করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় ‘গভীর কোমায়’ চলে গেছেন বলে তার চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। “সাবেক রাষ্ট্রপতির শারীরিক অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি। তিনি গভীর কোমায় আচ্ছন্ন। তবে শারীরিক অবস্থার অন্যান্য মাপকাঠি স্থিতিশীল অবস্থায় আছে। তাকে ভেন্টিলেশনেই রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছে দিল্লির আর্মি হসপিটাল রিসার্চ অ্যান্ড রেফারেল কর্তৃপক্ষ। আগের দিন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ‘প্রণবের অবস্থা সঙ্কটজনক’ জানানোর পর থেকে সাবেক এ রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে মৃত্যুর গুজব ছড়াতে শুরু করে বলে আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। এ নিয়ে প্রণবের পরিবারের সদস্য ও ঘনিষ্ঠরা বিরক্তিও প্রকাশ করেছেন। “আমার বাবা এখনও জীবিত। তার শরীরে রক্ত সঞ্চালন, রক্তচাপ স্থিতিশীল,” টুইটারে প্রণবের মৃত্যু নিয়ে ছড়িয়ে পড়া গুজবের প্রতিক্রিয়ায় বলেন ছেলে অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। প্রণব-কন্যা শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায় তার বাবাকে নিয়ে ছড়িয়ে পড়া ভুল খবর ও বিভিন্ন দুঃসংবাদকে উড়িয়ে দিয়ে কাউকে ফোন না করতেও অনুরোধ করেন। “হাসপাতাল থেকে যেন যোগাযোগ করতে পারে, সেই জন্য আমার ফোন ব্যস্ত না রাখাই বাঞ্ছনীয়,” বলেছেন তিনি। রোববার রাতে শৌচাগারে পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পান প্রণব। পরদিন সকাল থেকে তার স্নায়ুঘটিত সমস্যাও দেখা দেয়; বাম হাত নাড়াচাড়া করতে পারছিলেন না তিনি। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে দিল্লির আর্মি হসপিটাল রিসার্চ এ- রেফারেলে ভর্তি হন তিনি। এমআরআই স্ক্যানে মাথার ভিতরে জমাট বাঁধা রক্তের অস্তিত্ব ধরা পড়ে, যা আঘাতের ফলেই হয়েছে বলে মত চিকিৎসকদের। জরুরিভিত্তিতে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন তারা। অস্ত্রোপচারের প্রস্তুতি পর্বে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে গিয়েই তার কোভিড-১৯ ধরা পড়ে। তারপরও সোমবার রাতেই অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়। এরপর থেকেই ভেন্টিলেশনে আছেন ডায়াবেটিকসের রোগী প্রণব মুখোপাধ্যায়। তার পরিস্থিতির ওপর নজর রাখতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিয়ে একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করে রিসার্চ এ- রেফারেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।