রাজশাহী নগরীর লক্ষ্মীপুর মোড় চিকিৎসাপাড়া নামেই পরিচিত। এ এলাকাজুড়ে আছে বিপুল পরিমাণ ওষুধের দোকান। যদিও হালনাগাদ ড্রাগ লাইসেন্সই ছাড়া প্রায় এক হাজারেরও বেশি ফার্মেসি চলছে। আর এদের মধ্যে তালিকাভুক্ত দুই শতাধিক ফার্মেসির কোনো হদিসই মিলছে না। যাদের কাছে ডাকযোগে রেজিস্ট্রি চিঠি পাঠিয়েছিল ওধুধ প্রশাসন অধিদফতর। কিন্তু চিঠিগুলো ফেরত এসেছে। ফলে এসব ফার্মেসির লাইন্সেস বাতিলের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে লাইসেন্স নবায়ন করতে এক সপ্তাহ সময় বেঁধে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
ওষুধ প্রশাসনের তথ্য মতে, রাজশাহীতে মেডিসিন শপ বা ফার্মেসির সংখ্যা তিন হাজারেরও বেশি। এর মধ্যে দুই হাজারের কিছু বেশি ফার্মেসি ড্রাগ লাইসেন্স নবায়ন করেছে। কিন্তু বাকিগুলোর হালনাগাদ লাইসেন্স নেই। এ ছাড়া নবায়ন না করলে লাইসেন্স বাতিলের চিঠি পাঠিয়েও অন্তত দুইশ’ ফার্মেসির কোনো ঠিকানাই পাওয়া যায়নি।
ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর জানিয়েছে, প্রচলিত বিধি না মানায় ইতিমধ্যেই ৪০টি ফার্মেসির স্থায়ীভাবে ড্রাগ লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। আর ২৭টি সাময়িকভাবে বাতিল করা হয়েছে। এছাড়াও ১৯টি ফার্মেসির লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে।
এসব তথ্য নিশ্চিত করে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের রাজশাহী বিভাগীয় উপ-পরিচালক মির্জা মো. আনোয়ারুল বাসেদ জানান, লাইসেন্স নবায়ণের জন্য তারা ফার্মেসিগুলোর নামে চিঠি ইস্যু করেছিলেন। কিন্তু দুই শতাধিক চিঠি ফেরত এসেছে। এসব ফার্মেসির কোনো ঠিকানা পাওয়া যাচ্ছে না। যে কারণে আরেকদফা এসব ফার্মেসিগুলোর নামে চিঠি ইস্যু করা হবে। এরপরও কোনো সাড়া পাওয়া না গেলে লাইসেন্স বাতিলের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
এদিকে, লাইসেন্সবিহীন ফার্মেসি ও বিভিন্ন মেডিসিন শপে অবৈধ ওষুধ বিক্রির বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। প্রায় প্রতিদিনই নগরী ও জেলার বিভিন্ন এলাকায় এ অভিযান যৌথভাবে পরিচালনা করছে জেলা প্রশাসন ও ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর।
এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিফাত আরা জানান, সুযোগ সন্ধানি কিছু ব্যবসায়ী করোনাকে পুঁজি করে নকল স্যানিটাইজার, লেবেলবিহীন ওষুধ বিক্রি করছে। এটি যাতে করতে না পারে সেজন্য ভ্রাম্যমাণ আদালতের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। তবে নিজেদের নানা সীমাবদ্ধতার কথা স্বীকার করে প্রশাসনের এ অভিযানকে স্বাগত জানিয়েছেন কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির নেতারা।
সংগঠনটির কেন্দ্রীয় পরিচালক ফয়সল কবির চৌধুরী জানান, তারা সবসময় বলে আসছেন, তাদের কোনো সদস্য যাতে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি না করে। তারপরেও যদি কেউ করে থাকে, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে তারা প্রশাসনকে উৎসাহিত করছেন।