চরম পানি সঙ্কটে পড়ছে কাপ্তাইয়ে অবস্থিত কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র। প্রতিদিন বৃহত্তর কাপ্তাই হ্রদ থেকে পানি কমছে। আর পানি কমার সাথে সাথে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমানও কমে যাচ্ছে দিন দিন।
কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কন্ট্রোল রুম সুত্রে জানা গেছে, কাপ্তাই হ্রদে পানি রুলকার্ভের (পানির পরিমাপ) চেয়ে বর্তমানে ২ ফুট মীন সী লেভেলেরও (এমএসএল) কম রয়েছে। এই অবস্থায়ও প্রতিনিয়ত বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা হচ্ছে। এর ফলে প্রতিদিন কাপ্তাই হ্রদের পানি কমে যাচ্ছে। বৃষ্টির ভরা মৌসুমে কাপ্তাই হ্রদে পানির এরকম সঙ্কট সচরাচর দেখা যায়নি বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান।
এ ব্যাপারে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী এ টি এম আব্দুজ্জাহের কাপ্তাই লেকে পানি কম থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় বৃষ্টিপাত হচ্ছেনা। বৃষ্টি না হওয়ায় জলাধারে পানি জমছেনা বরং জলাধারে যে পানি জমা আছে তা খরচ করে বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা হচ্ছে।
কাপ্তাই হ্রদে পানি আশঙ্কাজনক হারে কমে যাচ্ছে স্বীকার করে প্রকৌশলী এ টিএম আব্দুজ্জাহের আরো বলেন, কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে মোট ৫টি জেনারেটর রয়েছে। এই ৫টি জেনারেটর থেকে প্রতিদিন ২৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। কিন্তু হ্রদে পানি কম থাকায় এতদিন ৪ নম্বর জেনারেটরটি বন্ধ রেখে অন্যান্য জেনারেটর থেকে সীমিত পরিমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছিলো। কিন্তু দিন দিন পরিস্থিতি আরো খারাপ হবার কারণে শনিবার (২২ আগষ্ট) রাত থেকে কেন্দ্রের ৩ নম্বর জেনারেটরটিও বন্ধ রাখা হয়। বর্তমানে ৫টির মধ্যে ৩টি জেনারেটর থেকে ১১৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। উৎপাদিত বিদ্যুতের পুরোটাই জাতীয় গ্রীডে সঞ্চালন করা হচ্ছে।
কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি সুত্র জানায়, বাংলাদেশে একমাত্র কাপ্তাই থেকে অত্যন্ত কম খরচে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়ে থাকে। পানির সাহায্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন করায় কাপ্তাইয়ে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ পড়ে মাত্র ২৫ পয়সা। কিন্তু বর্তমানে কাপ্তাই হ্রদে পরিমাণ মতো পানি না থাকায় বিদ্যুৎ উৎপাদন অর্ধেকে নেমে এসেছে। কিছু দিন যদি বৃষ্টি না হয় ভবিষ্যতে উৎপাদন আরো কমিয়ে আনতে হতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।