নেত্রকোনার দুর্গাপুরে ছাত্রলীগ কর্মীকে ছাত্রদল বানিয়ে অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে ঐ ছাত্রলীগ কর্মী ও ভুক্তভোগী পরিবার। ১৪ আগস্ট শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে দুর্গাপুর প্রেসক্লাব সভাকক্ষে এই সংবাদ সম্মেলন করেন উপজেলার ধানশিরা গ্রামের রুহুল আমিনের পুত্র মোঃ কাইয়ুম আহমেদ(১৭)।
এ সময় তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত ১১ আগস্ট বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে “যুবলীগ কর্মীকে মারধরের ঘটনায় দুর্গাপুর থানার ওসি ক্লোজড” এই শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদে আমাকে ছাত্রদল কর্মী হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। এছাড়াও ওই সংবাদগুলোতে আমার পিতার নাম ও ঠিকানাও ভুল ভাবে প্রকাশিত করা হয়েছে। আমার বাবা আওয়ামী লীগের একজন নিঃস্বার্থ কর্মী। দীর্ঘদিন ধরে আমি নিজেও আওয়ামী লীগের পরিবারের সন্তান হয়ে বিভিন্ন সভা-সমাবেশ ও ছাত্রলীগের সকল অনুষ্ঠান ও কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করে আসছি।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো জানান, গত ১০ আগস্ট সন্ধ্যায় দুর্গাপুর বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে পৌরসভাস্থ কাচারীমোড় থেকে আলম তালুকদার, পিতা-মৃত আলাল তালুকদার, সাং- গুজিরকোনা সহ তারা ৫/৬ জন মিলে আমাকে মারধর শুরু করে। একসময় আমার সাথে থাকা মোহাম্মদ জিএম মিয়া ও মোহাম্মদ মাহবুব মিয়া কোনরকমে নিজেদের জীবন বাঁচিয়ে পালিয়ে যায়। পরে আলম তালুকদার আমার হাত-মুখ বেঁধে আমাকে অপহরণ করে মেছুয়াবাজারস্থ ইয়াকুব তালুকদারের বাসায় নিয়ে যায়।
উল্লেখ্য যে, আমাকে নিয়ে যাওয়ার সময় ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে আলম তালুকদার পাকা সড়কের মাঝে পড়েগিয়ে মাথায় আঘাত পায়।
বাসায় নিয়ে গিয়ে আমাকে বেদম মারপিট শুরু করে এবং দেশীয় অস্ত্রের ভয়-ভীতি দেখিয়ে মেরে ফেলার হুমকিও দেয় তারা। একসময় মোবাইল ফোনে আকাশ তালুকদার কে মারার জন্য আমি দুর্গাপুরে আসছি এমন মিথ্যা জবানবন্দি দিতে বলে আলম তালুকদার। কিন্তু আমি এই মিথ্যা জবানবন্দি দিতে রাজি না হলে পুনরায় কয়েকদফায় লাঠি-সোটা, বেল্ট, ¯ট্যাম্প, চেইন দিয়ে বেদম পিটিয়ে আমাকে আহত করে। এরপরও রাজি না হয় সোহাগ তালুকদার রামদা দিয়ে আমাকে আঘাত করতে আসলে তাদের সাথে থাকা একজন তাৎক্ষণিক আঘাতটি ফিরিয়ে ফেলায় অল্পের জন্য আমি প্রাণে বেঁচে যাই। তবে রামদার একটি আঘাত আমার বাম চোখের উপরের লাগলে আমি গুরুতর আহত হই।
এদিকে আমাকে ধরে নিয়ে যাওয়ার খবর পরিবারের লোকজন জানতে পেরে থানায় আসে। পরে পুলিশ ও পরিবারের লোকজন আমাকে ইয়াকুব তালুকদারের বাসা থেকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। থানায় আনার পর পুলিশ সদস্যরা আমার প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। পরে আমার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই ইয়াকুব তালুকদারের বাসা থেকে রামদা সহ চেইন ও লাঠিসোটা উদ্ধার করে পুলিশ।
তবে দুঃখের বিষয় এই ঘটনার আলোকেই বিভিন্ন অনলাইন ও পত্রপত্রিকায় আমাকে ছাত্র দল হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। আমি কিংবা আমার পরিবারের কোন সদস্য কোনদিন ছাত্রদল কিংবা বিএনপির রাজনীতির সাথে কোনভাবেই জড়িত ছিলনা বা নাই। কিন্তু পত্রপত্রিকায় এই অপপ্রচারে আমি এবং আমার পরিবার মর্মাহত। সেই সাথে ঐদিনের ঘটনার সাথে জড়িত সকলের সুষ্টু বিচার দাবি করেন তিনি। এ সময় তার সাথে ছিলেন মা হাফিজা খাতুন,নানী ফাতেমা বেগম ও ভাই সানি মিয়া।