লাগাতার ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে কুড়িগ্রামে নদী অববাহিকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। ২৪ ঘন্টায় ধরলা নদীর পানি ১২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে সেতু পয়েন্টে বিপদসীমার ৩৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নিম্নাঞ্চলের সদ্য রোপণকৃত রোপা আমনক্ষেত পানিতে তলিয়ে গেছে। তিনদফা বন্যা মোকাবেলা করার পর রোপা আমন ধান চাষ করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টার মাঝে আবারো নদণ্ডনদীর পানি বৃদ্ধিতে নিম্নাঞ্চলের মানুষজন শঙ্কিত হয়ে পড়েছে। জেলার সবগুলো নদীর পানি বৃদ্ধি পেলেও ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তাা নদীর পানি এখনো বিপদসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার বিকাল ৩ টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘন্টায় কুড়িগ্রামে ১'শ ২৮মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বলে রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা সুবল সরকার জানান।
অন্যদিকে তীব্র স্রােতের কারণে জেলার ধরলা, তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদের ৩৩ টি পয়েন্টে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। কুড়িগ্রামের সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের সারডোব, কাউয়াহাগাঘাট, ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের জগমনের চর, মোগলবাসা ইউনিয়নের চরশিতাইঝাড় ও সন্নাসী, রাজারহাট উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের কালুয়া এলাকায় ধরলার ভাঙ্গন তীব্র হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে উলিপুর উপজেলার দলদলীয় ইউনিয়নের ঠুটাপাইকর, বজরা ইউনিয়নের চর বজরা, থেতরাই ইউনিয়নের পাকারমাথাসহ বেশ কয়েকটি পয়েন্টে তিস্তার ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করেছে, ইতোমধ্যে বজরা ইউনিয়নের চর বজরা ও কাশিমবাজার এলাকায় আড়াই শতাধিক বাড়ি-ঘর বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়াও ব্রহ্মপুত্রের ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে সদরের যাত্রাপুর, রৌমারী, রাজিবপুর, উলিপুর ও চিলমারী উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকা।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান জানান, গত দুইদিনে ধরলার ভাঙ্গনে আমার ইউনিয়নের জগমনের চর এলাকার বেশকিছু বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। এসব পরিবারের লোকজন খোলা আকাশের নীচে আশ্রয় নিয়েছে। এছাড়াও ১৩শ ৫০টি পরিবার পানিবন্দি জীবন-যাপন করছে। বজরা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আবদুল মালেক জানান, তার ইউনিয়নের গাইবান্ধা লাগোয়া চর বজরা গ্রামের আড়াই শতাধিক বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। সেখানে এখনো ভাঙ্গন চলছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, উজানে ও স্থানীয়ভাবে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় নদণ্ডনদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি শুরু হয়েছে ভাঙ্গন। আমরা ভাঙ্গনরোধে বিভিন্ন এলাকায় জরুরী ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ফেলছি।