আগামী নভেম্বরে সম্ভাবনা আছে দেবহাটা উপজেলা পরিষদের উপ-নির্বাচনের। আর দিনদিন ক্রমেই এগিয়ে আসছে দেবহাটা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপ নির্বাচন। গত ৭ আগস্ট করোনা ভাইরাস সংক্রমনে দেবহাটা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবদুল গনি মৃত্যুবরন করায় শুন্য হয় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের পদটি। ফলে ওই পদটির আসন্ন উপ নির্বাচন ঘিরে বর্তমানে উপজেলাব্যাপী শুরু হয়েছে তুমুল আলোচনা। ইতোমধ্যেই উপজেলা চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের একাধিক হাফ ডজন নেতার নাম শোনা যাচ্ছে। তার মধ্যে ওই পদে নির্বাচনে লড়তে দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারন মানুষের সাথে মতবিনিময় ও প্রচার প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন সাবেক ছাত্র ও যুবনেতা আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের কাণ্ডারী বর্তমানে দেবহাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের কয়েকবারের নির্বাচিত সাধারন সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি। শুধু প্রচার প্রচারনা বা মতবিনিময় নয়, উপজেলা চেয়ারম্যান পদের প্রার্থী হিসেবে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার জন্যও নিয়মিত কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছেন মনিরুজ্জামান মনি। তবে মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীদের মধ্যে তৃনমূল নেতাকর্মী ও কাউন্সিলরদের আস্থা অর্জনের মাধ্যমে উপজেলাব্যাপী আলোচনায় রয়েছেন টানা তিনবারের নির্বাচিত উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি। ২০০৩, ২০১২ ও সর্বশেষ ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে পরপর তিন মেয়াদে কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হয়ে সাধারন সম্পাদক হিসেবে টানা ১৭ বছর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিত্ব করছেন মনিরুজ্জামান মনি। জেলাব্যাপী রাজনৈতিক মহলে একজন সৎ, দক্ষ ও তুখোড় রাজনীতিবীদ হিসেবেও বেশ সুখ্যাতি রয়েছে তার। মনিরুজ্জামান মনির রাজনৈতিক পরিচিতি থেকে জানা গেছে, ১৯৮৪ সালে সাতক্ষীরা কলেজে মনিরুজ্জামান মনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগের কমিটিতে ১৯৮৫ সাল থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত কার্যকরী কমিটির সদস্য পদে ছিলেন। পরে ১৯৮৮ সালে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের ২য় বর্ষের সাধারন সম্পাদক ছিলেন। ১৯৮৯ সাল থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের মিলনায়তন সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন। সে সময়ে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে বিশেষ ভুমিকা রাখার পাশাপাশি নিজ উপজেলা দেবহাটাতে ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে ছাত্রলীগ গঠনেও তিনি গুরুত্বপূর্ন অবদান রাখেন। ১৯৯৫ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত টানা ৭ বছর দেবহাটা উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৩ সালের ২৩ ডিসেম্বর উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটে প্রথমবারের মতো উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন মনি। দীর্ঘ ৯ বছর দায়িত্ব পালনের পর ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর আবারো কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটে দ্বিতীয় মেয়াদে সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন তিনি। ২০১৩-১৪ সালে জামায়াত-বিএনপির সহিংসতাকালীন সময়েও রাজপথে থেকে নেতাকর্মীদের অনুপ্রেরণা যোগানোর পাশাপাশি তিনি জামায়াত-বিএনপিকে প্রতিরোধে আওয়ামী লীগের কর্মীদের পাশে থেকে সাহস ও সংগঠনকে মজবুত করতে কাজ করেন। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে ও শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী সংগঠনকে সুসংগঠিত করতে নিবেদিতভাবে কাজ করছেন। তিনি কখনো সংগঠন বিরোধী কিংবা গঠনতন্ত্র পরিপন্থী কোন কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেননা। গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি দলীয়ভাবে প্রার্থী হওয়ার ঘোষনা দেন। ওই নির্বাচনের পূর্বে দলীয়ভাবে জেলা নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে প্রাথী নির্বাচন করা হলেও তৃনমূল নেতাকর্মীদের প্রত্যক্ষ ভোটে সর্বোচ্চ ৬৩ ভোট পান মনিরুজ্জামান মনি। কিন্তু কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে তাকে মনোনয়ন না দেয়ায় তিনি দলের প্রতি আস্থা রেখে ওই নির্বাচনে প্রার্থী হননি। উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি মাহবুব আলম খোকন ও সাধারণ সম্পাদক লোকমান কবীর জানান, সাংগঠনিকভাবে মনিরুজ্জামান মনি একজন সুদক্ষ মানুষ। তিনি দলকে সুসংগঠিত করতে সর্বদা তৎপর থাকেন। তাই আগামী উপ-নির্বাচনে তারা মনিরুজ্জামান মনিকে দলীয়ভাবে চান। উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান মিন্নুর বলেন, মনিরুজ্জামান মনি বিগত প্রায় ১৭ বছর ধরে দেবহাটা উপজেলা আওয়ামীলীগকে সুসংগঠিত করে রেখেছেন। তিনি সকর অঙ্গ ও সহযোগীকে সংগঠনকে একত্র করে সংগঠনকে মজবুত করতে কাজ করছেন। তাই উপজেলা চেয়ারম্যান পদে মনি দলীয় মনোনয়ন পেলে রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দল যেমন আরোও সুসংগঠিত হবে, তেমনি দেবহাটা একটি উন্নত ও মডেল উপজেলায় রুপান্তরিত হবে বলে তিনি মনে করেন। উপজেলার নওয়াপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহমুদুল হক লাভলু জানান, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হিসেবে দলীয়ভাবে মনিরুজ্জামান মনির বিকল্প নেই। কারণ হিসেবে তিনি জানান, দলকে সার্বক্ষনিক সময় দেয়া ও সংগঠনকে তৃনমূল পর্যায় থেকে তিনি সবসময় কাজ করেন। এ বিষয়ে মনিরুজ্জামান মনি জানান, দল যদি তাকে দলীয়ভাবে মনোনয়ন দেন তবে তিনি অবশ্যই দেবহাটার আপামর মানুষের আস্থা অর্জন করে ভোটে নির্বাচিত হবেন এবং দেবহাটাবাসীকে সাথে নিয়ে একটি মাদক ও সস্ত্রাসমুক্ত প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের প্রত্যয়ে একটি ডিজিটাল উপজেলা গঠনে কাজ করবেন।