রাতের আঁধারে সড়কের দুই পাশের ২৮টি গাছ কর্তন। সকালে স্থানীয় ও যুবলীগ নেতা-কর্মীদের বাাঁধায় আরও ১১৪টি গাছ কর্তন পন্ড হয়েছে। রোববার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে কর্তনকৃত গাছগুলো গননা শেষে থানায় প্রেরণ করেন ভূমি উপ-সহকারি কর্মকর্তা (নায়েব) মো. আল আমিন। স্থানীয়রা জানায় কর্তনকৃত গাছগুলোর বাজার মূল্য হবে লক্ষাধিক টাকার উপরে হবে। নেত্রকোণার কলমাকান্দা উপজেলার লেংগুরা ইউনিয়নের লেংগুরা-সাত শহীদ মাজার সড়কের ফুলবাড়িয়া বাজার ও মোমেনের টিলা সংলগ্ন এলাকায় গাছগুলো কর্তন করা হয়েছে। গাছ কর্তনকৃতদের দাবী গাছগুলো তাদের জায়গায়। আর স্থানীয়রা জানায় এগুলো সরকারি সড়কের গাছ। এদিকে মৌখিক অভিযোগ পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সোহেল রানা রোববার বিকালে ঘটনা স্থল পরিদর্শন করে ইউনিয়নের নায়েবকে গাছগুলো গননা করে মামলা দেয়ার নির্দেশ প্রদান করেন। এলাকাসী ও যুবলীগ নেতা-কর্মীদের সূত্রে জানা যায়, সুমন মাস্টার, উমেদ আলী, আজিজ, মন্নাফ সহ পল্লী বিদ্যুৎের সংযোগ চালুর কথা বলে গত শনিবার রাত থেকে গাছ কাটা শুরু করে। রাতেই তারা ২৮টি গাছ কেটে ফেলে। কিন্তু নির্মানকৃত পল্লী বিদ্যুৎের লাইনটি কর্তনকৃত গাছ থেকে প্রায় ২৫-৩০ দূরত্বে রয়েছে। সকালে বিষয়টি নজরে এলে স্থানীয়রা সহ যুবলীগের নেতা-কর্মীরা গাছ কর্তনে বাঁধা দেয় এবং ইউএনওকে বিষয়টি অবগত করে। লেংগুরা ইউনিয়রের যুবলীগের সভাপতি মো. রুস্তম আলী সহ একাধিক নেতাকর্মী স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সাইদুর রহমানের সহায়তায় এ গাছগুলো কর্তন করছিল। ইউনিয়ন যুবলীগের নেতাকর্মীরা তাতে বাঁধা দেয় ও উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করে। অভিযুক্ত সুমন মাষ্টার স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, পল্লী বিদ্যুৎের এজিএম মো. আনিসুল হক বিদ্যুৎের সংযোগ চালু জন্য গাছ কাঁটার কথা বলেছিলেন। রাস্তার দুই পাশে আমাদের জায়গায় ৯৮টি গাছ রয়েছে। আরেক অভিযুক্ত উমেদ আলী বলেন, আমার রেকর্ডের জায়গা থেকেই গাছ কাটতে ছিলাম। কিন্তু ইউপি যুবলীগের সভাপতি সহ এলাকাবাসী তাতে বাঁধা দেয়। রাতে আঁধারে গাছ কাঁটার বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি এড়িয়ে যান। লেংগুরা ইউপি’র চেয়ারম্যান মো. সাইদুর রহমান প্রতিনিধিকে জানান, কলমাকান্দা পল্লী বিদ্যূৎের এজিএম আমাকে ফোনে বলেছিল পল্লী বিদ্যূতের সংযোগ চালু করতে কিছু গাছ কাটা লাগবে। তখন বলেছি আমি এলাকার বাইরে তিনদিন ধরে ঢাকায় আছি। পরে এসে আপনাকে (এজিএম) সাথে নিয়ে ওই এলাকায় সরেজমিনে বিষয়টি দেখে নিয়মতান্ত্রিকভাবে গাছ কর্তনের উদ্যোগ নেয়া বলে জানিয়েছিলাম। কলমাকান্দার পল্লী বিদ্যুৎের এজিএম মো. আনিসুল হক এর সাথে কথা হলে তিনি প্রতিনিধিকে বলেন, সরকারি নিয়মঅনুযায়ী বিদ্যুৎ লাইন থেকে ১০ ফিট দূরত্বে যে গাছ ও ডালাপালা আছে সেগুলো কাঁটার কথা বলেছি। কিন্তু তারা যে গাছ কর্তন করেছে সেগুলোর কথা বলা হয়নি। যারা নিয়মের বাইরে গাছ কর্তন করেছেন দায় তাদের। লেংগুরা ইউনিয়নের ভূমি উপ-সহকারি কর্মকর্তা (নায়েব) মো. আল আমিন প্রতিনিধিকে বলেন, ইউএনও স্যারের নির্দেশে ২৭ টি গাছের ৪১ টি বিভিন্ন সাইজের ছোট-বড় টুকরো রোববার সন্ধ্যায় থানা হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। মামলা বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন যাচাই করে ভূমি ১নং খতিয়ান হলে আমি বাদী হয়ে মামলা দাযের করবো। যদি এলজিইডির সড়কের হয়ে থাকে তাহলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা আইনি পদক্ষেপ নিবেন বলে তিনি জানান। কলমাকান্দার ইউএনও সোহেল রানা প্রতিনিধিকে জানান, মৌখিত অভিযোগ ভিত্তিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে গাছ কাঁটার সত্যতা পাওয়ায় ভূমি উপ-সহকারি কর্মকর্তা (নায়েব) অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।