রাজশাহীর তানোর উপজেলার মুন্ডমালা পৌর এলাকার পাঁচন্দর দাখিল মাদরাসায় মোটা অংকের অর্থের বিনীময়ে গোপনে ১জন আয়া ও ১জন নৈশপ্রহরী নিয়োগ দেয়ার চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় মাদ্রাসার শিক্ষক/শিক্ষিকা, শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসীর মধ্যে চরম অসন্তোষ ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এলাকাবাসী ও মাদ্রাসা সুত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন থেকে পাঁচন্দর দাখিল মাদ্রসায় ১জন আয়া ও ১জন নৈশপ্রহরীর পদ ২টি শুন্য রয়েছে। মাদ্রাসা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বুড়ান উদ্দিন ও মাদ্রাসার সুপার আবুল কালাম আজাদ মোটা অংকের অর্থের বিনীময়ে তাদের পছন্দের ব্যাক্তিদের নিয়োগ দেয়ার চেষ্টা চালিয়ে আসছিলেন।
মাদ্রাসা ম্যানেজিং কমিটির সভা না করেই এবং করোনার প্রভাবে ঢাকার পত্রিকা এলাকায় না আসা এবং সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার সুযোগে গোপনে চলতি বছরের গত জুন মাসে একবার ও গত ১৩ই জুলাই পুনরায় ঢাকা থেকে প্রকাশিত জামায়াত পন্থী একটি দৈনিক পত্রিকায় একজন আয়া ও একজন নৈশপ্রহরী নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন।
মাদ্রাসা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও মাদ্রাসার সুপার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হওয়ার বিষয়টি মাদ্রাসার শিক্ষক/শিক্ষিকা, কর্মচারী শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসীর কাছে গোপন রেখে ২টি পদে তাদের পছন্দের ২জন প্রার্থীসহ পকসি হিসেবে ১০জনের আবেদন জমা নিয়ে নিয়োগ প্রদানের তারিখ নির্ধারনের চেষ্টা করা অবস্থায় বিষয়টি সকলের কাছে প্রকাশ পায়।
এনিয়ে মাদ্রাসার শিক্ষক/শিক্ষিকা, শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এ সময় শিক্ষক প্রতিনিধি ম্যানেজিং কমিটিতে থাকা তিনজন সদস্যসহ অভিভাবক সদস্য ও চাকুরী প্রত্যশীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন।
পাঁচন্দর দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক প্রতিনিধি সহকারী শিক্ষক কামাল উদ্দিন বলেন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির প্রকাশ করাসহ নিয়োগ বিষয়ে ম্যানের্জি কমিটির কোন সদস্যকেই জানানো হয়নি। তিনি বলেন মিটিং না করেই রেজুলেশন লিখে অতি গোপনে সভাপতি ও সুপার রহস্যজনক কারণে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ দেয়ার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
মাদ্রাসা ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য মামুন বলেন, আমরা শুধু নাম মাত্রই কমিটিতে আছি, মাদ্রাসার আয় ব্যায়ের কোন হিসাব নিয়ে কোন সভা করা হয়না। নিয়োগের বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, সভাপতি ও সুপার জোগসাজসে মাদ্রাসার প্রায় ১৭ বিঘা ফসলি জমি নিজেদের আয়ত্বে রেখেছেন যার কোন আয় ব্যায়ের হিসাব দেয়া হয়না।
পাঁচন্দর দাখিল মাদ্রাসার অফিস সহকারী হারুর অর রশিদ বলেন, মাদ্রাসার সকল রেজুলেশন তিনিই লিখে থাকেন কিন্তু নিয়োগের বিষয়ে কোন রেজুলেশন তাকে দিয়ে লিখানো হয়নি। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পাঁচন্দর গ্রামের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত হওয়া এই মাদ্রাসাটির ওই পদ ২টিতে নিয়োগের জন্য অনেকেই অপেক্ষায় রয়েছেন। কিন্তু গ্রামের কেউই বুঝতে ও জানতেও পারেননি এ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের কথা।
এনিয়ে পাঁচন্দর দাখিল মাদ্রাসার সুপার আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমি প্রতিষ্ঠানের প্রধান হলেও আমার কোন ক্ষমতা নেই, আমি শুধু হুকুমের গোলাম জানিয়ে তিনি সভাপতি নির্দেশ মত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছেন বলে জানান।
করোনা প্রভাবের কারণে নিয়োগ বিষয়ে ম্যানেজিং কমিটির কোন সভা (মিটিং) করা হয়নি স্বীকার করে তিনি বলেন, (মির্টিং) করা সম্ভব হয়নি জানিয়ে তিনি রেজুলেশন করে কমিটির বেশির ভাগ সদস্য’র স্বাক্ষর নেয়ার কথা স্বীকার করেন।
এব্যাপারে পাঁচন্দর দাখিল মাদ্রাসার সভাপতি বুড়ান উদ্দিন বলেন, আমি অসুস্থ্য, বাড়িতে আছি, জানিয়ে তিনি গোপনে নিয়োগের বিষয়টি এড়িয়ে যান এবং সাক্ষাতে কথা বলার কথা জানিয়ে ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন।