আবু হানিফ নামের এক ব্যক্তর নিকট থেকে ২০০৩ সালে শ্যামনগর উপজেলা সদরের বাদঘাটা মৌজায় নিজ পুত্র আব্দুর রহিমের নামে ‘খ’ তফসীলভুক্ত ৩৩ শতক জমি ক্রয় করেন আমির আলী। জমি ক্রয়ের পরপরই দখল বুঝে নিয়ে সেখানে বসতবাড়ি নির্মানসহ গাছ-গাছালী লাগিয়ে বসবাস শুরু করেন উপজেলার কৈখালী গ্রাম থেকে আসা ঐ বৃদ্ধ। সরকারি ঘোষনা অনুযায়ী ‘খ’ তফসীলভুক্ত সম্পত্তি বিধায় সদর ইউনিয়নের তহশীলদারের কাছে একাধিকবার ধর্না দিয়ে তিনি দাবি জানান সরেজমিন তদন্তপুর্বক প্রতিবেদন দাখিলের।
একইভাবে উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিসে দৌড়ঝাঁপ করে সরকারের ‘ছাড়’ দেয়ার তালিকায় থাকা ‘খ’ তফসীলভুক্ত সম্পত্তিতে তার দখল থাকার বিষয়টি শুনানীকালে বার বার স্মরন করিয়েও দেন তিনি। উভয় প্রান্ত থেকে প্রতি বার আশ^াসও মিলেছিল সরেজমিন তদন্তপুর্বক ন্যায়-নায্যতা নিশ্চিতের।
তবে ‘ধারা’ সম্পন্ন হতেই স্পষ্ট হয় প্রতিশ্রুতির সাথে কার্যক্রমের বিস্তর পার্থক্য। ভোগ দখলে থ্কাা সত্ত্বেও একই জমি জনৈক রফিকুল ইসলাম ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে রেকর্ড দেন উপজেলা সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার নিহার কান্তি ঘোষ। প্রভাবিত হয়ে তৎকালীন তহশীলদার তপন কুমার দে প্রয়োজনীয় প্রেক্ষাপট তৈরী করে দেন রফিকুল ইসলামের পক্ষে। যার ফলে ভোগ দখলে না থাকা রফিকুল গং জমির রেকর্ড পাওয়ার ক্ষেত্রে তঞ্চকতার আশ্রয় নিলেও ‘প্রভাবিত’ হওয়া দুই সরকারি কর্মকর্তা বিষয়টি বেমালুম এড়িয়ে যায়। এ সুযোগে পুর্বেই সমুদয় সম্পত্তি বিক্রি করে দেয়া মৃত ব্যক্তির ওয়ারেশদের নিকট থেকে কোবলা সুত্রে প্রাপ্তির কাগজের উপর ভর করে মুল্যবান ঐ জমির রেকর্ড আদায় করে নেন রফিকুল ইসলাম। যার ফলে ভোগ দখলে থাকা ক্রয়কৃত সম্পত্তির হাল রেকর্ড থেকে বঞ্চিত হয়েছেন সত্তোরোর্ধ্ব বয়সী আমির আলী।
২০১৭ সালে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর থেকে ক্ষতিগ্রস্থ আমির আলী বিভিন্ন দপ্তরে দৌড়ঝাঁপ করেও কোন প্রতিকার পাননি –জানিয়ে বলেন, নায়েব আর সেটেলমেন্ট অফিসার রফিকুলের নিকট থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়ে আমাকে ক্ষতিগ্রস্থ করেছে। তার অভিযোগ জালিয়াতির ঘটনা জানাজানির পর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর দপ্তর থেকে গত ২৭ জুলাই ২০১৭ তারিখে রফিকুলের নামপত্তন বাতিল করা হয়। তবে সরকারি এসব দপ্তরের কতিপয় দুর্নীতিবাজ ব্যক্তির সহায়তায় ভুল কাগজের উপর ভিত্তি করে প্রাপ্ত রেকর্ড বহাল রাখার জন্য রফিকুল এখনও তোড়জোড় চালিয়ে যাচ্ছে।
আমির আলীর অভিযোগ আপলি স্তরে যাওয়ার শুরুতে তৎকালীন তহশীলদার অজ্ঞাত কারনে বার বার সময়ের আবেদন করে। এ সুযোগে আপিল অফিসার অবসরে যাওয়ায় তিনি (আমির আলী) হয়রানীর স্বীকার হচ্ছে। এদিকে রফিকুল স্থানীয় জনরোষ থেকে রক্ষা পেতে যোগাযোগ করে আপীল শুনানী শ্যামনগরের বাইরে নিয়ে গেছে বলেও জানান হয়রানীর শিকার বৃদ্ধ।
এবিষয়ে তৎকালীন সময়ে দায়িত্বে থাকা সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার নিহার কান্তি ঘোষ মুটোফোনে বলেন, আমি সরেজমিন তদন্তে যেতে পারিনি। যারা তদন্তে গিয়েছেল তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ঐ জমির রেকর্ড রফিকুলসহ অন্যদের নামে রেকর্ড দেয়া হয়। তদন্তে যাওয়া ব্যক্তিদের প্রতিবেদন ভুল ছিল বলে তিনি দাবি করেন। এবিষয়ে তহশীলদার তপন কুমার দে’র সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি অবসওে গেছেন বলে নিশ্চিত করা হয়।