দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহত চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে ব্যবহারযোগ্য পানির সংকট চলছে। যা সরবরাহ করা হচ্ছে তা ময়লা এবং ঘোলা পানি বলে অভিযোগ করেন রোগী ও তাদের স্বজনরা। এ কারণে রোগী ও তাদের স্বজনদের পাশাপাশি হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীরাও ভোগান্তিতে পরেছেন।
রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, পানি না থাকায় থালাবাসন, কাপড় ধোয়া, গোসল ও টয়লেটে সমস্যায় পরতে হচ্ছে তাদের। বিকল্প হিসেবে বাধ্য হয়ে বাহিরের টিউবওয়েল থেকে বা বোতলজাত পানি কিনে তারা সাময়িক সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করছেন।
সূত্রমতে, ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল দক্ষিণাঞ্চলের কোটি মানুষের চিকিৎসা সেবার ভরসাস্থল। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের আগে এ হাসপাতালে গড়ে প্রতিদিন ভর্তি থাকতেন প্রায় দুই হাজারেরও অধিক রোগী। করোনার প্রাদুর্ভাবের শুরুতে রোগী কিছুটা কমলেও এখন আবার বাড়তে শুরু করেছে।
সবশেষ বুধবার সকালের হিসেব অনুযায়ী, হাসপাতালে ১ হাজার ৩৮৬ জন রোগী ভর্তি ছিলেন। আর এসব রোগীর সাথে দুই থেকে চারজন করে স্বজন রয়েছেন। এ ছাড়া প্রতি শিফটে হাসপাতালে প্রায় পাঁচশ’ চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারী কাজ করেন। অথচ রোগী, স্বজন ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নিরবচ্ছিন্ন ব্যবহারযোগ্য পানি সরবরাহ করতে পারছে না কর্তৃপক্ষ।
রোগীর স্বজনরা জানান, কিছু পানি সরবরাহ করা হলেও তা ময়লা এবং ঘোলা হওয়ায় ব্যবহার অনুপযোগী। তারা আরও জানান, টয়লেট, বাথরুমে পানি ব্যবহার করতে না পেরে তাদের বেকায়দায় পরতে হচ্ছে। এ কারণে টয়লেট-বাথরুম থেকে ওয়ার্ডে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। রোগীদের কাপড় ধোয়া নিয়েও তারা সমস্যায় পরেছেন। চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীরাও পানির সংকটে চরম বেকায়দায় রয়েছেন।
এ ব্যাপারে শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ মোঃ বাকির হোসেন জানান, হাসপাতালের অবকাঠামো ও পানি ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব গণপূর্ত বিভাগের। এ বিষয়ে দ্রুত যথাযথ ব্যবস্থা নিতে তাদের বলা হয়েছে। গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জেরাল্ড অলিভার গুডা বলেন, ৬২ বছর আগে স্থাপিত পুরনো দু’টি টিউবওয়েল দিয়ে হাসপাতালে পানি সরবরাহ করা হয়। একটি টিউবওয়েলে কিছুদিন ধরে সমস্যা হচ্ছে। সেটি সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। একইসাথে নতুন টিউবওয়েল স্থাপনের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। বরাদ্দ বা এর প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেলে নতুন টিউবওয়েল স্থাপনের মাধ্যমে হাসপাতালে পানির সংকট সমাধান করা যাবে।