খুলনা বিভাগীয় কমিশানর মু, আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, আম্ফানের তান্ডবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়ী বাঁধ ভেঙ্গে এবং পরবর্তীতে অস্বাভাবিক জোয়ারের পানির চাপে বেড়ী বাঁধ ও রিং বাঁধ ভেঙ্গে আশাশুনির ৪৮ গ্রামের ৮০ সহস্রাধিক মানুষ প্লাবিত হয়েছে। ৩ ইউনিয়নের অসংখ্য মৎস্য ঘের, শত শত ঘরবাড়ি বিধ্বস্থ ও প্লাবিত হয়েছে। প্লাবিত মানুষ আশ্রয়ণ কেন্দ্রে, রাস্তার উপরে ও বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়ে কষ্টকর জীবন যাপন করছে। এসব মানুষের দুর্গতি লাঘবে সরকার নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী সরবরাহ করা হচ্ছে। সুপেয় পানি সংকট, চিকিৎসা সেবাসহ সকল প্রকার সহযোগিতা করা হচ্ছে এবং যতক্ষণ প্রয়োজন করা হবে। সরকার বিষয়টিকে গুরুত্বসহকারে নিয়েছে। আপনাদের চাহিদার কথা বিবেচনা করে সরকার সেনা বাহিনীকে দিয়ে বাঁধ রক্ষার উদ্যোগ নিয়েছে। মূল বাঁধ বা ক্লোজারের কাজ এখনই সম্ভব হচ্ছেনা, নভেম্বর মাসের দিকে এ কাজ শুরু করা হবে। কিন্তু এভাবে তো প্লাবিতদের রেখে দেওয়া যাবেনা। তাই এখই রিং বাঁধের মাধ্যমে এলাকার বৃহত্তর জনগোষ্টিকে রক্ষার কাজ করা হবে। দু’ একের মধ্যে এ কাজ শুরু করা হবে। কেবল বাঁধ নির্মান নয়, সাথে সাথে কৃষি, মৎস্য’র ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকার প্রনোদনার ব্যবস্থা করছে। ঘরবাড়ি নির্মানে সহায়তার বিষয়টিও সরকার ভাবছে। বিভাগীয় কমিশনার বিশ্ব পরিস্থিতির কথা বর্ণনা করে বলেন, করোনা বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছে। বিশ্বব্যাপী করোনার প্রভাবে সবকিছু ওলটপালট হয়ে গেছে। সরকারকে একলক্ষ কোটি টাকার বাজেট করতে হচ্ছে। এ ‘বালা’ থেকে রক্ষায় সরকার কাজ করছে। সাথে সাথে প্লাবনের বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে। আমরা স্থানীয় জনগণের এবং দুর্যোগের সাথে সহাবস্থানে থেকে এলাকাকে টিকিয়ে রাখার কাজে অভিজ্ঞ জন প্রতিনিধিদের পরামশর্^ ও শক্তি কাজে লাগাতে চাই। তাই আপনাদের শক্তি ও পরামশর্^কে মাথায় রেখে আমরা বাঁধ রক্ষার কাজ এগিয়ে নিতে চাই। শুক্রবার দুপুর ৩ টার দিকে উপজেলার শ্রীউলা ইউনিয়নের হাজরাখালীতে ভেড়ী বাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত মানুষদের উদ্দেশ্যে তিনি উপর্যুক্ত কথা বলেন।
শ্যামনগর থেকে নদী পথে শ্রীউলায় এসে হাজরাখালী ভাঙ্গন কবলতি বাঁধের উপর প্লাবিত মানুষ ও সাংবাদিকদের সাথে সংক্ষিপ্ত আলোচনা শেষে বিভাগীয় কমিশনার আনোয়ার হোসেন হাওলাদার ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন। এ সময় সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল, পানি উন্নয়ন বোর্ড সাতক্ষীরার নির্বাহী প্রকৌশলী সুধাংশু কুমার সরকার, শ্যামনগর উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউল হক দোলন, আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর আলিফ রেজা, আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ গোলাম কবির, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান অসীম বরণ চক্রবর্তী, পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসও আবুল হোসেন, পিআইও সোহাগ খান, শ্রীউলা ইউপি চেয়ারম্যান আবু হেনা সাকিল, আনুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর আলম লিটন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এরআগে বিভাগীয় কমিশনার প্রতাপনগর ইউনিয়নের হরিষখালী, চাকলা ও শ্যামনগর উপজেলার বিভিন্ন ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন।