ঝালকাঠি সুগন্ধা পৌর আদর্শ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের শহীদ মিনার ভেঙে খেলার মাঠ নষ্ট করে অবৈধভাবে বানিজ্যিক স্টল নির্মাণের অভিযোগে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্কুল কর্তপক্ষ। ম্যানেজিং কমিটির সদ্য বিদায়ী সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শারমিন মৌসুমি কেকা ও তার সহযোগিদের বিরুদ্ধে এ মামলা করা হবে। শুক্রবার সকাল ১১টায় বিদ্যালয় সভাকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান প্রধান শিক্ষক রীতা মন্ডল ও বর্তমান সভাপতি গাজী সানাউল হক। প্রধান শিক্ষকের সাক্ষর জাল করে অবৈধ রেজুলেশন বানিয়ে দ্রুতগতিতে শহীদ মনিার ভেঙ্গে স্টল নির্মাণের কাজ শুরু করেন বলেও অভিযোগ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে। যদিও ঝালকাঠি পৌরসভা ইতোমধ্যে অবৈধ স্টল ভেঙ্গে দিয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে প্রধান শিক্ষক জানান, তাকে চাপে রেখে শারমিন মৌসুমি কেকা তার পার্টনার বিএনপি নেতা আনিসুর রহমান তাপুকে সঙ্গে নিয়ে স্কুলে আসা-যাওয়া করতেন। তাপু টেবিলে বসে একটি পিস্তল বের করে ভয় দেখাতেন। গত ১৪ আগস্ট শহীদ মিনার ভেঙে স্টল নির্মাণের কাজ শুরু করলেও ভয়ে শিক্ষকরা কেউ প্রতিবাদ করতে পারেনি। পরবর্তীতে ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে নতুন ম্যানেজিং কমিটি এসে এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়। বিষয়টি জানতে পেরে পৌর কর্তপক্ষ তাদের পরিকল্পনা (প্লান) বাতিল করে নির্মাণাধীন স্টল ভেঙে ফেলে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে কেকা বিদ্যালয়, নতুন কমিটি ও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন। আগামী ২১ ফেব্রুয়ারির আগেই বিদ্যালয় মাঠেই নতুন শহীদ মিনার নির্মাণের ঘোষণা দেন প্রধান শিক্ষক। শহীদ মিনার ভাঙার ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে বিদ্যালয়ের এডহক মানেজিং কমিটির সভাপতি গাজী সানাউল হক অভিযোগ করেন, শরিমিন মৌসুমি কেকা স্থানীয় সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমুর সুনাম ক্ষুণœ করে নানা ধরণের কাজ করে যাচ্ছেন। বিষয়টি সংসদ সদস্য জানতে পেরে নতুন কমিটি গঠনের ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক রীতা মন্ডলকে নির্দেশ দেন। এ কমিটিতে থাকতে না পেরে কেকা স্কুলের ক্ষতি করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন। সংবাদ সম্মেলনে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য ঝালকাঠি শহরের সার্কিট হাউস সংলগ্ন প্রধান সড়কের পাশে গুরুধাম এলাকায় ১৯৮৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় সুগন্ধা পৌর আদর্শ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়। বর্তমানে এখানে ৪৭৫ জন ছাত্রী পড়ালেখা করে। পাশেই রয়েছে মিলন মন্দির সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। সেখানেও প্রায় ৩৪০জন ছেলেমেয়ে লেখাপড়া করে। সকল ছাত্রছাত্রীদের বিদ্যালয় পূর্ব সমাবেশ (এসেম্বলি), বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, ১৬ ডিসেম্বরের বিজয় দিবস ও ২৬ মার্চের স্বাধীনতা দিবসের প্যারেডের জন্য রয়েছে সাড়ে পাঁচ হাজার বর্গফুটের একটি খেলার মাঠ। মাঠের পশ্চিম প্রান্তে ছিল একটি শহীদ মিনার। গত ১৪ আগস্ট বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদ্য বিদায়ী সভাপতি জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শারমীন মৌসুমি কেকা খেলার মাঠের প্রায় ২০০০ বর্গফুট জায়গায় দশটি স্টল নির্মাণ কাজ শুরু করেন। শারমিন মৌসুমী কেকা একটি রেস্তোরায় গত ১০ সেপ্টেম্বর সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্টল নির্মাণ করা হয়েছে। প্রধান শিক্ষক যদি রাজি না থাকেন, তাহলে কোন ভাবেই স্টল নির্মাণ করা যেতো না। তারা সবাই মিলে একটি ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন।