপারে ইসলামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, “টিকিট এখন অনলাইনে বিক্রি করা হয় আমাদের কিছু করার নেই। এর প্রতিকার সমন্ধে অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোন কালোবাজারী ট্রেনের টিকিট বিক্রি করলে আমরা মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব বলে জানান।