কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে বখাটেদের হামলায় কলেজ শিক্ষার্থী স্মৃতি আক্তার গুরুতর আহত হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা না করতে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল ও থানা পুলিশের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীর পরিবারকে মামলা না করতে নানাভাবে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে থানায় নিয়ে সাদা কাগজে আপস মিমাংসা স্বাক্ষর নিয়েছে বলে ভ’ক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন। এদিকে পুলিশ বলছে জোর করে স্বাক্ষর নেওয়া হয়নি। উভয় পক্ষ মিলিত হয়ে থানায় এসে আপস মিমাংসা করেছে।
কুলিয়ারচর পূর্ব গাইলকাটা গ্রামের দিন মজুর গোলাপ মিয়ার কন্যা ও স্থানীয় ডিগ্রি কলেজের ইন্টারমিডিয়েটের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী স্মৃতি আক্তার ( ১৮)।। গত ২৪ আগস্ট সোমবার বিকালে খালার বাড়ি মাসকান্দা গ্রাম থেকে মোটরসাইকেল যোগে নিজবাড়ি যাওয়ার পথে পিছন থেকে বখাটেরা মোটরসাইকেল নিয়ে তাদের পিছনে পিছনে ধাওয়া করে একপর্যায়ে স্মৃতি আক্তারের গলায় পেচানোঁ ওড়না ধরে টান দিয়ে মোটরসাইকেল থেকে ফেলে দেয়। মোটর সাইকেল থেকে পড়ে তার কোমরের পাজঁর, মুখ ও ডান পায়ের হাড় ভেঙে ৩ টুকরো হয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন প্রথমে তাকে কুলিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাতেই বাজিতপুর জহুরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। শনিবার রাতে হাসপাতালের অর্থপেডিক চিকিৎসকরা তার পায়ে অপরেশন করেছেন। তবে তার সুস্থ হতে ১ বছর সময় লাগতে পারে বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন।স্মৃতি আক্তারের স্বপ্ন ছিল পড়া-লেখা করে প্রতিষ্ঠিত হবে। অভাবের সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনবে। কিন্তু কে জানতো হঠাৎ একটি ঝড় এসে তার সেই স্বপ্ন তাসের ঘরের মতো ভেঙে দিবে। জীবনের গল্পটা অন্ধকারে ঢেকে দিবে। এমনই এক অমানিশার ঝড় তার বেচেঁ থাকার স্বপ্নগুলো এলামেলো করে দিলো বখাটেদের কারনে। পরিবারের দাবি বখাটেদের যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়।
এ বিষয়ে আহত স্মৃতিআক্তার ও তারবোন ইতি আক্তার জানান। গত ২৪ আগস্ট সোমবার বিকালে খালার বাড়ি মাসকান্দা গ্রাম থেকে মোটরসাইকেল যোগে নিজবাড়ি যাওয়ার পথে পিছন থেকে বখাটেরা মোটরসাইকেল নিয়ে তাদের পিছনে পিছনে ধাওয়া করে একপর্যায়ে স্মৃতি আক্তারের গলায় পেচানোঁ ওড়না ধরে টান দিয়ে মোটরসাইকেল থেকে ফেলে দেয়। মোটর সাইকেল থেকে পড়ে তার কোমরের পাজঁর, মুখ ও ডান পায়ের হাড় ভেঙে ৩ টুকরো হয়ে যায়। তারা এ ঘটনার জন্য দোষীদেও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিও দাবি জানান সরকারের কাছে।
এ বিষয়ে আহতের বাবা গোলাপ মিয়া জানান, তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। তার সহায় সম্বল বলতে কিছু নেই। তার মেয়ের স্বপ্ন ছিল পড়া-লেখা করে প্রতিষ্ঠিত হয়ে সংসারের হাল ধরবে। তিনি বখাটেদেও উপযুক্ত শাস্তিও দাবি করেন।
এ বিষয়ে আহতের ভগ্নিপতি সাইফুল ইসলাম জানান, ঘটনার পরদিন কুলিয়ারচর থানার উপপরিদর্শক রাকিব ও পালটিয়া গ্রামের রুবেলসহ অনেকেই তাকে মামলা না করার জন্য হুমকি-ধমকি দিয়ে থানায় নিয়ে আপস নামায় স্বাক্ষও করতে বাধ্য করেন। কিন্তু তখনো তিনি জানেননা যে তার শ্যালিকার পা ভেঙে ৩ টুকরো হয়ে গেছে। তিনি এ ঘটনার জন্য সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।
এ বিষয়ে বাজিতপুর জহুরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজের অর্থপেডিক সার্জন ডাঃ জাকির হোসন জানান, আঘাতে স্মৃতি আক্তারের ডান পাশের হাড় ৩ টুকরো হয়ে গেছে। এ ছাড়া তার সুখে ও কোমড়ে আঘাত লেগেছে। তার পায়ে অপারেশন করা হয়েছে। সুস্থ হয়ে দাড়াঁেতে ১ বছর সময় লাগতে পারে।
এ বিষয়ে কুলিয়ারচর থানার উপপরিদর্শক রাকিব জানান, ভিকটিমের পরিবারকে চাপ সৃষ্টি করা হয়নি। তারা তারা স্বেচ্ছায় থানায় এসে আপস নামায় স্বাক্ষর করেছেন।
এ বিষয়ে কুলিয়ারচর থানার ওসি এ কে সুলতান মাহমুদ জানান, এটি কোন ইভটিজিংয়ের ঘটনা নয়। এটি দূর্ঘটনা। আর ভিকটিমের পরিবারকে কোন চাপ দেওয়া হয়নি। তারা কোন মামলা করবেনা বিধায় স্বেচ্ছায় ২ পক্ষ থানায় এসে আপস মিমাংসায় স্বাক্ষর করেছে। কিন্তু এখন যদি মামলা করতে চাই তাহলে মামলা নেওয়া হবে।