চলতি বোরো মৌসুমে খাদ্য অধিদপ্তর দিনাজপুরের পার্বতীপুরে আগামী ৩১ আগষ্টের মধ্যে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ৪ হাজার ১৯১ মেট্রিক টন ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করে। কিন্তু ঘোষিত সময়সীমার প্রায় সাড়ে তিন মাস পেরিয়ে গেলেও লক্ষ্যমাত্রার এক-তৃতীয়াংশ ধানও সংগ্রহ করতে পারেনি উপজেলা খাদ্য অধিদপ্তর।
বৃহস্পতিবার (২৭ আগষ্ট) পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার মাত্র এক চর্তুথাংশ পরিমান (১ হাজার ৩৮৬ মেট্রিক টন) ধান সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে। খোলা বাজার ও সরকারি ক্রয় মূল্যের মধ্যে পার্থক্য কম থাকায় এবং সরকারি খাদ্য গুদামে ধান বিক্রয়ে নানা হয়রানির কথা বিবেচনা করে কৃষকরা সরকারি ধান ক্রয় কার্যক্রমে আগ্রহ দেখায়নি বলে সংশ্লিষ্টদের অভিমত।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এ বছর পার্বতীপুর উপজেলায় ২৮ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়। তবে, লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে অর্জিত হয়েছে ২৮ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো চাষ। অনুকূল আবহাওয়া থাকায় এ বছর পার্বতীপুরে ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছে। খোলা বাজারে প্রতি কেজি ধান ২৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে, সরকারি ক্রয় কেন্দ্রে বিক্রি হচ্ছে ২৬ টাকা কেজি দরে। কিন্তু সেখানে ধুলিকনা, অপবস্তুু ঝাড়াই-বাছাই ও শতক করা ১৪ ভাগ আর্দ্রতার ধান সরবরাহে কৃষকদের ঝক্কি-ঝামেলা পোহাতে হয়।
এ ব্যাপারে পার্বতীপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ হাফিজুল ইসলাম প্রামানিক বলেন, বর্তমানে খোলা-বাজারে ধানের দর বেশি। বাজার ও সরকারি ক্রয় কেন্দ্রের ধানের দামের মধ্যে খুব একটা পার্থক্য নাই। তাছাড়াও সরকারি গুদামে ধান বিক্রি করতে গেলে নানা ঝক্কি-ঝামেলা পোহাতে হয়। এ কারণে পার্বতীপুরে খাদ্য অধিদপ্তর লক্ষ্যমাত্রার শতকরা ৫০ ভাগও পুরন করতে পারে নাই।
উপজেলার মোমিনপুর ইউনিয়নের ভবেরবাজার এলাকার কৃষক প্রদীপ কুমার (৪২) বলেন, গত কয়েক বছর ধরে ধান চাষ করে কৃষকরা শুধু লোকসানই গুনছে। সে সময় ১২-১৩ টাকা কেজি দরের বেশি দামে ধান বেচতে পারি নাই। এবার ভালো দাম পাচ্ছি। হয়রানি এড়াতে দামে দুই এক টাকা কম হলেও কেউ খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি করতে চায় না।
পার্বতীপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ দেলোয়ার হোসেন সরকার জানান, এ বছর পার্বতীপুরে ৪ হাজার ১৯১ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়। পার্বতীপুরে ৪টি গুদামে ১৭ মে থেকে ধান ক্রয় অভিযান শুরু করা হয়। লটারীর মাধ্যমে নির্বাচিত কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয়ের জন্য ফোনে কৃষকদের সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তা সত্বেও কৃষকরা খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি করতে আগ্রহী হচ্ছেন না। এজন্য এখন পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হয়নি।