বগুড়ার ধুনট উপজেলায় ৯ মাস আগে প্রায় ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে সোনামুয়া হাট থেকে হাসাপোটল গ্রাম পর্যন্ত নতুন পাকা সড়ক ভেঙ্গে পড়েছে পাশের খালে। অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণ করা নতুন সেই সড়ক কমপক্ষে ৫০ মিটার অংশ ভেঙ্গে পড়ছে। রাস্তাটি ভেঙ্গে পড়ায় যাতায়াতে দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয়দের।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নির্মিত পাকা রাস্তার পাশেই রয়েছে কান্তনগর খাল। সড়কটি নির্মাণের সময় ভাঙনরোধের কোন রকম ব্যবস্থা না নিয়ে সুরক্ষা বাঁধ (গাইডওয়াল) ছাড়াই অপরিকল্পিতভাবে কাজ করায় সড়কটি টেকসই হয়নি। এবারের বৃষ্টিপাতের পরিমান বেশি হওয়ায় সড়কের পাশে বিভিন্ন স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়, কোথাও আবার সড়কের কিছু অংশ ধসে খালের পানিতে পড়েছে। টানা বৃষ্টির কারণে সড়কে কয়েক দিন ধরে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। এদিকে সড়ক নির্মাণের নয় মাসেই ভেঙে পড়ায় স্থানীয়দের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এ অবস্থায় কান্তনগর গ্রামের সাইফুল ইসলামের বাড়ির সামনে সড়কের কমপক্ষে ৫০মিটার অংশ খালে ভেঙে পড়েছে। ভাঙনের ফলে সড়কটি সরু হয়ে গেছে। ওই সড়কে বর্তমানে যান চলাচল সম্ভব হচ্ছে না। তবে ঝুকি নিয়ে গ্রামের কিছু মানুষ চলাচল করছেন। এছাড়াও সড়কের বিভিন্ন জায়গায় আরো প্রায় ১৫০ মিটার অংশ খালের ভেঙে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, এই সড়ক পথে কমপক্ষে ১০ গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ চলাচল করে। এলাকাটি কৃষিতে সমৃদ্ধ হওয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ীরা এসে গ্রামগুলো থেকে কৃষিপণ্য কিনে নিয়ে যান। সড়কটি ভেঙে গিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। তাই ব্যবসায়ীরা এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে পারছেন না। ফলে এখন সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন এলাকার কৃষকেরা। তাই দ্রুত সড়কটি সংস্কার করার দাবি জানান ভুক্তভুগি এলাকাবাসি।
সড়কটির নির্মান কাজ দেখ ভালের দায়িত্বে ছিলেন এলজিইডির ধুনট উপজেলা সার্ভেয়ার সুলভ কুমার ঘোষ। তিনি বলেন, সড়কটি নির্মাণ কাজে কোন প্রকার ত্রুটি ছিল না। স্থানীয়রা সড়কের পাশে খাল থেকে বালু উত্তোলনের ফলে সড়কটি টেকসই হয়নি। অতি বর্ষণের কারণে খালে ধসে পড়েছে সড়কের কিছু অংশ। তবে সড়কের ক্ষতিগ্রস্থ স্থানটি মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ধুনট উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, নতুন সড়ক নির্মাণ কাজে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৯০ লাখ টাকা। উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে এই কাজের দরপত্র আহব্বান করা হয়েছিল।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অর্থায়নে ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে সড়কটি পাকাকরণের কাজ ২০১৯ সালের নভে¤॥^র মাসে শেষ করা হয়েছে। সড়কটির দৈর্ঘ্য এক হাজার ৭৭০ মিটার। সড়কটি নির্মানের ফলে এই এলাকায় গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা হয়ে উঠে।
ধুনট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল হাই বলেন, সড়ক ধসে পড়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। এই সড়ক পথে স্থানীয় লোকজনের চলাচলে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে এলজিইডির প্রকৌশলীকে সড়কটি দ্রুত সংস্কার করতে বলা হয়েছে।