দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে পৃথক পৃথক কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বুধবার ফুলবাড়ী কয়লাখনি বিরোধী ট্র্যাজেডি দিবস পালন করা হয়েছে।
দিবসটি পালনের জন্য ফুলবাড়ী উপজেলা শাখা তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির উদ্যোগে সকাল সাড়ে ১০টায় স্থানীয় নিমতলা মোড় থেকে তেল গ্যাস জাতীয় কমিটির ফুলবাড়ী শাখার উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিল শেষে ২০০৬ সালের ২৬ আগস্ট আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সদস্যদের গুলিতে নিহত আমিন, সালেকীন ও তরিকুলের শহীদ বেদীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়।
শেষে স্মৃতিস্তম্ভ চত্বরে ফুলবাড়ী শাখা তেল গ্যাস জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক সৈয়দ সাইফুল ইসলাম জুয়েলের সভাপতিত্বে কয়লাখনি বিরোধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে মুঠোফোনে বক্তব্য রাখেন তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।
এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, ফুলবাড়ী শাখা তেল গ্যাস জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব জয় প্রকাশ গুপ্ত, সদস্য হামিদুল হক, জারজিস আহম্মেদ, আবদুল কাইয়ুম, প্রভাষক জাকির হোসেন, এসএম নূরুজ্জামান জামান, শফিকুল ইসলাম শিকদার, সঞ্জিত প্রসাদ জিতু, কমল চক্রবর্তী, হিমেল মন্ডল, নাজার আহম্মেদ, আমিনুল হক, আদিবাসী নেতা রবীন্দ্র নাথ সরেন, মো. আলাউদ্দিন প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে এলাকাবাসীর প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের মুখে এশিয়া এনার্জি ফুলবাড়ীর কয়লা সম্পদ লুটপাট করতে পারছে না। খনি বিরোধী আন্দোলনকে নস্যাৎ করার জন্য আন্দোলনকারী নেতাকর্মীদের নামে দুইটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে হয়রানী করছে এশিয়া এনার্জি। তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৬ দফা চুক্তিকে সমর্থন দিলেও ক্ষমতায় গিয়ে সেই চুক্তি বাস্তবায়নে কোন ভূমিকা নিচ্ছেন না। এশিয়া এনার্জির দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারসহ ৬দফা সমঝোতা চুক্তির পূর্ণবাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়।
এদিকে সম্মিলিত পেশাজীবী সংগঠনের উদ্যোগে ফুলবাড়ী পৌর মেয়র ও সম্মিলিত পেশাজীবী সংগঠনের সমন্বয়ক মুরতুজা সরকার মানিকের নেতৃত্বে সকালে পৌর শহরে শোক মিছিল বের করা হয়। মিছিল শেষে শহীদ বেদীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়।
এরপর স্মৃতিস্তম্ভ চত্বরে নেতাকর্মীদের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার নিয়ে শপথবাক্য পাঠ করান ফুলবাড়ী পৌরসভার মেয়র ও সম্মিলিত পেশাজীবী সংগঠনের সমন্বয়ক মুরতুজা সরকার মানিক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সদস্য সচিব সহকারী অধ্যাপক শেখ সাবীর আলী, মানিক মন্ডল, হিমেল সরকার, মমিনুল ইসলাম সাগর, ঈশ্বর চন্দ্র প্রমুখ। শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ (ওসি) মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, দিবসকে কেন্দ্র করে আইন শৃঙ্খলা স্বাভাবিক ও শান্তিপূর্ণ রাখতে তাঁর (ওসি’র) নেতৃত্বে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে দেড় প্লাটুন পুলিশ মোতায়েনসহ সার্বক্ষণিকভাবে টহল দেয়।