পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া) আসনের উপ নির্বাচন আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর। আর এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে আগ্রহ প্রকাশ করে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন ২৭ জন। এর মধ্যে মাঠে এগিয়ে রয়েছেন ৬জন প্রার্থী। তারা হচ্ছেন জিজিএফআই এর সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব:) এস এম নজরুল ইসলাম রবি, পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রেজাউর রহিম লাল, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আইনজীবী রবিউল আলম বুদু, আটঘরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র শহিদুল ইসলাম রতন ও প্রয়াত সাবেক ভূমিমন্ত্রীর স্ত্রী কামরুন্নাহার শরীফ ও ঈশ্বরদী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নূরুজ্জামান বিশ্বাস।
এদিকে শূন্য হওয়া এ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীর ছড়াছড়ি দেখা দিয়েছে। আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে আগ্রহ প্রকাশ করে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন ২৭ জন। এর মধ্যে সাবেক সাংসদের পরিবার থেকেই ছয়জন প্রয়াত মন্ত্রীর স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে, মেয়ের স্বামী, সাংসদের ভগ্নিপতি ও খালাতো ভাই সাবেক ভূমি মন্ত্রীর এপিএস মনোনয়ন ফরম তুলে দলের কাছে দাখিল করেছে। প্রয়াত এই পরিবারে এত সংখ্যক সদস্যদের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করা নিয়ে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, পাবনা-৪ আসনের উপনির্বাচন নিয়ে নানা হিসাব নিকাশ করছে আওয়ামীলীগ।
সুত্র জানায়, দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ করা ২৭ জনের মধ্যে অনেকেই তাদের রাজনৈতিক বাড়তি পরিচয় দেওয়ায় কেন্দ্রীয় নেতাদের মন জয় করার চেষ্টা চালিয়েছেন। যা বেশ কয়েকজনের এমন ভূয়া তথ্য দিয়ে মন জয় করার চেষ্টা চালিয়েছেন।
তথ্যমতে প্রয়াত শামসুর রহমান শরীফ ডিলুর পরিবারের ছয়জন সদস্য নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছে। অতীতে পরিবারের মধ্যে রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ নিয়েও ঝামেলা হয়েছিল। এমনকি সংঘর্ষ ও একপর্যায়ে মামলা হয়েছে। যার ফলে উপজেলা ও পৌর আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের মধ্যে বিশৃংখল অবস্থা দেখা দেয়। শামসুর রাহমান শরিফ ডিলু প্রায় বাইশ বছর এক দুইজন কে নিয়ে এককভাবে আধিপত্য বিস্তার করেছেন।
পাবনা-৪ আসনের প্রার্থীর বিষয়ে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলেন, অনেকেই নির্বাচন করতে আগ্রহী, দলীয় মনোনয়নের জন্য তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের ভেতর থেকে দলের সভাপতি শেখ হাসিনা যাকে যোগ্য বিবেচনা করবেন, তিনিই মনোনয়ন পাবেন।
একাধিক আ.লীগের প্রবীণ নেতাকর্মী, বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ এবং তরুণ ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, একটি উপনির্বাচনে প্রার্থিতা নিয়ে মা-ছেলের দ্বন্দ্ব। মা-মেয়ের যুদ্ধ। ভাই-বোনের মনোমালিন্য। প্রয়াত ভাইয়ের পরিবারের সঙ্গে খালাতো ভাইয়ের রেষারেষি রয়েছে।
এদিকে নৌকার প্রার্থী হতে স্থানীয় মাঠে সক্রিয় রয়েছেন তারা হলেন, ডিজিএফআইয়ের সাবেক প্রধান অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল এস এম নজরুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল রহিম লাল, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আইনজীবী রবিউল আলম বুদু, আটঘরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র শহিদুল ইসলাম রতন, প্রয়াত সাবেক ভূমিমন্ত্রীর স্ত্র কামরুন্নাহার শরীফ, সাবেক ভূমিমন্ত্রী পুত্র গালিবুর রহমান শরীফ, বাংলাদেশ আওয়ামী স্চ্ছোসেবকলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক ছাত্র নেতা রফিকুল ইসলাম লিটন, পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের উপ দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ আলী জিরু, বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক সাংসদ মঞ্জুর রহমান বিশ্বাস, সাবেক সাংসদ পাঞ্জাব আলী বিশ্বাস, ঈশ্বরদী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নূরুজ্জামান বিশ্বাস, মৎস্যজীবী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল আলীম, পৌর আওয়ামী লীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক মিজানুর রহমান স্বপন, উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নায়েব আলী বিশ্বাস, বঙ্গবন্ধু পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা জালাল উদ্দিন তুহিন, বিএমএ নেতা ডা: শাহেদ ইমরান, সাবেক পিপি আক্তারুজ্জামান মুক্তা, ড. মুসলিমা জাহান ময়না প্রমুখ।
উল্লেখ, পাবনা-৪ আসনের সাংসদ ও সাবেক ভূমিমন্ত্রী, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামসুর রহমান শরীফের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২৬ সেপ্টেম্বর। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা থাকায় এ মাসে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়েছে।