পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়া উপজেলায় ১টি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ৫টি পরিবার কলাণ কেন্দ্র, ২৩টি কমিউনিটি ক্লিনিক নিয়ে চলছে উপজেলার স্বাস্থ্য সেবা। উপজেলার দেড় লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসা সেবার জন্য রয়েছে এ সরকারি হাসপাতাল যাহা চিকিৎসক সংকটের কবলে পড়েছে। চিকিৎসকগণ বদলি এবং ট্রেনিংসহ বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে একে একে যার যার সুবিধামত স্থানে চলে গেছেন। অপরদিকে একজন মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট (রেডিও) বিসিএস কোর্সে, একজন সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক প্রেষনে এবং আয়া একজন ডেপুটেশনে অন্যত্র রয়েছে। বর্তমানে উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ও একটি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রসহ এ হসপাতালে ১৫ জন চিকিৎসক এর পদ থাকলেও বর্তমানে স্বাস্থ্য কর্মকর্তাসহ মাত্র ৮ জন চিকিৎসক রয়েছেন। অত্র ভাণ্ডারিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পার্শবর্তী মঠবাড়ীয়া, পারঘাটা, কাঠালিয়া, কাউখালী ও রাজাপুর উপজেলার রোগীরা এসেও ভীড় জমায়। ফলে এ এলাকার হাজারো মানুষের চিকিৎসা সেবা ব্যহত হচ্ছে। তাছাড়া হাসপাতালের সম্মূখ থেকে হাসপাতাল গেট পর্যন্ত সামান্য দূরত্বের সড়কটির অবস্থা এতই নাজুক যে সার্বক্ষনিক পানি জমে থাকায় সড়কটি চলাচলের অযোগ্য হওয়ায় রোগীদেও চরম দূর্ভোগ পোহাতে হয়। তাছাড়া হাসপাতালের পরিবেশ নোংরা-অপরিচ্ছন্ন থাকার কারণে সাধারন রোগী সুস্থ্যতার পরিতর্তে আরো অসুস্থ হয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করেন।
এ হাসপাতালসহ ৫টি ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ও ১টি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র থাকলেও সেখানেও চিকিৎসক সংকট রয়েছে। হাসপাতালে জুনিয়র কনসালটেন্ট সার্জারী, জুনিয়র কনসালটেন্ট মেডিসিন, জুনিয়র কনসালটেন্ট গাইনি এ- অবস, জুনিয়র কনসালটেন্ট এ্যানেসথেসিয়া ও একজন মেডিকেল অফিসারসহ ৭ জন চিকিৎসকের পদ শূণ্য রয়েছে।
এছাড়া স্বাস্থ্য সহকারীর ৪০ টি পদের মধ্যে ৪টি পদ, তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী ৭৩টি পদের মধ্যে ১৩টি পদ এবং চতুর্থ শ্রেণীর ২০টি পদেও মধ্যে ০৭ টি পদ বর্তমানে শূন্য রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এসব পদ শুন্য থাকায় রোগীদের ভোগান্তিসহ চিকিৎসা সেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে বলে ভূক্তভোগী রোগীদের অভিযোগ।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা: মো. বেলাল হোসেন জানান, ভান্ডারিয়া উপজেলার রোগী ছাড়াও পার্শ¦বর্তী রাজাপুর, কাঠালিয়া, কাউখালী ও মঠবাড়ীয়ার অনেক রোগী এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসে সে কারণে রোগীর চাপ একটু বেশী। তিনি চিকিৎসক সংকটের কথা স্বীকার করে বলেন, কাগজ পত্রে ১৫ জন চিকিৎসক থাকলেও বাস্তবে রয়েছে মাত্র ৮ জন। এখনও ৩১ বেডের জনবল দিয়ে চলছে হাসপাতালটি কিন্তু সে হিসেবেও চিকিৎসক ১৩ জনের পদ থাকলেও বর্তমানে স্বাস্থ্য কর্মকর্তাসহ রয়েছে মাত্র ৭ জন।
সদ্য যোগদানকৃত উপজেলা স্বাস্থ্য ও প:প: কর্মকর্তা ডা:শেখ মো: কামাল হোসেন গতকাল রোববার জানান, ১৯৮১ সালে নির্মিত ৩১ শয্যার এ হাসপাতালটি ডাক্তার সংকট ছাড়াও নানা সমস্যায় জর্জরিত। ২০১১ সালে হাসপাতালটি ৩১শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত হয়। পরবর্তীতে ২০১৭ সালে ১১ফ্রেব্রুয়ারি তৎকালিন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মো: নাসিম ৫০শয্যা থেকে ১০০শয্যায় উন্নীত করার ঘোষনা দেন। বর্তমানে ভবন সংস্কার ও সম্প্রসারণ করা হলেও শুধু ফার্ণিচার ছাড়া কিছুই বরাদ্ধ দেয়া হয়নি বলেও তিনি জানান। বর্তমানে ১০০শয্যা তো দুরের কথা ৩১শয্যার জনবলেরও কোন সূযোগ সুবিধা নেই। আমি সহ মাত্র ৮জন চিকিৎসক রয়েছে। এ অল্প সংখ্যক চিকিৎসক দিয়ে রোগীদের চাপ কুলাতে হিমসিম খেতে হয়।