জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার সুগন্ধা নদীর অব্যাহত ভাঙনে এবার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বরিশাল বিমানবন্দর। ইতোমধ্যে নদীভাঙনে ওই উপজেলার ক্ষুদ্রকাঠি গ্রামের ব্লক ও বেড়িবাঁধের প্রায় এক হাজার ফুট অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। দেবে গেছে ক্ষুদ্রকাঠি-দোয়ারিকা গ্রামের সংযোগ সড়কের প্রায় ৪০০ ফুট।
পাশাপাশি বরিশাল বিমানবন্দরের উত্তর প্রান্তের রানওয়ের বর্ধিতাংশের জমি তীব্র ভাঙনের মুখে পরেছে। বর্তমানে নদীর ভাঙন পয়েন্ট থেকে এ জমির দূরত্ব ৩০০ ফুটেরও কম। অথচ চলতি বর্ষা মৌসুমের শুরুতেও ওই দূরত্ব ছিল প্রায় ১ হাজার ফুটের বেশি। তাই জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন প্রতিরোধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে বিপর্যয়ের মুখে পরবে হাজার কোটি টাকার বরিশাল বিমানবন্দর ও প্রস্তাবিত নতুন বিমানঘাঁটি।
বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক রথীন্দ্রনাথ চৌধুরী বলেন, রানওয়ের উত্তর প্রান্তের বর্ধিতাংশের কাছে সুগন্ধা নদীর অবস্থান। ভাঙন আগ্রাসী রূপ ধারণ করলে বরিশাল বিমানবন্দরের জন্য সেটা বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। তাই নদীভাঙন প্রতিরোধে দ্রুত স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে জোর দাবি করেছেন।
সূত্রমতে, সুগন্ধার ভাঙনে সর্বশেষ গত ১৭ আগস্ট রাতে গৃহহীন হয়েছেন হাজী আলতাফ হোসেন আকন নামের এক ক্ষুদ্র চাকরিজীবী। তার বসতবাড়ির ৩২ শতক জমি রাতের মধ্যে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে তিনি পরিবার পরিজন নিয়ে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, দেশের উত্তরাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি কমতে শুরু করায় সেই পানি দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন নদী হয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত হচ্ছে। নদীর সেই ঢলে বিপৎসীমার ওপরে উঠেছে নদীর পানি। আর তাতেই ভাঙন শুরু হয়েছে সুগন্ধা পাড়ে। ইতোমধ্যে ভাঙনে গৃহহীন হয়েছেন ক্ষুদ্রকাঠি গ্রামের ২৩টি পরিবার। ব্লকবাঁধ ভেঙে ক্ষুদ্রকাঠি-দোয়ারিকা সড়কের ৪০০ ফুটের বেশি অংশ নদীবক্ষে হারিয়ে গেছে। ভাঙনের মুখে রয়েছে ক্ষুদ্রকাঠি গ্রামের আরও প্রায় শতাধিক পরিবারসহ উত্তর ক্ষুদ্রকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আল-কারিম কেরাতুল কোরআন মাদরাসা, রাশেদ খান মেনন পাঠাগার, বকুলতলা বাজার ও ময়দান জামে মসজিদ, বেপারী বাড়ি জামে মসজিদ ও মুন্সিবাড়ী জামে মসজিদসহ ১৪টি স্থাপনা।
রহমতপুর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য সুলতান মোল্লা জানান, কয়েক বছর আগে বিমানবন্দরের জমি রক্ষায় কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে নদীতীরে ব্লকবাঁধ নির্মাণ করা হলেও ওই বাঁধের প্রায় ৮০ শতাংশই এখন নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। ফলে ক্ষুদ্রকাঠি-দোয়ারিকা সড়কটিও দ্রুত ভেঙে গিয়ে বিছিন্ন হয়ে পরেছে যোগাযোগ ব্যবস্থা।
বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আমিনুল ইসলাম বলেন, নদীভাঙনে বিলীন হওয়া বসতবাড়ি এবং ভূমির তথ্যসহ বিস্তারিত প্রতিবেদন দিতে ইউনিয়ন পরিষদ ও ভূমি অফিসের কর্মকর্তাদের বলা হয়েছে। পাশাপাশি জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন প্রতিরোধে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুরোধ করা হয়েছে।