নিম্নমানের কাজের প্রতিবাদ করায় রাজশাহী গণপূর্ত কার্যালয়ে প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেনের (২৮) ওপর হামলা চালিয়ে আহত করেছেন ঠিকাদার এবং তার সহযোগী। এ সময় ওই প্রকৌশলীর কক্ষের ল্যাপটপ এবং প্রিন্টারসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হয়। সোমবার বেলা ১২টার দিকে গণপূর্ত বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে এ হামলা এবং ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পরে আহত প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেনকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে হামলাকারি লিটন এন্টারপ্রাইজের সত্ত্বাধিকারী রাজশাহী মহানগরীর সাধুর মোড় এলাকার বাসিন্দা শাহাবুল মঞ্জুর লিটন (৩১) ও তার ম্যানেজার মহানগরীর উপকণ্ঠ চক কাপাসিয়ার বাসিন্দা আতিকুর রহমানকে (৩২) গ্রেফতার করে। হামলার ঘটনায় গণপূর্ত কার্যালয়ের কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় উপবিভাগীয় প্রকৌশলী ইফতেখার আলম বাদী হয়ে মামলা করলে গ্রেফতারকৃত ওই দুইজনকে মামলায় আসামি দেখানো হয়েছে।
হামলার শিকার গণপূর্ত বিভাগ-২ কার্যালয়ে উপসহকারী প্রকৌশলী পদে কর্মরত দেলোয়ার হোসেন জানান, কোটি টাকা ব্যয়ে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলায় ভূমি অফিস নির্মাণ কাজ চলছে। রোববার বিকালে তিনি এ নির্মাণ কাজ পরিদর্শনে গিয়ে দেখেন নিম্নমানের ইটের খোয়া দিয়ে ঢালাই কাজ করা হচ্ছে। এ ছাড়া কাজের সিডিউলে চার ইঞ্চি ঢালাই দেয়ার বিষয়টি উল্লেখ থাকলেও দেয়া হচ্চিল আড়াই ইঞ্চি। এ সময় তিনি কাজটি বন্ধ ঘোষণা করে ঘটনাস্থল থেকে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেন।
এ ঘটনার জের ধরে ঠিকাদার লিটন এবং তার ম্যানেজার আতিক সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তার অফিস কক্ষে আসেন। এসয় লিটন ঘটনাস্থল থেকে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী সরিয়ে নিতে অস্বীকৃতি জানান। একপর্যায়ে লিটন এবং তার সহযোগী তার ওপর হামলা চালান। এ সময় লিটন কাঠের চেয়ার দিয়ে প্রকৌশলী দেলোয়ার হোসেনকে বেধড়ক পেটান। ফলে তার ডান চোখের উপরের অংশে আঘাত লেগে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে আঘাত রয়েছে। হামলার পর লিটন এবং তার সহযোগী আতিক ব্যাপক ভাঙচুর চািলান। তার কক্ষের চেয়ার, টেবিল, ল্যাপটপ ও প্রিন্টার ভেঙে ফেলেন।
এ বাপারে গণপূর্ত বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী ফেরদৌস শাহনেওয়াজ কান্তা জানান, ঠিাকাদার লিটন এবং তার সহযোগী আতিক প্রকৌশলী দেলোয়ারকে মারধর এবং তার কক্ষে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছেন। এ সময় পুলিশ এবং র্যাবসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। আমরা এ ঘটনার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।
এ ঘটনায় মহানগরীর রাজপাড়া থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ (ওসি) শাহাদাত হোসেন খান জানান, ঠিকাদার লিটন এবং তার সহযোগী আতিকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের প্রাথমিক জিঙ্গাসাবাদের পর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।