পর্যটকদের নৌ-ভ্রমণে মুখরিত হয়ে উঠছে পাবনার সুজানগরের ঐতিহ্যবাহী গাজনার বিল। প্রতিদিন দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতে না হতেই ভ্রমণ পিপাসু পর্যটকরা গাজনার বিলে এসে নৌ-ভ্রমণ করছেন।
বছর ঘুরে বর্ষার মৌসুম এলেই নতুন পানিতে গাজনার বিল থই থই করে। আর বিলে ওই পানি থাকে পৌষ মাস পর্যন্ত। বর্ষার শুরু থেকে পৌষ মাস পর্যন্ত দীর্ঘ এ সময় প্রায় অর্ধশত সবুজ শ্যামল গ্রাম বেষ্টিত বিশাল বিস্তৃত গাজনার বিল সত্যই অপরূপ সৌন্দর্যে পরিণত হয়। সেকারণে এ সময় হাজার হাজার নারী-পুরুষ পর্যটক ছুটে আসেন গাজনার বিলে নৌ- ভ্রমণে। আর পর্যটকদের নৌ-ভ্রমণের জন্য বিলের খয়রান ব্রিজ পয়েন্টে, চরবোয়ালিয়া পয়েন্টে এবং বোনকোলা ব্রিজ পয়েন্টে বাণিজ্যিকভাবে রাখা হয়েছে ইঞ্জিন চালিত বড় নৌকা ও ডেঙি নৌকা। তাছাড়া পর্যটকদের দৃষ্টি আকৃষ্ট করতে স্থানীয়ভাবে বিলের বোনকোলা ও খয়রান ব্রিজ পয়েন্টে রাখা হয় বিশাল বাইচ’র নৌকা। পর্যটকরা ওই সব বাইচ’র নৌকায়ও বিল ভ্রমণ করে থাকেন। তবে বাইচ’র নৌকায় সাধারণত স্থানীয় পর্যটকরা ভ্রমণ করেন। বিলপাড়ের উলাট গ্রামের নাসিম উদ্দিন মাস্টার জানান, প্রতিদিন কমবেশি পর্যটককে গাজনার বিলে নৌ-ভ্রমণ করতে দেখা যায়। তবে প্রতি শুক্রবার ও শনিবার পর্যটকদের নৌ-ভ্রমণে গাজনার বিল মুখরিত হয়ে উঠে। এদিন হাজার হাজার পর্যটক তাদের পরিবারপরিজন নিয়ে গাজনার বিলে নৌ-ভ্রমণ ও বনভোজন করে থাকনে। বিলপাড়ের বোনকোলা গ্রামের রইচ উদ্দিন বলেন দূরদূরান্তের পর্যটকদের পাশাপাশি স্থানীয় লোকজনও গাজনার বিলে নৌ-ভ্রমণ করে থাকেন। তারা বিকাল হলেই নিজস্ব নৌকা নিয়ে বিলে ঘুরতে বেড়িয়ে পড়েন। পর্যটকরা বিকেল থেকে সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত বিলের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত পর্যন্ত ঘুরে ঘুরে নৌ-ভ্রমণ করেন। বিলে নৌ-ভ্রমণে আসা পর্যটক সাংবাদিক আবুল কাশেম বলেন, বিলটি ঘিরে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা সম্ভব। তবে এজন্য প্রয়োজন সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় বিলে সারা বছর পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা করাসহ বিলের চারদিকে পরিকল্পিত পিকনিক স্পট এবং আবাসন সুবিধা গড়ে তোলা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রওশন আলী বলেন ইতঃপূর্বে পর্যটকদের সুবিধার্থে বিলপাড়ে বেঞ্চ এবং সৌর বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রয়োজন হলে ভবিষ্যতে আরও পর্যটন সুবিধা বৃদ্ধি করা হবে।