পাটের মণপ্রতি মূল্য নূ্যূনতম তিন হাজার টাকা নির্ধারণ ও রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো বেসরকারিকরণের সিদ্ধান্ত বাতিল, কৃষিভিত্তিক শিল্প আধুনিকায়ন ও জাতীয়করণসহ ৭ দফা দাবিতে যশোর প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান ও সমাবেশ করেছে কৃষক সংগ্রাম সমিতি।
বাংলাদেশ কৃষক সংগ্রাম সমিতির যশোর জেলা কমিটির উদ্যোগে দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত কর্মসূচিটি পালিত হয়।
জেলা সহ-সভাপতি সোহরাব উদ্দিন মাস্টারের সভাপতিত্বে এ সময় বক্তব্য রাখেন কৃষক সংগ্রাম সমিতির জেলা সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক সমীরণ বিশ্বাস, ছাত্রনেতা মধুমঙ্গল বিশ্বাস প্রমুখ। সমাবেশ পরিচালনা করেন জেলা যুগ্ম-সম্পাদক কামরুল হক লিকু।
নেতৃবৃন্দ বলেন, বর্তমানে দেশে পাটচাষির সংখ্যা প্রায় ৩৫ লাখ। জিডিপিতে পাটের অবদান ০.২৫ শতাংশ এবং কৃষি জিডিপিতে ১.৩ শতাংশ। মোট শ্রমশক্তির প্রায় ১২ শতাংশ নিয়োজিত রয়েছে পাট উৎপাদনের কাজে। পাট শিল্পে জড়িত ১ লাখ ৬২ হাজার শ্রমিক। এর মধ্যে সরকারি সংস্থা বিজেএমসি ১৫ শতাংশ এবং বেসরকারি সংস্থা বিজেএসএ ও বিজেএমইএ মিলে ৮৫ শতাংশ শ্রমিকের কর্মসংস্থান করছে। মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৩ শতাংশ উপার্জিত হয় পাট ও পাটপণ্য রপ্তানি থেকে। তৈরি পোশাক শিল্পের পর এটি এখন দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানি খাত। বর্তমানে পাটের বাজার সম্প্রসারিত হচ্ছে পৃথিবীর আরো অনেক দেশে। আন্তর্জাতিক বাজারে পাটের চাহিদা ও মূল্য বৃদ্ধির উজ্জ্বল সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। তা ছাড়া অভ্যন্তরীণ বাজারেও পাটের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এজন্য পাটকলগুলোর আধুনিকায়ন দরকার। শ্রমিকদেরও দক্ষতা বাড়ানো দরকার। সরকারি পাটকলগুলো বন্ধের প্রক্রিয়া চলাকালে কাঁচা পাট উঠতে শুরু করেছে বাজারে। এখন পাট কাটা, জাগ দেওয়া, আঁশ ছাড়ানো, শুকানো এবং পাট বিপণনের সময়। শুরুতে বাজারে মণপ্রতি পাটের দর ছিল এক হাজার ৮০০ থেকে দুই হাজার ১০০ টাকা। এখন তা নেমে এসেছে এক হাজার ৩০০ থেকে এক হাজার ৮০০ টাকায়। অথচ এবার পাটের উৎপাদন খরচ অঞ্চল ভেদে মণপ্রতি দুই হাজার থেকে দুই হাজার ৫০০ টাকা হয়ে থাকে। বিজেএমসি বাজারে না এলে এবং একচেটিয়াভাবে ব্যক্তি খাতের মিলগুলো পাট কিনলে কৃষক ন্যায্যমূল্য নাও পেতে পারেন।
নেতারা বলেন, করোনা মহামারী পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার ‘নো টেস্ট নো পজেটিভ’ কৌশল নিয়েছে বলে ব্যাপকভাবে সমালোচনা হচ্ছে। বিপর্যস্ত অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সঙ্গে করোনা পরিস্থিতিতে সরকারের স্বাস্থ্য খাতসহ অন্যান্য খাতে দুর্নীতি, অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, সমন্বয়হীনতায় জনস্বার্থ মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ছে। সম্প্রতি কক্সবাজারে সাবেক একজন সেনা কর্মকর্তা পুলিশ চেকপোস্টে বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকারে দেশে সেনাবাহিনী ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে দূরত্ব ও নানা তথ্য প্রচারিত হচ্ছে; যা উদ্বেগজনক।
তারা দুযোর্গ-মহামারী-দুর্নীতি-ক্ষুধা-দুর্ভিক্ষ-বিচারবহির্ভূত হত্যা মোকাবেলায় সর্বস্তরের জনগণকে সোচ্চার এবং খাদ্য, চিকিৎসা ও পূর্ণাঙ্গ রেশনিংয়ের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।