জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ থানায় ৪জন সাংবাদিকসহ মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির প্রতিবাদে জামালপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ভূক্তভোগি পরিবার। গত শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জামালপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ঘন্টাব্যাপী সংবাদ সম্মেলন করে। ভুক্তভোগিদের অভিযোগ, বকসিগঞ্জ থানার এস আই শরীফ আহমেদ কর্তৃক মিথ্যা মামলা দিয়ে নানা ভাবে হয়রানির অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী আশি বৎসর উর্দ্ধ বয়োজ্যেষ্ঠ মো. তাজমল হোসেন। তিনি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বকশীগঞ্জের মেরুর চর ”হাছেন আলী উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী আমার নাতনি পড়া লেখা করে আসছিল। গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর আমার ছেলে ও ছেলের বউ বাড়িতে ছিল না। রাতে আমার নাতনী প্রকৃতির ডাকে ঘরের বাইরে যায়। এ সুযোগে চিনারচর গ্রামের কুদ্দুছের ছেলে মোস্তাইন বিল্লাহ রনি ঘরে ঢুকে চৌকির নিচে লুকিয়ে থাকে। প্রাকৃতিক ক্রিয়া সেরে আমার নাতনী ঘরে গিয়ে দরজা লাগিয়ে দিলে রনি আমার নাতনীকে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। নাতনীর চিৎকারে বাড়ির আশেপাশের লোকজন গিয়ে নাতনীকে লম্পট রনির হাত থেকে উদ্ধার করে।
পরে আসপাশের লোকজন রনিকে আটক করে তার পরিবারকে খবর দেয়। কিন্তু রনির পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ তাকে নিতে আসেনি। পরদিন রনির ভাই ফুরকান আলী (জজ মিয়া) থানা থেকে শরিফ দারোগাকে আমার বাড়িতে ডেকে আনেন। পরে শরিফ দারোগা সাহেব আমার কাছে কোন কিছু না শুনে আমাকে হাত ও পিঠমোড়া করে বেঁধে থানায় নিয়ে যায়। পরে এলাকার মেম্বার ছামিউল হক নেদা ও সাংবাদিক শাহীনের কারণে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে দারোগা আমাকে ছেড়ে দেয়। আমি আমার নাতনিকে জোর পুর্বক ধর্ষনের চেষ্টার অভিযোগে থানায় মামলা করতে গেলে শরিফ দারোগা ধর্ষক রনির পক্ষ নিয়ে আমাকে ধমকাধমকি করে এবং আমার নাতনীর স্বাক্ষর নিয়ে থানা থেকে তাড়িয়ে দেয়। পরে দারোগা সাহেব চক্রান্ত করে লম্পট রনির ভাইকে দিয়ে আমিসহ আমার ছেলে, ছেলের বউ, আমার বেয়াই এবং স্কুলের সভাপতি সাংবাদিক শাহীন আলআমীন(সাংবাদিক) এর নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে নানা ভাবে নানাভাবে হয়রানি ও নির্যাতন চালিয়ে আসছে। শরিফ দারোগার অত্যাচার ভয়ভীতি এবং লোক লজ্জার ভয়ে বর্তমানে আমার ছেলে-ছেলের বউ ও নাতনী এলাকা ছেড়ে ঢাকা চলে গেছে। বর্তমানে নাতনির পড়া লেখা বন্ধ রয়েছে। ওই সংবাদ সম্মেলনে অষ্টম শ্রেনী ছাত্রী ধর্ষণের অপচেষ্টা কারির পক্ষ নিয়ে পুলিশের এমন অপ-তৎপরতা ও অমানবিক আচরণের বর্ণনা করেছেন ছাত্রীর আশি বৎসর উর্দ্ধ বয়সী দাদা মো. তাজমল (৮০)। শুধু তাই নয়, এস আই শরীফ আহমেদ কর্তৃক বকশীবঞ্জের চার জন নিরীহ সাংবাদিকের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে নানা ভাবে হয়রানি ও নির্যাতন সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী ৪ সাংবাদিক তাদের নির্যাতনের কথা তোলে ধরে বক্তব্য রাখেন। ওই সংবাদ সম্মেলনে জামালপুরের বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্টনিক মিডিয়ায় কর্মরত সকল সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন। অবিলম্বে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ এস আই শরীফ আহম্মেদকে অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানান ভুক্তভোগিরা। এ বিষয়ে বকশীগঞ্জ থানার এসআই শরিফ আহম্মেদের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
উল্লেখ্য, বকশীগঞ্জ থানার এস আই শরীফ তিনি বিগত দিনে বিভিন্ন মামলার এজাহারে সাংবাদিকদের নাম না থাকলেও চার্জশীটে অর্ন্তভুক্ত করে মিথ্যা মামলা দিয়ে বকশীগঞ্জের ৪ জন সাংবাদিকে নির্যাতন মিথ্যা হয়রানী করে আসছেন। তারই প্রেক্ষিতে ওই সংবাদিকরা বাংলাদেশ পুলিশ প্রধান (আইজিপির) কাছে এই মর্মে একটি অভিযোগ প্রেরণ করেন। অভিযোগ প্রেরণের ১১ মাস পর বিষয়টি তদন্তের জন্য জামালপুর জেলা পুলিশ সুপারকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন পুলিশ হেড কোর্য়াটার। এ বিষয়ে গত ২৬ আগস্ট জামালপুর জেলা পুলিশ সুপার অফিস ভুক্তভোগিদের জবান বন্দি গ্রহন করা হয়েছে।