করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ঝুঁকি নিয়ে লড়াই করছেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। সামনের কাতারে দাঁড়িয়ে জরুরিসেবা দিয়ে যাচ্ছেন তারা। সংক্রমণের বিরুদ্ধে তাদের সঙ্গে সমানতালে কাজ করছেন মেডিকেল টেকনোলজিস্টরাও। এমনই দুই মেডিকেল টেকনোলজিস্ট রবিউল ইসলাম ও মিনহাজুল ইসলাম।
এ দুইজন রাজশাহীর সীমান্তবর্তী চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত। করোনা সংকটের শুরু থেকেই পরিবারের কথা না ভেবে সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন তারা। করোনার উপসর্গ দেখা দিলে তারা ছুটে যাচ্ছেন নমুনা সংগ্রহ করতে। আবার করোনা পজিটিভ আক্রান্তদের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে আসছেন। একই সঙ্গে হাসপাতালে আসা উপসর্গের রোগীদের নমুনা সংগ্রহের পর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে পাঠানোর দায়িত্বও পালন করছেন তারা।
রবিউল ইসলাম ও মিনহাজুল ইসলাম দুজনেই চারঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্যাথলজি বিভাগের ল্যাব টেকনোলজিস্ট। তাদের পরিবারের সদস্যরা নিজেরা করোনা আতঙ্কে থাকলেও নমুনা সংগ্রহের এ দায়িত্ব পালনে সম্মতি দেন। আর এতে নিষ্টার সঙ্গে অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে পারছেন এই দুইজন টেকনোজিস্ট। নমুনা সংগ্রহ শুরুর পর থেকেই পরিবার থেকে আলাদা রয়েছেন।
টেকনোলজিস্ট রবিউল ইসলাম বলছিলেন, ‘‘সরকারি চাকরির পাশাপাশি সামাজিক দায়বদ্ধতাও রয়েছে। এই কারণে আমরা যতœ সহকারে উপসর্গের রোগীদের নমুনা সংগ্রহ করি। এজন্য বন্ধু-বান্ধব প্রতিবেশী কেউই আমাদের কাছে আসতে চায় না। তাদের ধারণা আমরা যেন করোনাভাইরাস নিয়ে বসে আছি; তখন কষ্ট পাই।’’
‘‘ আর ইচ্ছে আছে যতদিন সুস্থ থাকবো, ততদিন নমুনা সংগ্রহের এ কাজ চালিয়ে যাবো।সবকিছুর পরও করোনা মোকাবিলায় মাঠে দায়িত্ব পালন করছি বলে নিজেকে গর্বিত মনে করি।’’- জানান তিনি।
টেকনোলজিস্ট মিনহাজুল ইসলাম বলেন, ‘‘আমি এইরকম মহৎ কাজে জড়িত হয়ে মানুষের সেবা দিয়ে যেতে পারছি বলে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছি। সতর্কতা অবলম্বন করে আমরা নমুনা সংগ্রহ করে যাচ্ছি।’’
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আশিকুর রহমান বলেন, চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এই দুইজন সার্বক্ষণিক নমুনা সংগ্রহের কাজ করছেন। সংক্রমণ ঝুঁকি নিয়ে হাসপাতালে এবং বাড়ি বাড়ি গিয়েও নমুনা সংগ্রহ করছেন। ধন্যবাদ জানাই তাদের সাহসিকতা এবং কাজের জন্য।
এ পর্যন্ত উপজেলায় ৫শ ২৩ টি নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে শনিবার (১২ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত ১শ ৪৯ টি পজিটিভ এসেছে। এর মধ্যে দুইজন মারা গেছেন।