মধুমতি নদীর পানির কমতে শুরু হওয়ার সাথে সাথে ভাঙ্গনের মুখে পড়ে ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার কামারখালী ্ইউনিয়নের ফুলবাড়ী ও গন্ধখালী গ্রামের বসবাসরত ২৫টি পরিবারের জায়গা জমি এবং ঘরবাড়ী মধুমতি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই গ্রামের ভাঙ্গন কবলিত অসহায় পরিবারের মানুষ। ভাঙ্গন আতংকের মধ্যে বসবাস করছেন তারা।
নদী ভাঙ্গন এলাকায় গিয়ে দেখা যায় কিছু অসহায় গরীব লোক নদীর পানির সাথে সাথে সংগ্রাম করে নদীর কুলে বসবাস করছে। এই সকল পরিবার গরীব এদের দ্বিতীয় জায়গায় মাথা গোজার কোন প্রকার ঠিকানা নাই। এদের সরে যাওয়ার কোন বাড়তি কোন জমি নাই। প্রতিবছর নদীর পানি বৃদ্ধি ও কমায় যে ভাবে জমি ভেঙ্গে আসছে তাতে আগামী বছর স্থায়ী ব্লক ও জিও ব্যাগ দিয়ে নদী বাধলে হয়ত নদী ভাঙ্গন রোধ থেকে রেহাই পাওয় সম্ভব বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। তা না হলে ফুলবাড়ী ও গন্ধখালী গ্রামের ২৫টি পরিবারের জায়গা জমি ও ঘরবাড়ী নদী গর্ভে চলে যাবে।
ফুলবাড়ী গ্রামের মোঃ দেলোয়ার হোসেন বলেন-আমাদের নদীকুলের জমি প্রতি বছরে নদীর পানির করাল গ্রাসে ভেঙ্গে যাচ্ছে। এ ভাবে ভাঙ্গলে আমাদের আর কোন জমি থাকবে না। আর ঘরবাড়ীও থাকবে না। একই গ্রামের এস.এম দাউদ সর্দার বলেন নদীর পেটে চলে গেছে আমাদের প্রায় ১০একর জমি। আমরা নিঃস্ব হয়ে গেছি।আমাদের জমি সব নদীতে নিয়ে গেছে শুধু ভিটা পড়ে আছে। যা আছে তাও আস্তে আস্তে প্রতি বছর জমি নদী গভের্ বিলীন হয়ে যাচ্ছে। গন্ধখালী গ্রামের মোঃ মতিয়ার রহমান মোল্যা বলেন আমার আমি ছাড়া আর কোন লোক পরিবারে আয়ের লোক নাই। আমার বাড়ীর জমি প্রতি বছর ভেঙ্গে যাচ্ছে। এ বছর যেভাবে ভাঙ্গতে শুরু করেছে তাতে আমার এই জমিটুকু নদীতে চলে গেলে আর বাড়ী করার জায়গা থাকবে না। পরের জমিতে বসবাস করতে হবে। একই গ্রামের মোঃ রউফ মৃধা বলেন আমরা নদীর কুলে বসবাস করছি আমার এইটুকু বাড়ীর জমি নদীর পানির করাল গ্রাসে ভেঙ্গে গেলে আমার আর মাথা গুজার জায়গা থাকবে না।
এই দুই গ্রামের মোঃ দেলোয়ার সর্দার, মোঃ কামরুল বিশ্বাস, মোঃ রজব, মোঃ কাইউম আলী, এস.এম.দাউদ সর্দার, মোঃ উজ্জ্বল, মোঃ আলম, মোঃ সাহিদ সেখ, মোঃ রজব, ফজলু লস্কর, কওছার বিশ্বাস, মোঃ টুকু মোল্যা, টোকন মোল্য, মোঃ সবুর শেখ, মোঃ মোশারফ মৃধা, মোঃ হিমায়েত মৃধা, মোঃ সিরাজ মৃধা, মোঃ সাহাদত মৃধা, মোঃ সাইদুর রহমান, মোঃ রউফ মৃধা, মোঃ ফুরাদ মৃধা, মোঃ সিরাজ মৃধা, মোঃ আইউব আলী মোল্যা, মোঃ মতিয়ার রহমান মোল্যা এরা সবাই আতঙ্ক আর অসহায়ত্বের মধ্যে দিনযাপন করছেন পরিবার পরিজন নিয়ে।
নদী ভাঙ্গন সম্পর্কে ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ বলেন আমরা মধুমতি নদীতে কামারখালী হতে ভাটিয়াপাড়া পর্যন্ত স্থায়ী ভাবে নদীকে ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষার জন্য একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছি। এটা বাস্তবায়নই আমাদের লক্ষ্য।