বাছুর ধান খাওয়াকে কেন্দ্র করে এক ঢাবি শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় গত বুধবার কলমাকান্দা থানায় একটি মামলা হয়ে়ছে। ওই ঘটনায় অভিযুক্ত বখাটে যুবক লাল চাঁনকে (২৮) বুধবার সন্ধ্যায় গ্রেপ্তার করে বৃহস্পতিবার সকালে নেত্রকোনা জেলা আদালতে পাঠিয়েছে থানা পুলিশ।
অভিযুক্তরা উপজেলার পোগলা ইউনিয়নের একই গ্রামের প্রতিবেশি আবদুল রেজ্জাক রাজুর দুই ছেলে আপেল মিয়া (২২), লাল চাঁন মিয়া (২৮) এবং ইসলাম উদ্দিন এর ছেলে মো. মোখলেছ মিয়া (২০)।
কেয়া আক্তার কাকলী (২২) উপজেলার পোগলা ইউনিয়নে আতকাপাড়া গ্রামের মৃত আবু সামার কন্যা এবং সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অনার্স ফাইনাল ইয়ারের শিক্ষার্থী।
পুলিশ ও শিক্ষার্থী পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার বিকালের দিকে উপজেলার পোগলা ইউনিয়নের আতকাপাড়া গ্রামে এক মাস বয়সি বাছুর ক্ষেতে ধানের জালা খাওয়াকে কেন্দ্র করে ঢাবি’র শিক্ষার্থীকে মারধর করে রক্তাক্ত জমখ করেছে একই গ্রামের বখাটে তিন যুবককেরা।
ঢাবি’র শিক্ষার্থী কেয়া আক্তার কাকলী জানান, একই গ্রামের প্রতিবেশি অভিযুক্ত আপেল মিয়া, লাল চাঁন, মোখলেছ মিয়া ও আপেলের মা আমাদের এক মাস বয়সি গরুর বাছুরটিকে মেরে অশ্লীল ভাষায় গালি গালাজ করতে করতে বাড়িতে আসে। আমি তাদেরকে বলি এক মাসের বাছুর দুধ ছাড়া ধানের জালা খায় না। যদি ক্ষতি করে থাকে ক্ষতিপূরণ দিয়ে দিব। গালিগালাজ করেন কেন?
এ কথা বলতেই আপেলের মা আমার হাত ধরে আর আপেল বাঁশ দিয়ে মাথায় আঘাত করে। এতে আমার মাথা ফেটে থেকে রক্ত বের হতে থাকে। আর লাল চাঁন আমার মা ও বোনকে লাথি ও কিল ঘুষি দিতে থাকে। রক্তাক্ত অবস্থায় পরিবারের লোকজন আমাকে উদ্ধার করে প্রচন্ড বৃষ্টির মধ্যে কলমাকান্দার হাসপাতালে নিয়ে আসে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক সোহরাব হোসাইন লিংকন জানান, কেয়াকে নিয়ে হাসপাতালে আসলে তার মাথায় দু’টি সেলাই দেয়া ও ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসা চলছে ও রোগীর অবস্থা এখন শঙ্কামুক্ত।’
ঢাবির নিরাপত্তা মঞ্চের মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি দেয়ার পর- ঘটনাটির প্রতিবাদ করেছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা গোলাম রাব্বানী। তিনি এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে কলমাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাজাহারুল করিম জানান, গত বুধবার সন্ধ্যায় লালচাঁনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রাতেই শিক্ষার্থীর মা হোসনে আরা বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখসহ কলমাকান্দা থানায় একটি মামলা করেছেন। বৃহস্পতিবার সকালে গ্রেফতারকৃত লালচাঁনকে নেত্রকোনা জেলা আদালতে পাঠানো হয়েছে। এজাহারভুক্ত বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান পুলিশের ওই কর্মকর্তা।