রংপুরের তারাগঞ্জে প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহে শহীদ মিনার নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বাজার থেকে পিলার কিনে শহীদ মিনারের স্তম্ভ স্থাপনের অভিযোগ উঠেছে রহিমাপুর চাকলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মানব শেকরসহ বেশ কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এছাড়াও বিদ্যালয়ে বরাদ্দকৃত দুর্যোগকালীন অর্থ নিয়েও নয়ছয় করার অভিযোগও উঠেছে কোন কোন প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
জানা গেছে,তারাগঞ্জ উপজেলার ৭৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ১৩টি স্কুল বাদে প্রায় সবকটি স্কুলে স্লিপের দুই দফার বরাদ্দের মাধ্যমে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণের লক্ষ্যে ৫০ হাজার টাকা নির্ধারণ করে দেয় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। নিয়ম অনুযায়ী শহীদ মিনার কাঠামোগত ভাবেই নির্মাণ করতে হবে। অর্থাৎ, নিয়মমাফিক শহীদ মিনারের পিলারসহ সব কিছু সুশৃঙ্খলভাবে তৈরি করে নিতে হবে। কিন্তু রহিমাপুর চাকলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মানব শেখরসহ বেশ কয়েকজন প্রধান শিক্ষক তা না করে বাজার থেকে পিলার কিনে মনগড়াভাবে শহীদ মিনারের স্তম্ভ নির্মাণ করেন। যা নিয়মের পরিপন্থি। এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মানব শেখরের কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে অভিযোগ অস্বীকার করে ফোন কেটে দিয়ে সুইচ বন্ধ করে দেন।
অপরদিকে, রহিমাপুর মুক্তিযোদ্ধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেখানেও একইভাবে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে বিদ্যালয়ের টয়লেটের সামনে ৩ থেকে ৪ ফুট দূরত্ব রেখে। এতে করে ক্ষুন্ন হয় শহীদ মিনারের সম্মানের। যা বিধি নিয়মের পরিপন্থি। এ বিষয়ে জানতে চাওয়ার জন্য ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মৌসুমী আক্তারের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সিরাজুল হক বলেন, রহিমাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। অপরদিকে রহিমাপুর মুক্তিযোদ্ধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে নির্দেশ দেয়া হয়েছে শহীদ মিনারের পাশ থেকে দ্রুততম সময়ে টয়লেট স্থানান্তরের জন্য। দুই একদিনের মধ্যে নব নির্মিত শহীদ মিনারের পিছনে টিনের বেড়া দিয়ে টয়লেট দৃষ্টির আড়ালকরে দেয়ার জন্য।
উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান লিটন বলেন, শহীদ মিনার ভাষা শহীদদের স্মৃতির প্রতীক। তাই এই শহীদ মিনার নির্মাণে কেউ কোনরকম অনিয়ম করলে তা কোন ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে কঠোরভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এ ব্যাপারে কড়া নজর রাখার। অভিযোগ যেহেতু এসেছে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তারাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, শহীদ মিনার নির্মাণে অনিয়মের বিষয়টি আমার জানা নেই,জানলে ব্যবস্থা নেব। যেহেতু এটি শিক্ষা অফিসের তাই তারাই ভালো বলতে পারবে। আমাকে জানালে ব্যবস্থা নেব।