বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ রংপুর মহানগর কমিটি নিয়ে দুইটি গ্রুপ মুখোমুখি অবস্থান করায় রংপুরে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। রংপুর মহানগর কমিটির নেতৃবৃন্দের অভিযোগ একটি মহল ষড়যন্ত্র করে কেন্দ্রীয় কমিটিকে ভূল বুঝিয়ে ঢাকা থেকে একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে নিয়ে এসেছে।
বুধবার দুপুরে রংপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সন্মেলনে নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করে বলেন, পূজা উদযাপন পরিষদ রংপুর মহানগর কমিটি সুশৃঙ্খল ভাবে তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে আসছে।
কিন্ত এই কমিটিকে কোন প্রকার চিঠি, নোটিশ না দিয়ে, বর্তমান কমিটি বিলুপ্ত না করে গঠনতন্ত্র বর্হিভূত ভাবে ভবতোষ সরকার বাচ্চুকে আহ্বায়ক ও প্রশান্ত কুমার রায়কে সদস্য সচীব করে ৪১ সদস্যের একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে যা সম্পূর্ণ বেআইনী। এই কমিটি গঠন করায় রংপুরে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
সংবাদ সন্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ধনজিত ঘোষ তাপস বলেন, মহানগর পুজা উদযাপনের যে ৪১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে তার বেশির ভাগ সদস্যই বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছেন।
সংবাদ সন্মেলনে পূজা উদযাপন পরিষদ রংপুর মহানগর কমিটি নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করে বলেন, যে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে তার প্রধান পৃষ্টপোষক বাংলাদেশ পুজা উদযাপন পরিষদ রংপুর জেলা কমিটির সভাপতি অজয় প্রসাদ বাবন। এই অজয় প্রসাদ বাবনের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। নগরীর প্রানকেন্দ্রে বাড়ি দখল, রাজ রাজেশ্বরী দেবোত্তর এস্টেটের টাকা আত্মসাত করায় দুনীতির মামলা, রংপুর করুনাময়ী কালীবাড়ি মন্দিরের উন্নয়নের জন্য ভারতীয় হাইকমিশনের দেওয়া প্রায় ৪৪ লাখ টাকার মধ্যে বেশীর ভাগ অর্থই আত্মসাত করেছেন। কারণ হিসেবে আরও জানানো হয়,মন্দিরের উন্নয়নের সময় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষজনের কাছ থেকে টাইলস সহ অর্থ আদায় করেছিলেন। এ ছাড়া তিনি শ্রী শ্রী করুনাময়ী কালীবাড়ির সাধারন সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় রয়েছেন। এই মন্দিরের তিনি আয়-ব্যয়ের হিসাবও মন্দির কমিটির কাছে প্রদান করেন না বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়।
সংবাদ সন্মেলনে আরও বলা হয় অজয় প্রসাদ বাবন নিজেকে বাচাতে কেন্দ্রীয় কমিটিকে ভুল বুঝিয়ে মহানগরের এই আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে নিয়ে এসেছেন। সংবাদ সম্মেলন থেকে অবিলম্বে এই কমিটি বাতিল করা না হলে আন্দোলনের হুমকি দেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ রংপুর মহানগর কমিটি নেতৃবৃন্দ। তারা সাংবাদিক সম্মেলনে আরও জানান,কেন্দ্র থেকে প্রেরিত এই আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব অদ্যাবধি কোন সভা সমাবেশ করতে পারেনি। তাদেরকে রংপুর মহানগরের কোথাও কোন সভা সমাবেশ করতে দেয়া হবে না বলে সংবাদ সম্মেলন জানান হয়। এদিকে, আহ্বায়ক কমিটিকে প্রতিহত করার ঘোষনা দেয়ায় রংপুরের হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষজনের উদ্বেগ উৎকণ্ঠার সৃষ্টি হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, পুজা উদযাপন পরিষদ রংপুর মহানগর কমিটির সভাপতি সুব্রত সরকার মুকুল, সাধারন সম্পাদক ধনজিত ঘোষ তাপস,সিনিয়র সহ সভাপতি লক্ষিন চন্দ্র দাস, সহ সভাপতি সমর মহšত, যুগ্ম সম্পাদক অলক নাথ, উৎপল কুমার ভৌমিক, গৌতম মহন্ত, সমরেশ দাস সাগর প্রমুখ। এ ছাড়া সংবাদ সম্মেলনে পুজা উদযাপন পরিষদের রংপুর নগরীর বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড কমিটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, সংবাদ সম্মেলনে আনীত অভিযোগের ব্যাপারে অজয় প্রসাদ বাবনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি টাকা কিংবা চাউল আত্মসাত করি নাই।